ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বালিশকাণ্ডকে হার মানিয়েছে পর্দাকাণ্ড: মির্জা ফখরুল

Hewlett-Packard

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ  সরকার দেশে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, একের পর এক দুর্নীতির তথ্য-উপাত্ত গণমাধ্যমে আসছে। রূপপুরের পারমাণবিক প্ল্যান্টের বালিশকে হার মানিয়েছে ফরিদপুরের ৩৭ লাখ টাকা দামের একটি পর্দা। দুর্নীতিতে আজ পর্দার কাছে হেরে গেছে বালিশ। এই হচ্ছে দেশের বর্তমান অবস্থা।

শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রয়াত অর্থমন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম. সাইফুর রহমানের ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণসভায় তিনি এ সব বলেন। স্মরণসভাটির আয়োজক ছিল সাইফুর রহমান স্মৃতি পরিষদ।

প্রয়াত অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের কর্মময় জীবনের স্মৃতিচারণ করে সভাপতির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, স্বাধীনতার পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের লুটপাটের কারণে বাংলাদেশকে বলা হতো তলাবিহীন ঝুড়ি। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর সাইফুর রহমান অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে এসে তলাবিহীন ঝুড়ির বদনাম ঘুচিয়ে দেশের অর্থনীতি মজবুত করেছিলেন। সামষ্টিক অর্থনীতির মাধ্যমে দেশ সমৃদ্ধির পথে নিয়ে গিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, বিএনপির সময় দলের অনেক নেতা বেসরকারি ব্যাংকের জন্য আবেদন করেছিলেন কিন্তু অনুমতি দেননি সাইফুর রহমান। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর একের পর এক ব্যাংকের অনুমতি দিয়েছে। ব্যাঙের ছাতার মতো অবস্থা ব্যাংকের। লুটপাটের কারণে এখন ব্যাংকগুলোর বেহাল অবস্থা।

এ সময় হলমার্কের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা ঋণ নিয়ে পরিশোধ করে না তাদেরকে আবার ঋণ দেওয়া হচ্ছে। তাদেরকে আবার লুটপাটের সুযোগ করে দেবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার মেগা প্রকল্প গ্রহণ করে মেগা দুর্নীতি করছে। অথচ সরকার উন্নতির কথা বলে। আসলে প্রমাণিত হয়েছে বর্তমানে দেশের অর্থনীতি ফাঁপা অর্থনীতি। কিন্তু বিএনপি সরকারের সময় বলা হতো, বাংলাদেশ ইমার্জিং টাইগার। তখন ইচ্ছে করলেই পুকুর চুরি, মেগা চুরি করা যেত না। দশ হাজার কোটি টাকার প্রজেক্টে ৩০ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার সুযোগ ছিল না। আজকে সাইফুর রহমান থাকলে রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতো না।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রয়াত সাইফুর রহমান ধনী-গরিবের বৈষম্য কমাতে অর্থনীতির সুষম বণ্টন করতেন। এতে করে ধনী-গরিবের আয়ের বৈষম্য ছিল শতকরা ৩০ ভাগ। অথচ বর্তমান সরকারের আমলে ধনি-গরিবের আয়ের বৈষম্য দাঁড়িয়েছে ১৩০ ভাগ ।

তিনি বলেন, সরকার অর্থমন্ত্রী বানিয়েছেন একজন শীর্ষ ব্যবসায়ীকে। অর্থমন্ত্রী ধনিক শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব করছেন। এ জন্য গরিবের দিকে তাদের খেয়াল নেই। বিএনপি আমলে শেয়ার মার্কেটে ধস হয়নি সাইফুর রহমানের কারণে। কারণ তিনি লোভী ছিলেন না। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলেই শেয়ার মার্কেটে ধস নামে।

বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, সাইফুর রহমান ভ্যাটের প্রচলন করেছিলেন। এখন ভ্যাট সিস্টেমের ওপরই টিকে আছে দেশের অর্থনীতি। অথচ এর বিরোধিতা করেছিল আওয়ামী লীগ। এখন দেশের দরিদ্রতম মানুষের ওপরও ভ্যাট চাপিয়েছে সরকার।

স্মরণ সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুর রহমান, সাইফুর রহমানের বড় ছেলে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নাসের রহমান, স্মৃতি পরিষদের সদস্যসচিব ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য এম এ কাইয়ুম প্রমুখ।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

বালিশকাণ্ডকে হার মানিয়েছে পর্দাকাণ্ড: মির্জা ফখরুল

আপডেট টাইম : ০৩:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ  সরকার দেশে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, একের পর এক দুর্নীতির তথ্য-উপাত্ত গণমাধ্যমে আসছে। রূপপুরের পারমাণবিক প্ল্যান্টের বালিশকে হার মানিয়েছে ফরিদপুরের ৩৭ লাখ টাকা দামের একটি পর্দা। দুর্নীতিতে আজ পর্দার কাছে হেরে গেছে বালিশ। এই হচ্ছে দেশের বর্তমান অবস্থা।

শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রয়াত অর্থমন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম. সাইফুর রহমানের ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণসভায় তিনি এ সব বলেন। স্মরণসভাটির আয়োজক ছিল সাইফুর রহমান স্মৃতি পরিষদ।

প্রয়াত অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের কর্মময় জীবনের স্মৃতিচারণ করে সভাপতির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, স্বাধীনতার পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের লুটপাটের কারণে বাংলাদেশকে বলা হতো তলাবিহীন ঝুড়ি। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর সাইফুর রহমান অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে এসে তলাবিহীন ঝুড়ির বদনাম ঘুচিয়ে দেশের অর্থনীতি মজবুত করেছিলেন। সামষ্টিক অর্থনীতির মাধ্যমে দেশ সমৃদ্ধির পথে নিয়ে গিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, বিএনপির সময় দলের অনেক নেতা বেসরকারি ব্যাংকের জন্য আবেদন করেছিলেন কিন্তু অনুমতি দেননি সাইফুর রহমান। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর একের পর এক ব্যাংকের অনুমতি দিয়েছে। ব্যাঙের ছাতার মতো অবস্থা ব্যাংকের। লুটপাটের কারণে এখন ব্যাংকগুলোর বেহাল অবস্থা।

এ সময় হলমার্কের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা ঋণ নিয়ে পরিশোধ করে না তাদেরকে আবার ঋণ দেওয়া হচ্ছে। তাদেরকে আবার লুটপাটের সুযোগ করে দেবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার মেগা প্রকল্প গ্রহণ করে মেগা দুর্নীতি করছে। অথচ সরকার উন্নতির কথা বলে। আসলে প্রমাণিত হয়েছে বর্তমানে দেশের অর্থনীতি ফাঁপা অর্থনীতি। কিন্তু বিএনপি সরকারের সময় বলা হতো, বাংলাদেশ ইমার্জিং টাইগার। তখন ইচ্ছে করলেই পুকুর চুরি, মেগা চুরি করা যেত না। দশ হাজার কোটি টাকার প্রজেক্টে ৩০ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার সুযোগ ছিল না। আজকে সাইফুর রহমান থাকলে রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতো না।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রয়াত সাইফুর রহমান ধনী-গরিবের বৈষম্য কমাতে অর্থনীতির সুষম বণ্টন করতেন। এতে করে ধনী-গরিবের আয়ের বৈষম্য ছিল শতকরা ৩০ ভাগ। অথচ বর্তমান সরকারের আমলে ধনি-গরিবের আয়ের বৈষম্য দাঁড়িয়েছে ১৩০ ভাগ ।

তিনি বলেন, সরকার অর্থমন্ত্রী বানিয়েছেন একজন শীর্ষ ব্যবসায়ীকে। অর্থমন্ত্রী ধনিক শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব করছেন। এ জন্য গরিবের দিকে তাদের খেয়াল নেই। বিএনপি আমলে শেয়ার মার্কেটে ধস হয়নি সাইফুর রহমানের কারণে। কারণ তিনি লোভী ছিলেন না। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলেই শেয়ার মার্কেটে ধস নামে।

বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, সাইফুর রহমান ভ্যাটের প্রচলন করেছিলেন। এখন ভ্যাট সিস্টেমের ওপরই টিকে আছে দেশের অর্থনীতি। অথচ এর বিরোধিতা করেছিল আওয়ামী লীগ। এখন দেশের দরিদ্রতম মানুষের ওপরও ভ্যাট চাপিয়েছে সরকার।

স্মরণ সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুর রহমান, সাইফুর রহমানের বড় ছেলে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নাসের রহমান, স্মৃতি পরিষদের সদস্যসচিব ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য এম এ কাইয়ুম প্রমুখ।