বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন বলেছেন, বাস মালিক শ্রমিক এবং সরকারি কর্তৃপক্ষের সমন্বয় ছাড়া রাজধানীর গণপরিবহন সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। এজন্য সবগুলো সংস্থাকে একযোগে কাজ করতে হবে।
আজ শনিবার রাজধানীর ইনস্টিটিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশে (আইইবি) পুরকৌশল বিভাগ ও নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের যৌথ আয়োজনে ‘গণপরিবহনে শৃঙ্খলা রক্ষায় করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি একথা বলেন।
মেয়র বলেন, পরিবহন সমস্যা রাতারাতি দূর হবে না। পরিবহন খাত নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যেসব নির্দেশনা দিয়েছেন তা বাস্তবায়নে সংস্থাগুলো কাজ শুরু করেছে। আর এতে জনসাধারণের অংশগ্রহণ জরুরি।
তিনি বলেন, গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনতে নগরবাসীর কাছে আমরা দুই বছর সময় চেয়েছিলাম। তাদের বলবো, আপনারা আশাহত হবেন না। সময় দিয়েছেন, এখন আশা রাখুন। আপনাদের একটি বাসযোগ্য শহর উপহার দেবো, যেখানে গণপরিবহনে কোনো বিশৃঙ্খলা থাকবে না।
ডিএসসিসি মেয়র বলেন, রাজধানীর ৩৫০টি রুটকে ২২টি রুট করতে কাজ করছি, সাড়ে সাত হাজার গণপরিবহনকে ছয়টি কোম্পানির অধীনে আনা হবে। এ লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী আমাকে প্রধান করে ১০টি সংস্থার সমন্বয়ে কমিটি গঠন করেছেন, ইতোমধ্যে ১২টি সভা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনতে আমরা ছোট ছোট কাজ শুরু করেছি। ইতোমধ্যে সায়েন্সল্যাব, ধানমন্ডি, উত্তরা, মতিঝিল, এয়ারপোর্ট, আজিমপুর অঞ্চলে চক্রাকার বাস সার্ভিস চালু হয়েছে। চাইলেই তো আর একসঙ্গে সাড়ে সাত হাজার নতুন গাড়ি আনতে পারি না। এখানে অর্থের বিষয় আছে, মালিক-সরকার মিলে বসতে হবে, জনগণকে এর সঙ্গে আনতে হবে। নগরবাসীকে আশাহত হলে হবে না, আমাদের ওপর আশা রাখতে হবে।
সমালোচকদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা যখন অস্ট্রিয়ার ভিয়েনার কথা বলি তখন বলি বাসযোগ্য শহরের তালিকার ১ নম্বর। আবার একই তালিকায় থাকা ঢাকাকে বলি বসবাসের অযোগ্য তৃতীয় শহর। এটা কেন? একই জরিপে কেউ প্রথমে আছে কেউ শেষের দিকে আছে। তাহলে আমরা এমনভাবে বলি না কেন যে ভিয়েনা বসবাসের অযোগ্য শহরের মধ্যে ১৪০তম…।
গণপরিবহনের সমস্যা সমাধানে কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা বা এসটিপি করা হলেও তার কোনো বাস্তবায়ন নেই বলে অভিযোগ করেন পরিবহন বিশেষজ্ঞ এস এম সালেহ উদ্দিন। তিনি বলেন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের পর প্রধানমন্ত্রী কয়েকটি নির্দেশনা দিলেও তার বাস্তবায়ন হয়নি।
নগর পরিকল্পনাবিদ আদিল মোহাম্মদ খানের মতে, সড়কে শৃঙ্খলা আনতে শুধু পরিকল্পনা করলে হবে না। এর জন্য চালকদের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে। দেখতে হবে, তারা যেন মাদকাসক্ত না হয়।
আইইবি পুরকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আইইবির প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী আবদুস সবুর, ভাইস প্রেসিডেন্ট (প্রশাসন ও অর্থ) প্রকৌশলী মোহাম্মাদ নূরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী খন্দকার মনজুর মোর্শেদ, নগর পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. সালেহ উদ্দিন, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক ড. আদিল মুহাম্মদ খান, ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মফিজ উদ্দিন আহমেদ, নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি অমিতোষ পাল, সাধারণ সম্পাদক মতিন আব্দুল্লাহসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।