ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যেভাবে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ায় মিউজিক থেরাপি

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ  কোনো কিছু নিয়ে অনেক বেশি চিন্তা করলে এক ধরনের মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়। পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাব, ঘুমের অভাব, দুশ্চিন্তা, মানসিক যন্ত্রণা এমনকি শব্দ দূষণের মতো নানা কারণেও সৃষ্টি হয় মানসিক চাপ বা স্ট্রেস। আর এই স্ট্রেসের কারণে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমাদের মস্তিষ্ক। তাই স্ট্রেস মোকাবিলা করে মস্তিষ্কের ওপর চাপ কমানোর জন্য আজকাল নানা ধরনের থেরাপির দ্বারস্থ হচ্ছে মানুষ। এদিক দিয়ে মনোবিদরা মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন মিউজিক থেরাপির ওপর।
মনোবিদদের মতে, মস্তিষ্কে নিউরন থাকে যা সিন্যাপসিসের মাধ্যমে যুক্ত থাকে। যে কোনো তথ্য মস্তিষ্কে ইলেকট্রিক্যাল ইমপালসে পরিণত হয়ে সিন্যাপসিসের মাধ্যমে বাহিত হয়। আমরা তথ্যের উপর যত মনোযোগ দেই, ইমপালস তত শক্তিশালী হয় ও নিউরনের মধ্যে যোগাযোগ তত জোরাল হয়। গান শোনার সময় মস্তিষ্কে আলফা ও থিটা তরঙ্গ উৎপন্ন হয় যা স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। থিটা তরঙ্গ মস্তিষ্ককে শান্ত করে প্রশান্তি আনে যা মনঃসংযোগ করতে সাহায্য করে।
আজকাল নানা গবেষণায় দাবি করা হচ্ছে, দীর্ঘকালীন স্মৃতি বাড়াতেও সাহায্য করে মিউজিক। সিন্যাপসিস যত শক্তিশালী হবে স্মৃতিশক্তি ততই বাড়বে। স্ট্রেস বাড়লে তা স্মৃতিশক্তির উপর প্রভাব ফেলে। পড়াশোনা, কাজ কিংবা অন্য যে কোনো স্ট্রেস সিন্যাপসিসকে দুর্বল করে দেয়। স্ট্রেস শরীরের ফিল গুড হরমোন ডোপেমাইন ও সিরোটোনিনের মাত্রাও কমিয়ে দেয়। ফলে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে যায়। মিউজিক শুনলে ফিল গুড হরমোন বাড়ে যা স্মৃতিশক্তিকে উন্নত করে। সিন্যাপসিস শক্তিশালী করে দীর্ঘকালীন স্মৃতিশক্তি ধরে রাখার ক্ষমতা বাড়ায়।
স্ট্রেস শুধু দীর্ঘকালীন স্মৃতিশক্তির ওপরই প্রভাব ফেলে না, নতুন স্মৃতি ধরে রাখতেও বাধা দেয়। মস্তিষ্কে কর্টিসল (স্ট্রেস হরমোন) উৎপন্ন করে কার্যকারিতায় বাধা দেয়। মিউজিক কর্টিসলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ফলে মাথা যেমন হালকা হয়, তেমনই তথ্য বোঝার ও বিশ্লেষণ করার ক্ষমতাও বাড়ায়।
মিউজিকের ছন্দ-তাল কোনো কিছুতে মনোনিবেশ করতে ও ভাবনা-চিন্তা গুছিয়ে নিতে সাহায্য করে। গবেষকরা দেখিয়েছেন আমাদের মস্তিষ্ক ছন্দে চলে। গানের ছন্দ, বিশেষ করে যেই গান কোনো স্মৃতি জাগিয়ে তোলে তা গুছিয়ে ভাবনা-চিন্তা ও পড়াশোনা করতে সাহায্য করে।  কোনো মিউজিক্যাল বাদ্যযন্ত্র শোনা ও বাজানোও মস্তিষ্কে একই প্রভাব ফেলে। মোজার্ট এফেক্টের ওপর করা বেশ কিছু গবেষণার ফলাফল থেকে গবেষকরা দেখিয়েছেন, বেশ কিছু কাজ করার আগে বা সমস্যা সমাধানের আগে মোজার্ট শুনলে সেই কাজ আরো নিপুণ ভাবে করার, সূক্ষ্ম ভাবে ভাবার ক্ষমতা বাড়ে।-আনন্দবাজার অবলম্বনে
Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

যেভাবে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ায় মিউজিক থেরাপি

আপডেট টাইম : ০৩:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০১৭
বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ  কোনো কিছু নিয়ে অনেক বেশি চিন্তা করলে এক ধরনের মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়। পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাব, ঘুমের অভাব, দুশ্চিন্তা, মানসিক যন্ত্রণা এমনকি শব্দ দূষণের মতো নানা কারণেও সৃষ্টি হয় মানসিক চাপ বা স্ট্রেস। আর এই স্ট্রেসের কারণে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমাদের মস্তিষ্ক। তাই স্ট্রেস মোকাবিলা করে মস্তিষ্কের ওপর চাপ কমানোর জন্য আজকাল নানা ধরনের থেরাপির দ্বারস্থ হচ্ছে মানুষ। এদিক দিয়ে মনোবিদরা মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন মিউজিক থেরাপির ওপর।
মনোবিদদের মতে, মস্তিষ্কে নিউরন থাকে যা সিন্যাপসিসের মাধ্যমে যুক্ত থাকে। যে কোনো তথ্য মস্তিষ্কে ইলেকট্রিক্যাল ইমপালসে পরিণত হয়ে সিন্যাপসিসের মাধ্যমে বাহিত হয়। আমরা তথ্যের উপর যত মনোযোগ দেই, ইমপালস তত শক্তিশালী হয় ও নিউরনের মধ্যে যোগাযোগ তত জোরাল হয়। গান শোনার সময় মস্তিষ্কে আলফা ও থিটা তরঙ্গ উৎপন্ন হয় যা স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। থিটা তরঙ্গ মস্তিষ্ককে শান্ত করে প্রশান্তি আনে যা মনঃসংযোগ করতে সাহায্য করে।
আজকাল নানা গবেষণায় দাবি করা হচ্ছে, দীর্ঘকালীন স্মৃতি বাড়াতেও সাহায্য করে মিউজিক। সিন্যাপসিস যত শক্তিশালী হবে স্মৃতিশক্তি ততই বাড়বে। স্ট্রেস বাড়লে তা স্মৃতিশক্তির উপর প্রভাব ফেলে। পড়াশোনা, কাজ কিংবা অন্য যে কোনো স্ট্রেস সিন্যাপসিসকে দুর্বল করে দেয়। স্ট্রেস শরীরের ফিল গুড হরমোন ডোপেমাইন ও সিরোটোনিনের মাত্রাও কমিয়ে দেয়। ফলে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে যায়। মিউজিক শুনলে ফিল গুড হরমোন বাড়ে যা স্মৃতিশক্তিকে উন্নত করে। সিন্যাপসিস শক্তিশালী করে দীর্ঘকালীন স্মৃতিশক্তি ধরে রাখার ক্ষমতা বাড়ায়।
স্ট্রেস শুধু দীর্ঘকালীন স্মৃতিশক্তির ওপরই প্রভাব ফেলে না, নতুন স্মৃতি ধরে রাখতেও বাধা দেয়। মস্তিষ্কে কর্টিসল (স্ট্রেস হরমোন) উৎপন্ন করে কার্যকারিতায় বাধা দেয়। মিউজিক কর্টিসলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ফলে মাথা যেমন হালকা হয়, তেমনই তথ্য বোঝার ও বিশ্লেষণ করার ক্ষমতাও বাড়ায়।
মিউজিকের ছন্দ-তাল কোনো কিছুতে মনোনিবেশ করতে ও ভাবনা-চিন্তা গুছিয়ে নিতে সাহায্য করে। গবেষকরা দেখিয়েছেন আমাদের মস্তিষ্ক ছন্দে চলে। গানের ছন্দ, বিশেষ করে যেই গান কোনো স্মৃতি জাগিয়ে তোলে তা গুছিয়ে ভাবনা-চিন্তা ও পড়াশোনা করতে সাহায্য করে।  কোনো মিউজিক্যাল বাদ্যযন্ত্র শোনা ও বাজানোও মস্তিষ্কে একই প্রভাব ফেলে। মোজার্ট এফেক্টের ওপর করা বেশ কিছু গবেষণার ফলাফল থেকে গবেষকরা দেখিয়েছেন, বেশ কিছু কাজ করার আগে বা সমস্যা সমাধানের আগে মোজার্ট শুনলে সেই কাজ আরো নিপুণ ভাবে করার, সূক্ষ্ম ভাবে ভাবার ক্ষমতা বাড়ে।-আনন্দবাজার অবলম্বনে