মেয়েদের চোখে আদর্শ প্রেমিকের কী কী বৈশিষ্ট্য থাকা দরকার? এই নিয়ে নানা মুনির নানা মত। তবে বিস্তর পর্যালোচনার শেষে নারীর মনের মতো পুরুষ হয়ে ওঠার কয়েকটি টিপস দিয়েছেন মনোবিদ ডায়ানা কার্শনার।
১) যত্নশীল পুরুষ মানেই ‘হট’ অনুভূতিপ্রবণ পুরুষ মেয়েদের মনের অনেক বেশি কাছাকাছি থাকেন। সঙ্গীনি কোনো কারণে ভেঙে পড়লে তাঁকে আশ্বস্ত করতে কিছু আচরণ জরুরি। ওঁকে বোঝার চেষ্টা করুন। কাঁধে আলতো হাতের স্পর্শ আর কিছু নরম কথা আপনাকে ওঁর মনের অনেক কাছাকাছি এনে দেবে।
২) শিভালরি এখনো প্রাসঙ্গিক প্রেমের প্রশ্নে পৌরুষ প্রদর্শনের জবাব নেই। গাড়িতে ওঠা-নামার সময় প্রেমিকা বা বান্ধবীর জন্য দরজা খুলে দেওয়া, সিগারেট ধরানোর আগে অনুমতি নেওয়া অথবা লিফটে ঢোকা বা বেরনোর সময় সরে দাঁড়িয়ে জায়গা করে দেওয়ার মতো ঘটনায় নারী মাত্রেই খুশি হন এবং পুরুষের আচরণের তারিফ করেন।
৩) পোশাক বাছাইয়ের কেরামতি মেয়েদের মনে দাগ কাটতে স্মার্ট ড্রেস-আপের বিকল্প নেই। এ ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকা দরকার। মনে করা যাক কোনো পুরুষের একটু ভারী চেহারা, মধ্যপ্রদেশ কিঞ্চিত্ স্ফীত- সে ক্ষেত্রে ঢিলেঢালা ক্যাজুয়াল টাইপ পোশাক মানানসই। আবার অনেকে চেহারার তোয়াক্কা না করে টাইট জিনসে স্বচ্ছন্দ। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে সেই পোশাক আপনার পছন্দের নারীর মনে দাগ কাটছে কিনা। যদি আপনি লাল জামা পরলে তাঁর ভালো লাগে, তবে মন রাখার জন্য তাই পরুন। নিজের পছন্দসই পোশাক পরবেন তখনই যখন বান্ধবী সেই ইঙ্গিত করবেন।
৪) লালের জয় লাল জামা প্রসঙ্গে কার্শনারের গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ : নারীর মনে এই রং সম্পর্কে এক সুপ্ত অনুভূতি থাকে। পুরুষের অঙ্গে লাল রং নারীর অবচেতনে এক শক্তিমান, নজরকাড়া এবং শরীরী ভাবমূর্তির ছবি আঁকে। তবে একই সঙ্গে, লাল রং পুরুষের চরিত্র থেকে ভালোমানুষ অথবা দয়ালু মনের অধিকারীর মতো বৈশিষ্ট্য ছেঁটে ফেলে বলে বহু মেয়েই মনে করেন। কোন রাস্তায় হাঁটবেন, তা আপনাকেই ঠিক করতে হবে।
৫) নিজের ত্রুটি লুকোনোর চেষ্টা করবেন না কার্শনারের মতে, যে পুরুষের মন ও স্বভাব ভালো এবং যিনি নিজেকে উন্নত করার চেষ্টা করছেন, তাঁকে মেয়েদের পছন্দ হবেই। এমনকি সেই পুরুষ যদি সঙ্গীনির স্বভাবে কিছু খুঁত দেখাতে পারেন, ধরা যাক হঠাত্ মেজাজ হারানো বা সারাদিনের কাজের পর মুখ গোমড়া করা- তাঁর কদর বাড়ে। তবে খুঁত ধরিয়ে দেওয়ার সময় সাবধান হতে হবে যাতে বান্ধবীর মনে আঘাত না লাগে।
৬) ওঁর দুনিয়া গড়ার চেষ্টা করবেন না মনে রাখতে হবে, মেয়েরা পুরুষ সঙ্গীকে তাঁদের কষ্টের ও সমস্যার কথা বলেন মানে এই নয় যে তার সমাধান চান। আপনার কাজ একজন মনোযোগী শ্রোতার, পরামর্শদাতার নয়। বেশির ভাগ পুরুষই সঙ্গীনির সমস্যা শুনে তার চটজলদি সমাধান খোঁজার চেষ্টা করতে থাকেন। ভুলেও এই পথ মাড়াবেন না কারণ এর জেরে মেজাজ হারাতে পারেন আপনার মনের মানুষটি।
৭) যৌনতায় মেয়েরা ধীরে চলো নীতিতে বিশ্বাসী প্রেমের সম্পর্ক মন থেকে শরীরে গড়ানো শুধু সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু বেশির ভাগ পুরুষ এই ব্যাপারে তাড়াহুড়ো করে খেসারত দেন। কার্শনার বলছেন, মেয়েরা অবশ্যই যৌনতায় আগ্রহী, কিন্তু এই বিষয়ে চটজলদি পথ তাঁদের না-পসন্দ। ঘনিষ্ঠতা বাড়ার জন্য তাঁদের বেশ কিছু সময় দরকার। সম্পর্কে আস্থার ভিত মজবুত না হলে, প্রেমের গভীরতার প্রমাণ না পেলে তাঁরা আদপেই এই পথে হাঁটতে নারাজ। তাই মনের ইচ্ছায় লাগাম দিয়ে ধৈর্য ধরুন। কথা, ব্যবহার এবং আলতো স্পর্শ ধীরে ধীরে অভীষ্টে পৌঁছতে সাহায্য করে।
৮) পারফরম্যান্স নিয়ে অযথা উদ্বেগ করবেন না যৌনতায় আশানুরূপ পারফর্ম করতে না পারলে হতাশ হবেন না। মনে রাখবেন, একদিনের বিচ্যুতি প্রেমিকার নজরে আপনাকে কখনোই খাটো করে দেবে না। বরং তিনি নিজেই কিছুটা হীনমন্যতায় ভুগবেন এই ভেবে যে হয়তো নিজে এই বিষয়ে যথেষ্ট যত্নশীল হতে পারেননি। এই নিয়ে তিনি আলোচনা করতে চাইলে অহেতুক লজ্জা বা অস্বস্তিতে ভুগবেন না। মনে রাখবেন, এই খেলায় তিনিই আপনার পার্টনার। তবে বিষয়টি বারংবার ঘটতে থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত বলে মনে করেন কার্শনার।
৯) বার বার বলো… মেয়েরা পছন্দ করেন তাঁদের রূপের, স্বভাবের বা সাজপোশাকের প্রশংসায় পুরুষ পঞ্চমুখ হন। ধরুন এমন একটি পোশাক তিনি পরেছেন যা তাঁর যৌন আবেদন ফুটিয়ে তুলেছে, এই পরিস্থিতিতে ভুরু না কুঁচকে অকপটে তাঁর হট লুকস-এর তারিফ করুন। দেখবেন কপট রাগলেও আসলে তিনি খুশিই হয়েছেন।
১০) চোখে চোখ রাখুন পার্কে বা কাফেতে আপনি হয়তো প্রেমিকার পাশে বসতে বেশি স্বচ্ছন্দ। ওঁর শরীরের স্পর্শে হয়তো আপনার সুখানুভূতি প্রকট হয়। কিন্তু ভুলবেন না, মেয়েরা কিন্তু প্রেমিকের চোখে চোখ রেখে কথা বলা বেশি পছন্দ করেন। মুখোমুখি বসেও যদি আপনার দৃষ্টি অন্যদিকে ঘোরে, ওঁরা মনে মনে অসন্তুষ্ট বোধ করেন। তাই মনোসংযোগ করুন। কার্শনারের টিপস: যৌন মিলনের সময়ও যদি সঙ্গীনির চোখে চোখ রাখা যায়, হাতেনাতে সুফল মিলবেই। সূত্র: এই সময়