বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ আমলকী বা আমলকি (বৈজ্ঞানিক নাম: ফাইলান্থাসি এম্বালিকা ) ফাইলান্থাসি পরিবারের ফাইলান্থুস গণের এক প্রকার ভেষজ ফল। সংস্কৃত ভাষায় এর নাম ‘আমালিকা’। ইংরেজি নাম ‘আমলা’।
আমলকি নিয়ে প্রাথমিক গবেষণা সম্পন্ন হয়েছে। এতে দেখা গেছে যে, এটি ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে পারে।প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে যে, রিউমেটয়েড আর্থ্রাইটিস এবং অস্টিওপোরোসিস রোগে আমলকির রস কিছু কাজ করে। কয়েক ধরনের ক্যান্সারের বিরুদ্ধেও এর কার্যকারিতার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
আমলকির ভেষজ গুণ রয়েছে অনেক। ফল ও পাতা দুটিই ওষুধরূপে ব্যবহার করা হয়। আমলকিতে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ থাকে। পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে, আমলকিতে পেয়ারা ও কাগজি লেবুর চেয়ে ৩ গুণ ও ১০ গুণ বেশি ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে। আমলকিতে কমলার চেয়ে ১৫ থেকে ২০ গুণ বেশি, আপেলের চেয়ে ১২০ গুণ বেশি, আমের চেয়ে ২৪ গুণ এবং কলার চেয়ে ৬০ গুণ বেশি ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে।
আমলকির কিছু ঔষধি গুণ
১) কোষ্ঠকাঠিন্য, মাথাব্যথা, অম্ল,রক্তাল্পতা, বমিভাব দূর করতে সাহায্য করে।
২) বহুমূত্র রোগে এটি উপকারী।
৩) চোখ উঠলে কাঁচা আমলকীর রস দিনে ২ ফোটা করে দুই বার দিলে ভাল আরাম পাওয়া যায়।
৪) বমি বন্ধে কাজ করে।
৫) দীর্ঘমেয়াদি কাশি সর্দি হতে উপকার পাওয়ার জন্য আমলকীর নির্যাস উপকারী।
৬) এটি হৃদযন্ত্র ও মস্তিষ্কের শক্তিবর্ধক।
৭) চুল ওঠা দূর করতে আমলকী বেশ উপকারী।
৮) আমলকী কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের উপর কাজ করে।
৯) এটি দাঁত,চুল ও ত্বক ভাল রাখে।
১০) এটি খাওয়ার রুচি বাড়ায়।
১১) চুলের খুসকির সমস্যা দূর করে।
এছাড়াও আমলকী সুন্দর ত্বকের জন্য খুবই উপকারি একটি ফল ,আসুন জেনে নেয়া যাক কিভাবে এর ব্যবহার করবেন
১) কাঁচা আমলকী
যেহেতু আমলকি ফলটি একটু বেশি তিক্ত, তাই এটা অনেকের তারা কাঁচা খাওয়া কঠিন হতে পারে। যাই হোক, যারা কাঁচা খেতে পারবেন তারা অবশ্যই আমলকি কাঁচা খাবেন। কাঁচা আমলকি খাওয়া খুবই পুষ্টিকর এবং সৌন্দর্য বর্ধন এর সবচেয়ে ভালো উপায়। অতিরিক্ত তিক্ত হওয়ার কারণে আপনি মধুর সাথে ডুবিয়ে অথবা কিছু মসলা দ্বারা আরো সুস্বাদু করে খেতে পারেন।
২) জুস আমলকী
বিশেষজ্ঞদের মতে, আমলকির সুবিধাগুলো না হারাতে হলে সবচেয়ে মেধাবী উপায় হচ্ছে এটিকে জুস করে খাওয়া।আমলকির রস ডায়াবেটিস, কোলেস্টরেল এর মাত্রা,ওজন হ্রাসের এবং ঠান্ডা ও কাশির জন্য খুবই কার্যকর। আপনি নিয়মিত আমলার রস পান করলে আপনাকে সুন্দর ত্বক পেতে সাহায্য করবে। আমরা সাধারণত ত্বকের দাগ নিয়ে খুবই চিন্তিত থাকি। দাগ নিরাময়ের জন্য আমলকির রস ব্যবহার করতে পারেন। ত্বকে ছিদ্র অংশ থাকলে ছিদ্র অংশে আমলকির রস লাগালে ত্বকের ছিদ্র বন্ধ করতে সাহায্য করবে।
৩) গুঁড়ো আমলকি
আপনি সহজে আমলকি গুঁড়ো করে ফেস প্যাক হিসেবে নিয়মিত ব্যবহাররতে পারেন। একটি মসৃণ এবং উজ্জ্বল ত্বকের জন্য আমলার গুড়া এর সাথে মধু এবং দই মিশ্রণ করতে পারেন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য আপনি কিছু গোলাপ জলের সঙ্গে আমলা গুঁড়ো মিশ্রণ করতে পারেন। তারপর এটা ফেসপ্যাক হিসেবে ব্যবহার করুন।আনুমানিক ১৫ থেকে ২০ মিনিট ফেস এ লাগিয়ে রাখতে হবে, যতক্ষণ ফেসপ্যাকটি লাগাবেন তার মধ্যে কোন জল লাগানো যাবে না। হাজার বছরেরও বেশি ধরে আয়ুর্বেদিক ত্বকবান্ধব খাদ্য হিসাবে আমলার ব্যবহার হয়ে আসছে।