নেত্রকোনার কলমাকান্দার নদ-নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। রবিবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্য সোয়া ৬টার দিকে উপজেলার উপদাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার পাঁচ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। সোমেশ্বরী ও কংস নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই।
ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে জেলার দুর্গাপুর ও কলমাকান্দার ১৩টি ইউনিয়নের অন্তত ১০৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
এসব এলাকার বেশ কিছু গ্রামীণ সড়ক ঢলের পানিতে ডুবে গেছে।নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জেলায় ১২ হাজার ২২৩ হেক্টর জমির রোপা আমন ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে দুর্গাপুর উপজেলার কাকৈরগড়া, গাঁওকান্দিয়া, চন্ডিগড় ও কুল্লাগড়া ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।
কৃষকরা জানায়, দ্রুত পানি না কমলে তলিয়ে যাওয়া সবুজ ধান গাছ সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়ে যাবে।
এতে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে কৃষকরা।নেত্রকোনা সদর উপজেলার বনোয়াপাড়া গ্রামের কৃষক সেলিম মিয়া বলেন, ‘আমার ৩০ শতাংশ জমির রোপা আমন খেত ঢলের পানির সঙ্গে ভেসে আসা কচুরিপানা ভরে গেছে। কচুরিপানা সরানোর চেষ্টা করছি। পানি দ্রুত না কমলে সম্পূর্ণ ফসল নষ্ট হয়ে যাবে।
সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইমদাদুল হক জানান, জেলার দুর্গাপুর, কলামাকান্দা, পূর্বধলা ও সদর উপজেলায় ১৮৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্লাবিত হওয়ায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সারোয়ার জাহান জানান, রবিবার সন্ধ্য সোয়া ৬টার দিকে জেলার কলমাকান্দা উপজেলার উপদাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার পাঁচ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছিল। এ ছাড়া জেলার ধনু, কংশ, সোমেশ্বরী, মহাদেও, মগড়া, নেতাইসহ সব নদ নদীর পানি প্রতি মুহূর্তে বেড়েই চলেছে।
নেত্রকোনা জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, পূর্বধলা ও সদর উপজেলার জন্য নগদ তিন লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি ৬০ মেট্রিক টন চাল ও দুই হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস বলেন, ‘প্রচুর বর্ষণে জেলার নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি। বন্যা হলে তা মোকাবেলায় আমাদের সব প্রস্তুতি রয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ সামগ্রীও মজুত আছে।’