ঢাকা , মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১৫ বছরে বাঘ কমেছে ৮৬ শতাংশ

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ  গত ১৫ বছরে সুন্দরবনে বাঘ কমেছে ৮৬ শতাংশ। ২০০১ সালে সুন্দরবনে বাঘের অস্তিত্ব ছিল ৪৪০টি, এখন সে সংখ্যা নেমে দাঁড়িয়েছে ১০৬। এই সংখ্যাও বর্তমানে ‘ডাবল ডিজিটে’ রূপ নিয়েছে বলে দাবি করে সুন্দরবন একাডেমির উপদেষ্টা রফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, সুন্দরবন রক্ষা করতে হলে বাঘ রক্ষা অনিবার্য। বিশ্ব বাঘ সম্মেলনে এ কথা বারবার উচ্চারিত হলেও আমরা সতর্ক হচ্ছি না।

তবে খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বশির আল মামুন জানান, ২০০৪ সালে সুন্দরবনে বাঘের পায়ের ছাপ গণনা করে ৪৪০টি বাঘ আছে বলে জানানো হয়। কিন্তু এই তথ্যের বৈজ্ঞানিক ভিত্তি ছিল না। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বনের ভেতরে ক্যামেরা বসিয়ে সঠিক উপায়ে গণনা করে বাঘের প্রকৃত সংখ্যা ১০৬টি বলে জানা যায়। ওই হিসাবে মাত্র ১ দশকের ব্যবধানে সুন্দরবনে বাঘ কমেছে ৩৩৪টি। এরপর এই সংখ্যা বেড়েছে না কমেছে তার সঠিক হিসাব নেই। তবে জেলে-বাওয়ালীদের তথ্য উদ্ধৃত করে এই বন কর্মকর্তা বাঘের সংখ্যা স্থিতিশীল আছে বলে দাবি করেন। যুক্তি হিসেবে তিনি বলেন, ২০১৩ সালে বাঘের আক্রমণে হতাহতের সংখ্যা বেড়েছিল। তথ্যউপাত্ত বলছে, এরপর তা কমে যায়। কিন্তু চলতি বছর বাঘের আক্রমণে সুন্দরবনে ফের হতাহতের সংখ্যা বেড়েছে। এই অঘটন প্রমাণ করে, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা স্থিতিশীল অথবা বেড়েছে।

আজ বিশ্ব বাঘ দিবস। অন্য দেশের মতো বাংলাদেশেও এ দিবস পালিত হচ্ছে। এবারের আন্তর্জাতিক প্রতিপাদ্য ‘বাঘ সুরক্ষায় চাই নির্মল প্রতিবেশ।’

বন বিভাগের তথ্যমতে, ১৯৭১ থেকে এ পর্যন্ত মোট ৭ বার বাঘ শুমারি হয়েছে। তার মধ্যে ১৯৭১ সালের শুমারিতে বাঘের সংখ্যা ছিল ৩২০টি, ১৯৭৫ সালে ৩৫০টি, ১৯৮০ সালে বাঘের সংখ্যা ছিল ৪৩০ থেকে ৪৫০, ১৯৯২ সালে ৩৫৯টি, ১৯৯৩ সালে ৩৬২টি, ২০০১ সালে ৪৪০টি ও সর্বশেষ ২০১৫ সালে ১০৬টি বাঘ রয়েছে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে।

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আরও বলেন, বনের নিরাপত্তা জোরদার করতে ‘স্মার্ট পেট্রোলিং’-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্বয়ংক্রিয় ডিভাইসের মাধ্যমে কেন্দ্রীয়ভাবে বনরক্ষীরা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করছেন কিনা তা মনিটরিং করা হচ্ছে।

পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেছেন, সুন্দরবনের বাঘ রক্ষায় সরকার যথাযথ পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ নিয়েছে। মন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার ৮টি দেশে বর্তমানে বাঘ সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছে। বাঘ সংরক্ষণ ও বাঘের জন্য সুন্দরবনে একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করতে সরকার বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন প্রণয়নসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

তিনি আরও বলেন, সুন্দরবনের প্রায় সর্বত্র বাঘের বিচরণ রয়েছে। সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে বাঘের আবাসস্থল, জীবনাচরণ ও প্রজনন বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে।

বন বিভাগ সূত্র জানায়, বনের মধ্যে প্রবেশ সীমিত করতে ৪৫ হাজার বনের ওপর নির্ভরশীল মানুষকে বিকল্প পেশা গ্রহণে সহায়তা করা হয়েছে। গোলপাতা আহরণ সীমিত করা হয়েছে। মাছ আহরণে ইঞ্জিনচালিত ট্রলার বনের মধ্যে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বনের ভেতরে গিয়ে মাছ ধরতে শুধু বৈঠাচালিত নৌকা ব্যবহার করা যাবে। সূত্র আরও জানায়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও সুন্দরবন নিয়ে আগ্রহ রয়েছে। সম্প্রতি সুন্দরবনের কটকা থেকে ফ্রান্সের তৈরি একটি ড্রোন বন বিভাগের কর্মীরা আটক করে। বনের ওপর সচিত্র প্রতিবেদন তৈরিতে তারা এটা বিনা অনুমতিতে চালু করেছিল।

অন্যদিকে বন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চোরা শিকারিদের দৌরাত্ম্য, পিটিয়ে ও বিষ খাইয়ে বাঘ হত্যা, বনের ভেতর দিয়ে জাহাজ চলাচলসহ নানা কারণে হুমকির মুখে সুন্দরবনের বাঘ। আর এসব থেকে বাঘ সুরক্ষায় ২০১৮ সাল থেকে ১০ বছরের জন্য তৈরি করা হচ্ছে ‘বাংলাদেশ টাইগার অ্যাকশন প্লান’ নামে দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা। বাঘের হুমকি ও চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করার পাশাপাশি বাঘ রক্ষার নানা পদক্ষেপ এই কর্মপরিকল্পনায় থাকবে।

এ ব্যাপারে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ এবং খুলনার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জানান, বাঘ রক্ষায় ২০১৮ সাল থেকে ১০ বছরের জন্য তৈরি এই কর্মপরিকল্পনায় বাঘের হুমকি ও বাঘ রক্ষার চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করার পাশাপাশি থাকবে করণীয় দিকগুলো। বাঘের প্রজনন বৃদ্ধি, বাঘের প্রধান খাবার চিত্রা হরিণ রক্ষা, বাঘের সংখ্যা যাতে কোনোভাবে না কমে সেই বিষয়গুলোও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তবে জানা গেছে, বাঘ রক্ষায় এর আগে ২০০৯ থেকে ২০১৭ সালের জন্য যে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় তার বেশ কিছু বিষয় বন বিভাগ বাস্তবায়ন করতে পারেনি। এবার সেই বিষয়গুলো বাস্তবায়নে গুরুত্বারোপ করা হবে।

খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, চলমান কর্মপরিকল্পনার মধ্যে সঠিকভাবে মনিটরিং এবং বন বিভাগের কর্মীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়টি উল্লেখ ছিল। কিন্তু তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা যায়নি। পরবর্তী কর্মপরিকল্পনায় এই বিষয়গুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ ছাড়া বাঘ রক্ষায় স্থানীয় জনগণকে আরও সম্পৃক্ত করা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সঙ্গে সমন্বয় বাড়ানোর বিষয়টিও এতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। বাঘ ও হরিণ শিকারিদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির জন্য বন বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ শুরু করেছে।

এদিকে বাংলাদেশ সীমানায় অবস্থিত ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত সুন্দরবনের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সুন্দরবন ব্যবস্থাপনার জন্য ইতোমধ্যে সরকার ৫ হাজার ৬৭৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকার একটি সহায়তা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। যার ১ হাজার ২৬৫ কোটি ২৩ লাখ টাকা জিওবি এবং প্রকল্প সাহায্য থেকে ৪ হাজার ৪১৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা অর্থায়ন করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় থাকছে বেজ লাইন সার্ভে ও মনিটরিং, অফিস ভবন/পেট্রোল পোস্ট সংস্কার, পন্টুন ও গ্যাংওয়ে সংস্কার, কমিউনিটিভিত্তিক সংরক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা, ৬০ হাজার কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ, আন্তর্জাতিক সেবা, দেশি-বিদেশি প্রশিক্ষণ ও স্টাডি ট্যুর, যানবাহন ও যন্ত্রপাতি ক্রয়, প্রশিক্ষণ, ওয়ার্কশপ, সেমিনার ও মিটিং আয়োজন করা।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

১৫ বছরে বাঘ কমেছে ৮৬ শতাংশ

আপডেট টাইম : ০৬:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুলাই ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ  গত ১৫ বছরে সুন্দরবনে বাঘ কমেছে ৮৬ শতাংশ। ২০০১ সালে সুন্দরবনে বাঘের অস্তিত্ব ছিল ৪৪০টি, এখন সে সংখ্যা নেমে দাঁড়িয়েছে ১০৬। এই সংখ্যাও বর্তমানে ‘ডাবল ডিজিটে’ রূপ নিয়েছে বলে দাবি করে সুন্দরবন একাডেমির উপদেষ্টা রফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, সুন্দরবন রক্ষা করতে হলে বাঘ রক্ষা অনিবার্য। বিশ্ব বাঘ সম্মেলনে এ কথা বারবার উচ্চারিত হলেও আমরা সতর্ক হচ্ছি না।

তবে খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বশির আল মামুন জানান, ২০০৪ সালে সুন্দরবনে বাঘের পায়ের ছাপ গণনা করে ৪৪০টি বাঘ আছে বলে জানানো হয়। কিন্তু এই তথ্যের বৈজ্ঞানিক ভিত্তি ছিল না। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বনের ভেতরে ক্যামেরা বসিয়ে সঠিক উপায়ে গণনা করে বাঘের প্রকৃত সংখ্যা ১০৬টি বলে জানা যায়। ওই হিসাবে মাত্র ১ দশকের ব্যবধানে সুন্দরবনে বাঘ কমেছে ৩৩৪টি। এরপর এই সংখ্যা বেড়েছে না কমেছে তার সঠিক হিসাব নেই। তবে জেলে-বাওয়ালীদের তথ্য উদ্ধৃত করে এই বন কর্মকর্তা বাঘের সংখ্যা স্থিতিশীল আছে বলে দাবি করেন। যুক্তি হিসেবে তিনি বলেন, ২০১৩ সালে বাঘের আক্রমণে হতাহতের সংখ্যা বেড়েছিল। তথ্যউপাত্ত বলছে, এরপর তা কমে যায়। কিন্তু চলতি বছর বাঘের আক্রমণে সুন্দরবনে ফের হতাহতের সংখ্যা বেড়েছে। এই অঘটন প্রমাণ করে, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা স্থিতিশীল অথবা বেড়েছে।

আজ বিশ্ব বাঘ দিবস। অন্য দেশের মতো বাংলাদেশেও এ দিবস পালিত হচ্ছে। এবারের আন্তর্জাতিক প্রতিপাদ্য ‘বাঘ সুরক্ষায় চাই নির্মল প্রতিবেশ।’

বন বিভাগের তথ্যমতে, ১৯৭১ থেকে এ পর্যন্ত মোট ৭ বার বাঘ শুমারি হয়েছে। তার মধ্যে ১৯৭১ সালের শুমারিতে বাঘের সংখ্যা ছিল ৩২০টি, ১৯৭৫ সালে ৩৫০টি, ১৯৮০ সালে বাঘের সংখ্যা ছিল ৪৩০ থেকে ৪৫০, ১৯৯২ সালে ৩৫৯টি, ১৯৯৩ সালে ৩৬২টি, ২০০১ সালে ৪৪০টি ও সর্বশেষ ২০১৫ সালে ১০৬টি বাঘ রয়েছে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে।

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আরও বলেন, বনের নিরাপত্তা জোরদার করতে ‘স্মার্ট পেট্রোলিং’-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্বয়ংক্রিয় ডিভাইসের মাধ্যমে কেন্দ্রীয়ভাবে বনরক্ষীরা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করছেন কিনা তা মনিটরিং করা হচ্ছে।

পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেছেন, সুন্দরবনের বাঘ রক্ষায় সরকার যথাযথ পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ নিয়েছে। মন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার ৮টি দেশে বর্তমানে বাঘ সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছে। বাঘ সংরক্ষণ ও বাঘের জন্য সুন্দরবনে একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করতে সরকার বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন প্রণয়নসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

তিনি আরও বলেন, সুন্দরবনের প্রায় সর্বত্র বাঘের বিচরণ রয়েছে। সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে বাঘের আবাসস্থল, জীবনাচরণ ও প্রজনন বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে।

বন বিভাগ সূত্র জানায়, বনের মধ্যে প্রবেশ সীমিত করতে ৪৫ হাজার বনের ওপর নির্ভরশীল মানুষকে বিকল্প পেশা গ্রহণে সহায়তা করা হয়েছে। গোলপাতা আহরণ সীমিত করা হয়েছে। মাছ আহরণে ইঞ্জিনচালিত ট্রলার বনের মধ্যে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বনের ভেতরে গিয়ে মাছ ধরতে শুধু বৈঠাচালিত নৌকা ব্যবহার করা যাবে। সূত্র আরও জানায়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও সুন্দরবন নিয়ে আগ্রহ রয়েছে। সম্প্রতি সুন্দরবনের কটকা থেকে ফ্রান্সের তৈরি একটি ড্রোন বন বিভাগের কর্মীরা আটক করে। বনের ওপর সচিত্র প্রতিবেদন তৈরিতে তারা এটা বিনা অনুমতিতে চালু করেছিল।

অন্যদিকে বন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চোরা শিকারিদের দৌরাত্ম্য, পিটিয়ে ও বিষ খাইয়ে বাঘ হত্যা, বনের ভেতর দিয়ে জাহাজ চলাচলসহ নানা কারণে হুমকির মুখে সুন্দরবনের বাঘ। আর এসব থেকে বাঘ সুরক্ষায় ২০১৮ সাল থেকে ১০ বছরের জন্য তৈরি করা হচ্ছে ‘বাংলাদেশ টাইগার অ্যাকশন প্লান’ নামে দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা। বাঘের হুমকি ও চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করার পাশাপাশি বাঘ রক্ষার নানা পদক্ষেপ এই কর্মপরিকল্পনায় থাকবে।

এ ব্যাপারে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ এবং খুলনার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জানান, বাঘ রক্ষায় ২০১৮ সাল থেকে ১০ বছরের জন্য তৈরি এই কর্মপরিকল্পনায় বাঘের হুমকি ও বাঘ রক্ষার চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করার পাশাপাশি থাকবে করণীয় দিকগুলো। বাঘের প্রজনন বৃদ্ধি, বাঘের প্রধান খাবার চিত্রা হরিণ রক্ষা, বাঘের সংখ্যা যাতে কোনোভাবে না কমে সেই বিষয়গুলোও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তবে জানা গেছে, বাঘ রক্ষায় এর আগে ২০০৯ থেকে ২০১৭ সালের জন্য যে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় তার বেশ কিছু বিষয় বন বিভাগ বাস্তবায়ন করতে পারেনি। এবার সেই বিষয়গুলো বাস্তবায়নে গুরুত্বারোপ করা হবে।

খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, চলমান কর্মপরিকল্পনার মধ্যে সঠিকভাবে মনিটরিং এবং বন বিভাগের কর্মীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়টি উল্লেখ ছিল। কিন্তু তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা যায়নি। পরবর্তী কর্মপরিকল্পনায় এই বিষয়গুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ ছাড়া বাঘ রক্ষায় স্থানীয় জনগণকে আরও সম্পৃক্ত করা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সঙ্গে সমন্বয় বাড়ানোর বিষয়টিও এতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। বাঘ ও হরিণ শিকারিদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির জন্য বন বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ শুরু করেছে।

এদিকে বাংলাদেশ সীমানায় অবস্থিত ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত সুন্দরবনের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সুন্দরবন ব্যবস্থাপনার জন্য ইতোমধ্যে সরকার ৫ হাজার ৬৭৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকার একটি সহায়তা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। যার ১ হাজার ২৬৫ কোটি ২৩ লাখ টাকা জিওবি এবং প্রকল্প সাহায্য থেকে ৪ হাজার ৪১৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা অর্থায়ন করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় থাকছে বেজ লাইন সার্ভে ও মনিটরিং, অফিস ভবন/পেট্রোল পোস্ট সংস্কার, পন্টুন ও গ্যাংওয়ে সংস্কার, কমিউনিটিভিত্তিক সংরক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা, ৬০ হাজার কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ, আন্তর্জাতিক সেবা, দেশি-বিদেশি প্রশিক্ষণ ও স্টাডি ট্যুর, যানবাহন ও যন্ত্রপাতি ক্রয়, প্রশিক্ষণ, ওয়ার্কশপ, সেমিনার ও মিটিং আয়োজন করা।