নরসিংদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে তাঁতবোর্ড থেকে বস্ত্র অধিদপ্তরের আওতায় নেওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীরা তাঁতবোর্ড চেয়ারম্যানসহ ১৫ জন কর্মকর্তাকে টানা ৭ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখার পর রাত ৯টার দিকে মুচলেকা প্রদানের পর তাদের মুক্ত করা হয়।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে তাঁতবোর্ড চেয়ারম্যান আবু আহমদ সিদ্দিকী আগামী ১৩ জানুয়ারির মধ্যে দাবি অনুযায়ী জরুরি সভা আয়োজন করবেন, মর্মে লিখিত পত্রে স্বাক্ষর করলে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এখানে ভর্তি হওয়ার পর বাড়তি ফি গুনলেও পাচ্ছে না মানসম্মত সেবা।
অবরুদ্ধ ছিলেন, তাঁতবোর্ডের চেয়ারম্যান আবু আহমদ ছিদ্দীকী (এনডিসি), সদস্য (পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন) (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, যুগ্ম সচিব ও পরিচালক (প্রশাসন) (অ.দা.) আকরামুজ্জামান, প্রধান হিসাব রক্ষক এবং প্রকল্প পরিচালক (অ.দা.) সুকুমার চন্দ্র সাহা, প্রকল্প পরিচালক (অ.দা.), আইয়ুব আলী, ব্যবস্থাপক (অপারেশন) মনজুরুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক (রক্ষণাবেক্ষণ) সাইফুল হক, নরসিংদীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ফারজানা আলম, নরসিংদী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসমা জাহান সরকার, নরসিংদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ মাহবুবুল হকসহ আরও অনেকে।
জানা গেছে, সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ক্যাম্পাসে পৌঁছান তাঁতবোর্ডের চেয়ারম্যানসহ অন্যান্যরা। পরে সেখানে বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন শেষে আলোচনার একপর্যায়ে দুপুর ২টার দিকে ক্যাম্পাসের একটি কক্ষে তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। খবর পেয়ে রাত ৮টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছান নরসিংদী জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদ। সেখানে তিনি তাঁতবোর্ডের চেয়ারম্যানসহ অবরুদ্ধ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বললে তারা ১৫ দিনের মধ্যে বিষয়টি সমাধান দেওয়ার কথা জানায়। তবে এ প্রস্তাবে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা দ্বিমত পোষণ করে। পরে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদ ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলে ৭ দিনের মধ্যে একটি সমাধানের আশ্বাস দিলে রাত ৯টার দিকে ছাত্ররা অবরুদ্ধদের মুক্ত করে দেন। সেসময় নরসিংদী জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তবে মুক্ত করার আগে তারা একটি পত্রে কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর নেন।
তাঁতবোর্ড চেয়ারম্যান আবু আহমদ সিদ্দিকী ও অবরুদ্ধ থাকা কিছু কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত পত্রে লেখা, ১৩-০১-২০২৫ ইং রোজ সোমবারের মধ্যে নরসিংদীর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রদের দাবির বিষয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, সচিব এবং অন্যান্য স্টেক হোল্ডারদের নিয়ে জরুরি সভা আয়োজনের ব্যবস্থা করা হবে। উল্লেখ্য, প্রধান দাবি নরসিংদীর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ বস্ত্র অধিদপ্তরের অধীনে পরিচালিত হবে।
শিক্ষার্থীরা জানান, তাঁতবোর্ডের অধীনে থেকে বস্ত্র অধিদপ্তরের আওতায় তাদেরকে কলেজ স্থানান্তরিত করার জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ আন্দোলন করে আসছে। এরই অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা বেশ কয়েকবার ঢাকায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়াও সভা সমাবেশ ও মানববন্ধন করে। ফলশ্রুতিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাদের দাবি বাস্তবায়ন করার জন্য একাধিকবার আশ্বাস দিয়েও তা পূরণ হয়নি। তাঁতবোর্ড কর্মকর্তারা আজ ক্যাম্পাস পরিদর্শনে এলে তারা একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে কর্মকর্তাদের। আলোচনায় কোনো সমাধান না আসায় টানা ৭ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখা হয় তাঁতবোর্ড চেয়ারম্যানকে। পরে, চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরিত পত্রে আশ্বাস পেলে শিক্ষার্থীরা অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে সরে দাঁড়ান। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এখানে ভর্তি হওয়ার পর বাড়তি ফি গুনলেও পাচ্ছে না মানসম্মত সেবা।
তাঁতবোর্ড চেয়ারম্যান বের হয়ে যাবার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হয়নি ।