বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নিজের ভাগ্য গড়ার জন্য ক্ষমতা নয়, ক্ষমতা মানুষের ভাগ্য গড়ার জন্য।’
আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই দেশের মানুষ যেন সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে… সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশের এই উন্নতি দেখে বিশ্ববাসী আজকে অবাক হয়।’
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আদর্শের রাজনীতি করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আদর্শহীন রাজনীতি রাজনীতি নয়, এই রাজনীতি করে মানুষকে কিছু দেওয়া যায় না।’
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ সকল ছাত্র-ছাত্রীকে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদকাশক্তি থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদকাশক্তি থেকে দূরে থাকতে হবে। কেউ ধরা পড়লে থাকে বহিষ্কার করার পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি পুলিশ, র্যা বসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলে দিয়েছি এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নিতে।’
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের মূলনীতি হচ্ছে শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতি। তাই শিক্ষার মশাল জ্বেলে শান্তির বাণী নিয়ে প্রগতির পথে এগিয়ে যেতে হবে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে ছাত্রলীগের দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। সংগঠনের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করছেন সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন।
জাতীয় সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নির্বাচিত হবে সংগঠনের আগামীর নেতৃত্ব। তবে বরাবরের মতো এবার প্রত্যক্ষ ভোটে নেতৃত্ব নির্বাচন না করার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণার পর দৃশ্যপট অনেকটাই পাল্টে গেছে। ভোটপর্ব না থাকায় সম্মেলন কার্যক্রম কাউন্সিল অধিবেশন পর্যন্ত না-ও গড়াতে পারে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী জাতীয় সম্মেলন শেষ হওয়ার পর যোগ্যতার ভিত্তিতে পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড ও মেধা বিবেচনায় নিয়ে সিলেকশন পদ্ধতিতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় কমিটির পাশাপাশি সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ তিন ইউনিট ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটিও একই নিয়মে ও একসঙ্গে হবে।
এর আগে ছাত্রলীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৫ সালের ২৬ ও ২৭ জুলাই। সম্মেলনে প্রত্যক্ষ ভোটে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসেন সাইফুর রহমান সোহাগ ও এস এম জাকির হোসাইন। দুই বছর মেয়াদি এই কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কয়েক মাস পর প্রধানমন্ত্রীসহ দলের কেন্দ্রীয় নীতিনির্ধারকদের নির্দেশে চলতি বছরের ৩১ মার্চ পরবর্তী জাতীয় সম্মেলনের তারিখ নির্ধারিত হয়েছিল। তবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সেই দফায় সম্মেলন স্থগিত করা হয়। পরে ৩১ মার্চ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী রমজানের আগেই ছাত্রলীগের সম্মেলন করার নির্দেশ দিলে ১১ ও ১২ মে তারিখ নির্ধারণ করা হয়। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি ৫ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পাশাপাশি সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি, নির্বাচন কমিশন ও ১৫টি উপকমিটি গঠন করে।