বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-১৯৯০ এর অধীনে সংঘটিত অপরাধের বিচার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পৃথক আদালত গঠনের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। মাদক ব্যবসার পৃষ্ঠপোষক ও গডফাদারসহ মাদক সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগের লক্ষ্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন- ২০১৮ প্রণয়ন করা হচ্ছে।
আজ বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে পিরোজপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. রুস্তম আলী ফরাজীর এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদ্যমান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯০ অনুযায়ী মাদক অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। তবে বিদ্যমান আইনে কোনো ব্যক্তির দখলে/ কর্তৃত্বে/ অধিকারে মাদকদ্রব্য পাওয়া না গেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ কম। তাই মাদক ব্যবসায় জড়িত মাস্টার মাইন্ডরা সহজেই পার পেয়ে যায়।
তিনি বলেন, মাদক ব্যবসার পৃষ্ঠপোষক ও গডফাদারসহ মাদক সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগের লক্ষ্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ প্রণয়ন করা হচ্ছে। সংশোধিত আইনে মাদক ব্যবসায় পৃষ্ঠপোষক ও মাদকের গডফাদারসহ মাদক সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখার প্রস্তাব করা হবে। তাছাড়া এ আইনে মাদক ব্যবসায় পৃষ্ঠপোষক ব্যক্তি/ প্রতিষ্ঠানকেও আইনের আওতায় আনার জন্য মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধ তদন্তে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তাদের ক্ষমতা দেয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-১৯৯০ এর অধীন সংঘটিত অপরাধের বিচার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পৃথক আদালত গঠনের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে মাদক অপরাধীদের তাৎক্ষণিক সাজা দেয়া হচ্ছে। মাদক অপরাধ-সংক্রান্ত মামলার বিচার কার্যক্রম আলাদা কোনো আদালতের মাধ্যমে পরিচালনার বিষয়টি আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় খতিয়ে দেখছে।
তিনি জানান, গত ১৮ মে’ ২০১৮ হতে এ পর্যন্ত চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে বিপুল পরিমাণে মাদকদ্রব্য, অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং এগুলো পরিবহনের বাহন উদ্ধার ও জব্দ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত মাদকদ্রব্য সংশ্লিষ্ট মোট ১৫ হাজার ৩৩৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মোট ২০ হাজার ৭৬৭ জনকে গ্রেফতার করে বিচারের জন্য সোপর্দ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাদকদ্রব্য ও মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের বিরুদ্ধে সরকার সব সময় কঠোর অবস্থানে রয়েছে। মাদকের আগ্রাসন প্রতিরোধে মাদক ব্যবসায়ী, মাদকসেবী ও মাদক চোরাচালান সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সারাদেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। মাদক সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। যানবাহন ও মাদক স্পটগুলোতে তল্লাশি চলছে। তাছাড়া, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, মাদক সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ যাতে এতে আকৃষ্ট না হয় সেজন্য এর কুফল সম্পর্কে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে।