ঢাকা , শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যাত্রীদের প্রতিনিধিত্বহীন সড়ক আইনে সরকারের অসহায়ত্ব বাড়বে

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ সংসদে পাশ হওয়া ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ বিলে যাত্রীদের প্রতিনিধিত্ব নাথাকায় পরিবহণ সেক্টরে সরকারের অসহায়ত্ব আরো বাড়বে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। বুধবার রাতে জাতীয় সংসদে বিলটি পাশ হওয়ার পর গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবি করেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, দেশের সড়ক যোগাযোগ সেক্টরের প্রধানতম অংশীজন যাত্রীসাধারণ।

সেই যাত্রীদের প্রতিনিধিত্বহীন অনুমোদিত সড়ক পরিবহণ আইনে পরিবহণ সেক্টরে সরকারের অসহায়ত্ব আরো বাড়লো। এই আইন পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকদের স্বার্থ সংরক্ষণ করবে। দেশের ১৬ কোটি যাত্রীসাধারণ বঞ্চিত হবে দাবি করে এই আইনে যাত্রীসাধারণের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে মহামান্য রাষ্ট্রপতির সরাসরি হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তিনি।

মোজাম্মেল হক চৌধুরী ওই বিবৃতিতে আরো বলেন, দেশের সড়ক যোগাযোগ সেক্টরের প্রধানতম অংশীজন যথাক্রমে— পরিবহণ মালিক, পরিবহণ শ্রমিক, যাত্রী সাধারণ ও সরকার। দেশে সরকার নিবন্ধিত শক্তিশালী যাত্রী সংগঠন থাকার পরও অনুমোদিত সড়ক পরিবহণ আইনে যাত্রীসাধারণের প্রতিনিধিত্ব না রাখায় সারাদেশের যাত্রীসাধারণকে বঞ্চিত করা হল বলে মনে করছে সংগঠনটি।

সড়কে নৈরাজ্য, সড়ক দুর্ঘটনা, যাত্রী হয়রানী, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়সহ সড়কে নানান অন্যায্য ও অগ্রহনযোগ্য পরিস্থিতির শিকার হলে যাত্রীসাধারণের সঠিক ও গ্রহণযোগ্য প্রতিকারের পথ রুদ্ধ করা হলো বলেও দাবি করা হয় ওই বিবৃতিতে।

সংগঠনটি বলছে, পুরোনো আইনে যাত্রীসাধারণের প্রতিনিধিত্ব না থাকায় পরিবহণ মালিক-শ্রমিক নেতাদের কাছে দেশের যাত্রীসাধারণ দীর্ঘদিন ধরে জিম্মি হয়ে ছিল। এহেন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিতে দেশের গণপরিবহণ পরিচালনা, গণপরিবহণের ভাড়া নির্ধারণ, আঞ্চলিক পরিবহন কমিটি, সড়ক নিরাপত্তা কমিটি, সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ তহবিল ট্রাস্টি বোর্ডসহ সকল ক্ষেত্রে মালিক-শ্রমিক সংগঠনের পাশাপাশি যাত্রী সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে দেশের জনসাধারণের পক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতির সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করা হয় বিবৃতিতে।

এর আগে বুধবার রাতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের ২২তম অধিবেশনের বৈঠকে ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ বিল পাস হয়েছে।

বিলটি সংসদের স্থিরিকৃত আকারে পাস করার প্রস্তাব করেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

ওই আইনে অবহেলা বা বেপরোয়া মোটরযান চালনার কারণে দুর্ঘটনায় প্রাণহানির দায়ে ৫ বছরের করাদণ্ড বা ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা এবং একইসঙ্গে প্রানহানির দায়ে অভিযুক্তদের অপরাধ জামিনযোগ্য নয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া দুর্ঘটনাজনিত অন্যান্য অপরাধ আপোষ মিমাংসার জন্য পুলিশকে বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

বিল পাসের আগে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, অনেকে শুধু ৫ বছর সাজা দেখেন। কিন্তু উদ্দেশ্যমূলকভাবে বা ইচ্ছাকৃতভাবে কোন দুর্ঘটনা প্রমাণিত হলে পেনাল কোডের ৩০২ ধারা মোতাবেক অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ডও দেওয়া যাবে। ওই আইনে যাবজ্জীবনেরও বিধান আছে বলে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী উল্লেখ করেন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

যাত্রীদের প্রতিনিধিত্বহীন সড়ক আইনে সরকারের অসহায়ত্ব বাড়বে

আপডেট টাইম : ০৫:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ সংসদে পাশ হওয়া ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ বিলে যাত্রীদের প্রতিনিধিত্ব নাথাকায় পরিবহণ সেক্টরে সরকারের অসহায়ত্ব আরো বাড়বে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। বুধবার রাতে জাতীয় সংসদে বিলটি পাশ হওয়ার পর গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবি করেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, দেশের সড়ক যোগাযোগ সেক্টরের প্রধানতম অংশীজন যাত্রীসাধারণ।

সেই যাত্রীদের প্রতিনিধিত্বহীন অনুমোদিত সড়ক পরিবহণ আইনে পরিবহণ সেক্টরে সরকারের অসহায়ত্ব আরো বাড়লো। এই আইন পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকদের স্বার্থ সংরক্ষণ করবে। দেশের ১৬ কোটি যাত্রীসাধারণ বঞ্চিত হবে দাবি করে এই আইনে যাত্রীসাধারণের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে মহামান্য রাষ্ট্রপতির সরাসরি হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তিনি।

মোজাম্মেল হক চৌধুরী ওই বিবৃতিতে আরো বলেন, দেশের সড়ক যোগাযোগ সেক্টরের প্রধানতম অংশীজন যথাক্রমে— পরিবহণ মালিক, পরিবহণ শ্রমিক, যাত্রী সাধারণ ও সরকার। দেশে সরকার নিবন্ধিত শক্তিশালী যাত্রী সংগঠন থাকার পরও অনুমোদিত সড়ক পরিবহণ আইনে যাত্রীসাধারণের প্রতিনিধিত্ব না রাখায় সারাদেশের যাত্রীসাধারণকে বঞ্চিত করা হল বলে মনে করছে সংগঠনটি।

সড়কে নৈরাজ্য, সড়ক দুর্ঘটনা, যাত্রী হয়রানী, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়সহ সড়কে নানান অন্যায্য ও অগ্রহনযোগ্য পরিস্থিতির শিকার হলে যাত্রীসাধারণের সঠিক ও গ্রহণযোগ্য প্রতিকারের পথ রুদ্ধ করা হলো বলেও দাবি করা হয় ওই বিবৃতিতে।

সংগঠনটি বলছে, পুরোনো আইনে যাত্রীসাধারণের প্রতিনিধিত্ব না থাকায় পরিবহণ মালিক-শ্রমিক নেতাদের কাছে দেশের যাত্রীসাধারণ দীর্ঘদিন ধরে জিম্মি হয়ে ছিল। এহেন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিতে দেশের গণপরিবহণ পরিচালনা, গণপরিবহণের ভাড়া নির্ধারণ, আঞ্চলিক পরিবহন কমিটি, সড়ক নিরাপত্তা কমিটি, সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ তহবিল ট্রাস্টি বোর্ডসহ সকল ক্ষেত্রে মালিক-শ্রমিক সংগঠনের পাশাপাশি যাত্রী সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে দেশের জনসাধারণের পক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতির সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করা হয় বিবৃতিতে।

এর আগে বুধবার রাতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের ২২তম অধিবেশনের বৈঠকে ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ বিল পাস হয়েছে।

বিলটি সংসদের স্থিরিকৃত আকারে পাস করার প্রস্তাব করেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

ওই আইনে অবহেলা বা বেপরোয়া মোটরযান চালনার কারণে দুর্ঘটনায় প্রাণহানির দায়ে ৫ বছরের করাদণ্ড বা ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা এবং একইসঙ্গে প্রানহানির দায়ে অভিযুক্তদের অপরাধ জামিনযোগ্য নয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া দুর্ঘটনাজনিত অন্যান্য অপরাধ আপোষ মিমাংসার জন্য পুলিশকে বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

বিল পাসের আগে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, অনেকে শুধু ৫ বছর সাজা দেখেন। কিন্তু উদ্দেশ্যমূলকভাবে বা ইচ্ছাকৃতভাবে কোন দুর্ঘটনা প্রমাণিত হলে পেনাল কোডের ৩০২ ধারা মোতাবেক অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ডও দেওয়া যাবে। ওই আইনে যাবজ্জীবনেরও বিধান আছে বলে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী উল্লেখ করেন।