রোববার ভোর থেকে শুরু হওয়া দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার অবরোধে নেতাকর্মীদের ‘দুর্জয় সাহস’ নিয়ে রাস্তায় নামার আহ্বান জানিয়েছেন রুহুল কবির রিজভী। শনিবার বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব এ আহ্বান জানান।
রোববার ভোর ৬টা থেকে এ অবরোধ কর্মসূচি শুরু হবে, চলবে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত। তফসিল বাতিলসহ সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বিএনপির ডাকে এটি হবে সপ্তম দফার অবরোধ কর্মসূচি।
রিজভী বলেন, আগামীকাল থেকে শুরু হবে আবারও নিরবিচ্ছিন্ন ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি। শান্তিপূর্ণ এ কর্মসূচিতে গণতন্ত্রমনা মানুষ, সাধারণ জনগণ এবং দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা দুর্জয় সাহস নিয়ে রাজপথে এগিয়ে যাবে এ প্রত্যয়, এ আশাবাদ আমি ব্যক্ত করছি। এ আন্দোলনে আপনি, আমি, আমরা একা নই। আমাদের সবার অংশগ্রহণে এক দফার আন্দোলন আরও বিস্তৃত, বেগবান ও তেজোদীপ্ত হবে। মনে রাখবেন, দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ এবং বিশ্বের গণতান্ত্রিক শক্তিও আর বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী শাসন দেখতে চায় না, এদের পতন হবেই।
এবারের নির্বাচন হবে সিলেক্টিভ
রিজভী বলেন, জাতীয় নির্বাচন জনগণ তাদের রাষ্ট্র পরিচালনার ভার পরবর্তী মেয়াদের জন্য কাদের হাতে অর্পণ করতে চায় তা সংখ্যাগরিষ্ঠের সিদ্ধান্তের আলোকে নির্ধারণ করে দেয়। সেই নির্বাচনকে এখন হাসি-তামাশা, বাণিজ্য ও প্রহসনে পরিণত করা হয়েছে। জনগণের কাছ থেকে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষমতা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। আর জনপ্রতিনিধিত্ব এখন শেখ হাসিনার দান-দক্ষিণা, খয়রাত, বিলি-বণ্টন, ভাগ-বাটোয়ারা, উপহার-করুণায় পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে টার্গেট করে করে অর্থ এবং এমপি বানানোর প্রলোভনে কিংসপার্টি-ভূঁইফোড় পার্টিতে রাজনৈতিক নেতাদের ঢোকানো হচ্ছে। তবে কোনো নীতিবান, আদর্শবাদী, দেশপ্রেমী রাজনীতিককে তারা নিতে পারছে না। কতিপয় ডিগবাজিমার্কা-ভ্রষ্টচারী রাজনৈতিক ব্যক্তিকে নির্বাচনী রঙ্গমঞ্চের অভিনেতা বানাতে কব্জা করেছে।
রিজভী বলেন, এই প্রতারক মাফিয়া সরকার একদিকে বলছে নির্বাচনে আসুন, অন্যদিকে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীসহ আন্দোলনে সক্রিয় ও সাহসী নেতাদের টার্গেট করে বেছে বেছে কারাদণ্ড দেওয়া হচ্ছে। পুরোনো মামলায় সাজা দেওয়ার হিড়িক শুরু হয়েছে। নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে দুই বছরের নিচে কারো সাজা হচ্ছে না। কারণ দুই বছরের সাজা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার প্রতিবন্ধক।
রিজভী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৩২৫ গ্রেফতার এবং ১৩টি মামলায় ১ হাজার ৪৩৫জন নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত সারাদেশে ৪২০০ নেতাকর্মী গ্রেফতার এবং ১৩৮টি মামলায় ১৬ হাজার ১২৫ জন নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।