আবার দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে গেছেন, মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে এমন প্রার্থীদের পাশাপাশি শরিকদের সুযোগ করে দিতে যাঁদের সমঝোতায় আসন ছাড়তে হয়েছে তাঁরাও সংসদে যেতে পেয়েছেন সংরক্ষিত আসনের টিকিট। আবার দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচিত যেসব সদস্য এবার মনোনয়ন পাননি তাঁরাও সংরক্ষিত আসনের এমপি হয়ে সংসদে যাচ্ছেন।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মনোনয়নের ক্ষেত্রে খুবই ভালো প্রার্থী বাছাই হয়েছে। নিঃসন্দেহে এটি কর্মীবান্ধব মনোনয়ন। যাঁরা দলের দুর্দিনে-দুঃসময়ে মাঠে থেকে কাজ করেছেন, যাঁরা কিছু পাননি, রাজনৈতিক পরিবারের হয়েও বঞ্চিত ছিলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা তাঁদের সুযোগ দিয়েছেন।’
জেলাভিত্তিক বিশ্লেষণ করে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগ।
বিয়ানীবাজার মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর নারী মুক্তিযোদ্ধা রুমা রায় চৌধুরী সিলেট আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি উপজেলা পরিষদের সাবেক নারী ভাইস চেয়ারম্যান। নাটোরের প্রয়াত সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুসের মেয়ে ও যুব মহিলা লীগের সহসভাপতি কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি মনোনয়ন পেয়েছেন। ফরিদপুরের জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ঝর্ণা হাসান বসছেন সংসদের নারী আসনে। এমন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সরাসরি মাঠের কর্মীরাই মনোনয়ন পেয়েছেন।
নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেলেও উচ্চ আদালতের রায়ে প্রার্থিতা বাতিল হওয়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেত্রী ড. শাম্মী আহমেদও পেয়েছেন মনোনয়ন। এ ছাড়া মনোনয়ন চেয়েও না পাওয়া সাবেক শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান, ফজিলাতুন নেসাকে সংরক্ষিত আসনের এমপি পদে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। আবার যাঁরা জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরেছেন তাঁদের মধ্য থেকেও সংরক্ষিত আসনের সদস্য হতে যাচ্ছেন কেউ কেউ।
জনগণের ভোটে যাঁরা নির্বাচিত হতে পারেননি তাঁদের অনেকে সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন।
এ ক্ষেত্রে জনগণের রায়কে উপেক্ষা করা হলো কি না—এমন এক প্রশ্নের জবাবে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘এখানে জনগণের প্রত্যাখ্যানের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দলের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড যাচাই-বাছাই করে প্রার্থিতা চূড়ান্ত করেছে। এটা আমাদের দলের ব্যাপার, এটা আমাদের বোর্ডের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। কোনটা সঠিক হবে, কোনটা বেঠিক হবে, যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পুরুষের ব্যাপারে কোনো স্কোপ থাকে না। নারীদের ব্যাপারে সংরক্ষিত আসনে একটি সুযোগ আছে।’
আগামী ১৪ মার্চ সংরক্ষিত নারী আসনে ভোটের দিন রেখে তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।
কিন্তু প্রার্থী নির্ধারিত থাকায় ভোট হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। একক প্রার্থিতায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের মনোনীতরা। আগামী রবিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে কমিশনের প্রার্থীদের দলীয় মনোনয়ন জমা দিতে হবে। ২৫ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময়সীমা পার হওয়ার দিনই তাঁদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হতে পারে।