ঢাকা , রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী-ঝড়ে নাস্তানাবুদ অন্য দলের প্রার্থীরা

প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের দাপটে অনেকটাই অসহায় হয়ে পড়েন অন্য দলের প্রার্থীরা। বিএনপিসহ তাদের শরিক দলগুলোর বর্জনের মধ্যে অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ ছিল আওয়ামী লীগই। প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের বেশ কয়েকটি শরিক দলের প্রার্থীরা এবারের এ ভোটযুদ্ধে অংশ নেন। তবে তারা কেউই ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের দাপটের সামনে কোনো ধরনের সুবিধা করতে পারেননি। অনেকের তো জামানতও রক্ষা পায়নি এ নির্বাচনে।

প্রথম ধাপে ১৫২টি উপজেলা পরিষদে নির্বাচনের জন্য ২১ মার্চ তফশিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। মামলাসহ অন্যান্য কারণে ৮টি উপজেলার নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়। এছাড়া তিনটি পদের প্রার্থী বিনা ভোটে নির্বাচিত হওয়ায় ৫টিতে ভোটগ্রহণের প্রয়োজন হয়নি। ফলে ১৩৯টি উপজেলায় ৮ মে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। ২৩ মে দ্বিতীয় ধাপে, ২৯ মে তৃতীয় ধাপে এবং ৫ জুন চতুর্থ ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছে নির্বাচন কমিশন।

দ্বিতীয় ধাপে ১৬৫টি, তৃতীয় ধাপে ১১১টি এবং শেষ ধাপে ৫২টি উপজেলায় ভোট হওয়ার কথা রয়েছে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের দুটি পদসহ তিনটি পদেই দলীয় মনোনয়নে দলের প্রতীকে ভোট করার বিধান রয়েছে। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা এবার উপজেলা পরিষদে দল থেকে কোনো প্রার্থী মনোনয়ন দেবে না। অন্যদিকে সরকারবিরোধী শিবিরে থাকা বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা দলগুলো এ নির্বাচন বর্জন করে। অবশ্য দলীয়ভাবে ভোট বর্জন করলেও বেশকিছু উপজেলায় বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা প্রার্থী হিসাবে মাঠে রয়েছেন। দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে ভোটে যাওয়ায় দলটির পক্ষ থেকে এসব নেতাকর্মীকে বহিষ্কারও করা হয়েছে। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপি সমর্থিত সাতজন বহিষ্কৃত নেতা চেয়ারম্যান এবং তিনজন ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন প্রথম ধাপে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা পরিষদের এবারের প্রথম ধাপের নির্বাচনে মাত্র একজন প্রার্থী দলীয় প্রতীকে ভোট করেন। প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির প্রার্থী কাজী নজরুল ইসলাম সারোয়ার মোল্লা নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় লাঙ্গল প্রতীকে চেয়ারম্যান পদে ভোটযুদ্ধে অংশ নেন। তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের দাপটের সামনে কোনো ধরনের সুবিধাই করতে পারেননি তিনি। এর বাইরেও প্রথম ধাপের নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানসহ প্রায় ৭৬ জন জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থী এ নির্বাচনে অংশ নেন। এর মধ্যে চারজন চেয়ারম্যান পদে জয়ী হন। বাকিরা কেউই ভোটের মাঠে খুব একটা সাড়া ফেলতে পারেননি।

এ প্রসঙ্গে সাবেক মন্ত্রী ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বুধবার যুগান্তরকে বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে আওয়ামী লীগ ঘরানার প্রার্থীদেরই দাপট দেখা গেছে। কালোটাকা, পেশিশক্তি এবং গায়ের জোরে একজন আরেকজনকে হারিয়ে জয়ী হওয়ার প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের বলয়ে থাকা প্রার্থীরা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রদর্শনে চরমভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। মাঠ প্রশাসনের ভূমিকাও ছিল এক পেশে। তাদেরকে দলবাজির সঙ্গে জড়িত হতে দেখা গেছে। এতে নির্বাচনের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভোটারদের মধ্যেও নির্বাচন নিয়ে তেমন একটা উচ্ছ্বাস দেখা যায়নি। এত বৈরী পরিবেশ সত্ত্বেও আমাদের দলের প্রার্থীরা অনেক জায়গায় জয়ী হয়েছেন। অনেক জায়গায় অল্পের জন্য জয়ী হতে পারেননি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও পার্টির চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক সচিব অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূইয়া বুধবার যুগান্তরকে বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যে নির্বাচন উপহার দিয়েছে, এরপর আর কারও নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে কোনো আগ্রহ নেই। তারপরও উপজেলা নির্বাচনে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা সাহস করে স্বতন্ত্রভাবে অংশ নিচ্ছেন। বাস্তবতা এমন পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে, একটি বৈরী পরিবেশে নির্বাচনে অংশ নেওয়াটাই এখন বড় কথা, জয়-পরাজয় বড় কথা না। কারণ, দিনশেষে জয়ী কে হবেন, তা জনগণের জানা হয়ে গেছে।

জাতীয় পার্টির বাইরে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের তিন শরিক দল বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির তিনজন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের পাঁচজন এবং জাতীয় পার্টি-জেপির একজন প্রার্থী প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান পদে ভোট করেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এ তিন দলের আরও সাতজন প্রার্থী। তাদের মধ্যে জাসদের একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী তৃতীয় হন, এই দলের একজন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জয়ী হন। বাকি সবাই জামানত হারান। চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান মিলিয়ে দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং শেষ ধাপের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি সমর্থিত আরও দেড় শতাধিক প্রার্থী রয়েছেন। যারা স্বতন্ত্রভাবেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এর বাইরে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সমর্থিত প্রার্থী রয়েছেন আরও অর্ধশত। ২৩ মে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে জাসদের একজন প্রার্থী দলীয় প্রতীক মশাল নিয়ে ভোটযুদ্ধে অংশ নেবেন।

নির্বাচনে আশানুরূপ সাফল্য অর্জন করতে না পারা প্রসঙ্গে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের দপ্তর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বুধবার যুগান্তরকে বলেন, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের একক দাপটের বিপরীতে নির্বাচন করাটাই এখন কঠিন কাজ। বড় চ্যালেঞ্জ। আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ট্রেন অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা এ ট্রেনের সঙ্গে পাল্লা দেব কীভাবে। সরকারে তারা, প্রশাসন তাদের হাতে। এ অবস্থায় রাজনীতির মাঠে, ভোটের মাঠে আমরা যে আছি, এটাই তো বড় সাফল্য আমাদের।

উল্লেখ্য, দেশে ৪৯৫টি উপজেলা পরিষদ রয়েছে। সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শুরু হয় ২০১৯ সালের ১০ মার্চ। পাঁচ ধাপের ওই ভোট শেষ হয় গত বছরের জুনে। আইন অনুযায়ী উপজেলা পরিষদের মেয়াদ শুরু হয় প্রথম সভার দিন থেকে। পরবর্তী পাঁচ বছর নির্বাচিত পরিষদ দায়িত্ব পালন করে। মেয়াদপূর্তির আগের ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

 

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

আওয়ামী-ঝড়ে নাস্তানাবুদ অন্য দলের প্রার্থীরা

আপডেট টাইম : ০৪:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪

প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের দাপটে অনেকটাই অসহায় হয়ে পড়েন অন্য দলের প্রার্থীরা। বিএনপিসহ তাদের শরিক দলগুলোর বর্জনের মধ্যে অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ ছিল আওয়ামী লীগই। প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের বেশ কয়েকটি শরিক দলের প্রার্থীরা এবারের এ ভোটযুদ্ধে অংশ নেন। তবে তারা কেউই ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের দাপটের সামনে কোনো ধরনের সুবিধা করতে পারেননি। অনেকের তো জামানতও রক্ষা পায়নি এ নির্বাচনে।

প্রথম ধাপে ১৫২টি উপজেলা পরিষদে নির্বাচনের জন্য ২১ মার্চ তফশিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। মামলাসহ অন্যান্য কারণে ৮টি উপজেলার নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়। এছাড়া তিনটি পদের প্রার্থী বিনা ভোটে নির্বাচিত হওয়ায় ৫টিতে ভোটগ্রহণের প্রয়োজন হয়নি। ফলে ১৩৯টি উপজেলায় ৮ মে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। ২৩ মে দ্বিতীয় ধাপে, ২৯ মে তৃতীয় ধাপে এবং ৫ জুন চতুর্থ ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছে নির্বাচন কমিশন।

দ্বিতীয় ধাপে ১৬৫টি, তৃতীয় ধাপে ১১১টি এবং শেষ ধাপে ৫২টি উপজেলায় ভোট হওয়ার কথা রয়েছে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের দুটি পদসহ তিনটি পদেই দলীয় মনোনয়নে দলের প্রতীকে ভোট করার বিধান রয়েছে। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা এবার উপজেলা পরিষদে দল থেকে কোনো প্রার্থী মনোনয়ন দেবে না। অন্যদিকে সরকারবিরোধী শিবিরে থাকা বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা দলগুলো এ নির্বাচন বর্জন করে। অবশ্য দলীয়ভাবে ভোট বর্জন করলেও বেশকিছু উপজেলায় বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা প্রার্থী হিসাবে মাঠে রয়েছেন। দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে ভোটে যাওয়ায় দলটির পক্ষ থেকে এসব নেতাকর্মীকে বহিষ্কারও করা হয়েছে। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপি সমর্থিত সাতজন বহিষ্কৃত নেতা চেয়ারম্যান এবং তিনজন ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন প্রথম ধাপে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা পরিষদের এবারের প্রথম ধাপের নির্বাচনে মাত্র একজন প্রার্থী দলীয় প্রতীকে ভোট করেন। প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির প্রার্থী কাজী নজরুল ইসলাম সারোয়ার মোল্লা নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় লাঙ্গল প্রতীকে চেয়ারম্যান পদে ভোটযুদ্ধে অংশ নেন। তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের দাপটের সামনে কোনো ধরনের সুবিধাই করতে পারেননি তিনি। এর বাইরেও প্রথম ধাপের নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানসহ প্রায় ৭৬ জন জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থী এ নির্বাচনে অংশ নেন। এর মধ্যে চারজন চেয়ারম্যান পদে জয়ী হন। বাকিরা কেউই ভোটের মাঠে খুব একটা সাড়া ফেলতে পারেননি।

এ প্রসঙ্গে সাবেক মন্ত্রী ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বুধবার যুগান্তরকে বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে আওয়ামী লীগ ঘরানার প্রার্থীদেরই দাপট দেখা গেছে। কালোটাকা, পেশিশক্তি এবং গায়ের জোরে একজন আরেকজনকে হারিয়ে জয়ী হওয়ার প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের বলয়ে থাকা প্রার্থীরা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রদর্শনে চরমভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। মাঠ প্রশাসনের ভূমিকাও ছিল এক পেশে। তাদেরকে দলবাজির সঙ্গে জড়িত হতে দেখা গেছে। এতে নির্বাচনের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভোটারদের মধ্যেও নির্বাচন নিয়ে তেমন একটা উচ্ছ্বাস দেখা যায়নি। এত বৈরী পরিবেশ সত্ত্বেও আমাদের দলের প্রার্থীরা অনেক জায়গায় জয়ী হয়েছেন। অনেক জায়গায় অল্পের জন্য জয়ী হতে পারেননি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও পার্টির চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক সচিব অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূইয়া বুধবার যুগান্তরকে বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যে নির্বাচন উপহার দিয়েছে, এরপর আর কারও নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে কোনো আগ্রহ নেই। তারপরও উপজেলা নির্বাচনে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা সাহস করে স্বতন্ত্রভাবে অংশ নিচ্ছেন। বাস্তবতা এমন পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে, একটি বৈরী পরিবেশে নির্বাচনে অংশ নেওয়াটাই এখন বড় কথা, জয়-পরাজয় বড় কথা না। কারণ, দিনশেষে জয়ী কে হবেন, তা জনগণের জানা হয়ে গেছে।

জাতীয় পার্টির বাইরে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের তিন শরিক দল বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির তিনজন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের পাঁচজন এবং জাতীয় পার্টি-জেপির একজন প্রার্থী প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান পদে ভোট করেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এ তিন দলের আরও সাতজন প্রার্থী। তাদের মধ্যে জাসদের একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী তৃতীয় হন, এই দলের একজন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জয়ী হন। বাকি সবাই জামানত হারান। চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান মিলিয়ে দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং শেষ ধাপের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি সমর্থিত আরও দেড় শতাধিক প্রার্থী রয়েছেন। যারা স্বতন্ত্রভাবেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এর বাইরে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সমর্থিত প্রার্থী রয়েছেন আরও অর্ধশত। ২৩ মে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে জাসদের একজন প্রার্থী দলীয় প্রতীক মশাল নিয়ে ভোটযুদ্ধে অংশ নেবেন।

নির্বাচনে আশানুরূপ সাফল্য অর্জন করতে না পারা প্রসঙ্গে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের দপ্তর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বুধবার যুগান্তরকে বলেন, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের একক দাপটের বিপরীতে নির্বাচন করাটাই এখন কঠিন কাজ। বড় চ্যালেঞ্জ। আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ট্রেন অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা এ ট্রেনের সঙ্গে পাল্লা দেব কীভাবে। সরকারে তারা, প্রশাসন তাদের হাতে। এ অবস্থায় রাজনীতির মাঠে, ভোটের মাঠে আমরা যে আছি, এটাই তো বড় সাফল্য আমাদের।

উল্লেখ্য, দেশে ৪৯৫টি উপজেলা পরিষদ রয়েছে। সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শুরু হয় ২০১৯ সালের ১০ মার্চ। পাঁচ ধাপের ওই ভোট শেষ হয় গত বছরের জুনে। আইন অনুযায়ী উপজেলা পরিষদের মেয়াদ শুরু হয় প্রথম সভার দিন থেকে। পরবর্তী পাঁচ বছর নির্বাচিত পরিষদ দায়িত্ব পালন করে। মেয়াদপূর্তির আগের ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।