বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সহনশীলতা ও ধৈর্য্যের শেষ সীমায় পৌঁছে গেছে, জানিয়ে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ‘এখন আর ঘরে বসে থাকার সময় নেই। সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে পাড়া-মহল্লায় রাজপথে কঠিন প্রতিরোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। যে যেখানে আছেন, ঐক্যবদ্ধভাবে দেশবিরোধী অপশক্তি জামায়াত-বিএনপিকে প্রতিরোধ করতে হবে।’
অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীদের অপপ্রচার ও গুজবে বিভ্রান্ত হবেন না। আপনাদের সন্তানদের ঘরে রাখুন।’
রোববার (৪ আগস্ট) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ‘দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে মোকাবিলা করব। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মীসহ দেশপ্রেমিক জনতাকে আহ্বান জানাবো, এখন আর ঘরে বসে থাকার সময় নেই। যে যেখানে আছেন, ঐক্যবদ্ধভাবে দেশবিরোধী অপশক্তি জামায়াত-বিএনপিকে প্রতিরোধ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ উপায়ে দমনের জন্য রাজপথে নেমে আসতে হবে আমাদের। শেষ রক্তবিন্দু থাকতে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীর আস্ফালন আমরা সহ্য করব না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব গণতন্ত্র, সংবিধান ও জানমালের নিরাপত্তার জন্য আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্রবদ্ধ হতে হবে।’
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এরই মধ্যে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে পাড়া-মহল্লায় রাজপথে কঠিন প্রতিরোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, জানিয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘এর পরে উদ্ভূত পরিস্থিতি ও সকল হত্যা-সংহিসতার দায় আন্দোলনকারী নেতৃত্বকে নিতে হবে। আন্দোলনের নামে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করবেন না। রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করবেন না। আমরা সন্ত্রাস চাই না, শান্তি চাই। সকলকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।’
বিএনপি-জামায়াত জঙ্গি গোষ্ঠীর উদ্দেশে বলতে চাই, আমরা এই দেশমাতৃকাকে ভালোবেসে ধৈর্য্যের শেষ সীমায় পৌঁছে গেছি। ধৈর্য্য-সহনশীলতা আমাদের দুর্বলতা নয়। এই জঙ্গি গোষ্ঠীকের প্রতিরোধ করার জন্য আমরা দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘আজকে এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালকেও রেহাই দেয়নি। তারা সেখানে হামলা চালিয়ে আগুন দিয়েছে এবং ঢাকার সিএমএম আদালতে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে। হাসপাতালে মানবতাবিরোধী এই হামলা থেকে প্রমাণিত হয়, এরা কোনো শিক্ষার্থী নয়। আজকে যারা সহিংসতা করছে, এরা শিক্ষার্থী নয়। এরা বিএনপি-জামায়াত-ছাত্রদল-শিবির ও জঙ্গিগোষ্ঠীর স্বশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী।’
‘আমরা অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানাবো, এই সন্ত্রাসীদের অপপ্রচার ও গুজবে বিভ্রান্ত হবেন না। আপনাদের সন্তানদের ঘরে রাখুন।’
সরকার ছাত্রসমাজের যে কোনো দাবির প্রতি সহনশীল, জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যারা রাস্তায় অবস্থান নিচ্ছে, তাদেরকে ঘরে ফিরে যেতে অনুরোধ করছি। আমরা ছাত্রসমাজকে বলতে চাই, বর্তমান সরকার ছাত্রদের যে কোনো দাবির প্রতি সহনশীল। ছাত্রসমাজের সকল দাবি পূরণ করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গণভবনের দরজা উন্মুক্ত রেখেছেন। সরকার তাদের যে কোনো বক্তব্য শোনার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু, ছাত্রসমাজের কাঁধের ওপর বন্ধুক রেখে বর্তমান সরকারকে হটিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র বাংলাদেশের কৃষক- শ্রমিক, ছাত্র-জনতা মেনে নেবে না।’
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘সরকার পতনের এই আন্দোলন ছাত্রসমাজের নয়। তথাকথিত সরকার পতনের এক দফা দাবি ক্ষমতালিপ্সু, দেশবিরোধী বিএনপি-জামায়াত ষড়যন্ত্রকারীদের।’