বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ শেরপুর-৩ (শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী) আসনে বইছে আগাম নির্বাচনী হাওয়া। সেই সঙ্গে চলছে প্রার্থীদের মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে জোর লবিং। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। প্রার্থীরা হলেন বর্তমান এমপি প্রকৌশলী একেএম ফজলুল হক। তিনি দুই মেয়াদে এ আসনের এমপি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ থেকে এ আসনের জন্য মনোনয়ন চাইবেন। সে উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে তিনি মাঠ পর্যায়ের সাধারণ ভোটার ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়সহ বিভিন্ন সময়ে সমাবেশ করে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে দুই উপজেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো রাস্তাঘাট, ব্রিজ নির্মাণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণ, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, বিদ্যুতায়নের কাজসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নের ফিরিস্তি শোনাচ্ছেন। এ পর্যন্ত তিনি ১৬শ’ কোটি টাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন বলে দাবি করেন। মনোনয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, দলীয় হাইকমান্ড মনোনয়ন দিলে তিনি পুনরায় এমপি নির্বাচিত হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এদিকে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি ও আশির দশকের ছাত্র নেতা ইফতেখার হোসেন কাফি জুবেরী ১৯৯১ সাল থেকে এ আসনের জন্য আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়ে আসছেন। আগামী নির্বাচনেও মনোনয়নের জন্য তিনি লবিং করে যাচ্ছেন।
শ্রীবরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোতাহারুল ইসলাম লিটন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে আগামী নির্বাচনে এ আসন থেকে মনোনয়নের প্রত্যাশা করছেন। সেই সঙ্গে তিনি দলের বিভিন্ন সমাবেশ ও গত রমজান মাসে ইফতার পার্টিতে প্রার্থিতার কথা জানান। সাবেক এমপি ও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খন্দকার মুহম্মদ খুররম ২০০৮ সাল থেকে মনোনয়ন চেয়ে আসছেন। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন। এবারো তিনি মনোনয়নপ্রত্যাশী।
এ ছাড়া জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার আবু ছালেহ মো. নুরুল ইসলাম হিরু মনোনয়নের প্রত্যাশার কথা জানান দিয়েছেন। সে উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ভোটার ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে তিনি শুভেচ্ছা বিনিময় করে যাচ্ছেন। খড়িয়া কাজীরচর ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য এডিএম শহিদুল ইসলাম কর্মী সমাবেশের মধ্য দিয়ে মনোনয়নের প্রত্যাশী হিসেবে আগাম জানান দিয়েছেন। সেই সঙ্গে শহরের বিভিন্ন স্থানে পোস্টার সাঁটিয়ে ভোটার ও কর্মীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং মতবিনিময় করে যাচ্ছেন।
জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদিকা নাসরিন বেগম ফাতেমা মনোনয়নের জন্য লবিং করছেন। লিফলেট তৈরি করে ভোটার ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করে যাচ্ছেন।
প্রয়াত এমপি এমএ বারীর ছেলে মহসীনুল বারী রুমিও মনোনয়নের প্রত্যাশা করছেন। মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডা. ওয়ালীউজ্জামান আশরাফি লতা দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে মনোনয়ন চেয়ে আসছেন। আগামী নির্বাচনেও তিনি মনোনয়নের প্রত্যাশা করছেন।
সদ্য জাপা থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন ব্যবসায়ী হেদায়েতুল ইসলাম। তিনিও আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নের প্রত্যাশা করছেন। ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এসএমএ ওয়ারেজ নাঈম, সাধারণ সম্পাদক আমিরুজ্জামান লেবু ও সমুদ্র সীমানা বিজয়ী মামলার প্রসিকিউটর খোরশেদ আলম কালা প্রার্থিতার কথা জানান দিয়েছেন। এদের মধ্যে নৌকার টিকিট কে পাবেন এখন পর্যন্ত সুনিশ্চিত বলা যাচ্ছে না। এলাকায় কারো কারো গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও নৌকা প্রতীক পেলেই এমপি হবেন, এমন ধারণা নিয়েই অনেকে মনোনয়ন চাইছেন।
অপরদিকে বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী জেলা বিএনপির সভাপতি ও দু’বারের সাবেক এমপি মাহমুদুল হক রুবেল আগামী নির্বাচনেও মনোনয়ন পেতে পারেন। তাছাড়া ঝিনাইগাতী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাদশার নাম সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আছে।
জাপা থেকে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম ফর্সা দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী প্রকৌশলী একেএম ফজলুল হকের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হয়েছিলেন। আগামী নির্বাচনেও তিনি জাপা থেকে প্রার্থিতার কথা বলছেন। কিছুটা তৎপর রয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবু নাসের, এ ছাড়া রয়েছেন হাসান খালেদ কাজল।
শ্রীবরদী উপজেলা শাখা জামায়াতে ইসলামের সাবেক আমির নূরুজ্জামান বাদল ২০ দলীয় ঐক্যজোট থেকে মনোনয়ন চাইবেন। জোট থেকে মনোনয়ন না পেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।