ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগের ৭ জন মনোনয়ন যুদ্ধে

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যবেষ্টিত সীমান্তবর্তী শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী উপজেলা নিয়ে গঠিত শেরপুর-৩ আসন। এ আসনে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বড় দুই জোটের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা পাড়া-মহল্লা, বাজারে পথসভা, গণসংযোগ করে জানান দিচ্ছেন নিজেদের প্রার্থিতার কথা। আবার অনেকে পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন টাঙিয়ে নিজেদের কথা তুলে ধরছেন। জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে কেউ কেউ দিচ্ছেন নানামুখী উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি। এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ৭ জন। এরা হলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য প্রকৌশলী একেএম ফজলুল হক চান, ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম ওয়ারেজ নাঈম, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক এমপি খন্দকার খুররম, শ্রীবরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোতাহারুল ইসলাম লিটন, সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম এমএ বারীর ছেলে মুহসীনুল বারী রুমী, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এডিএম শহীদুল ইসলাম ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা নাছরিন।

অভিযোগ রয়েছে, সংসদ সদস্য প্রকৌশলী একেএম ফজলুল হক চান ত্যাগী নেতাদের অবমূল্যায়ন করেন। আর এ কারণে ক্ষুব্ধ অনেকেই। সাবেক এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য খন্দকার খুররমকে শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতীর উন্নয়নের নায়ক হিসাবে ডাকেন সবাই। সে অর্থে সাধারণ মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন এ নেতা। আবার অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করায় কিছুটা পিছিয়েও রয়েছেন। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থতা আর দল বদলের বিষয়টি নিয়েও প্রশ্ন তুলেন অনেকে।
এ আসনের আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী ১৯৯৬ সালের সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম এমএ বারীর ছেলে মুহসীনুল বারী রুমী। ২০০৮ সালে মনোনয়ন দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে ছিলেন তিনি। পড়ে জোটের সিদ্ধান্তে মনোনয়ন দেয়া হয় বর্তমান এমপি একেএম ফজলুল হক চানকে। জোটের পক্ষে ওই নির্বাচনে তার উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। ফলে জোটের তৃণমূল নেতাদের নজর কাড়েন এ নেতা।
এ আসনের আওয়ামী লীগ থেকে আরেক জোরালো মনোনয়ন প্রত্যাশী ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম ওয়ারেজ নাঈম। তিনি সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলা থেকে আওয়ামী লীগের একমাত্র মনোনয়ন প্রত্যাশী। বিগত নির্বাচনগুলোতে বারবার মনোনয়ন বঞ্চিত হলেও আগামী নির্বাচনে তাকেই মনোনয়ন দেবেন বলে জানান তিনি। কিন্তু বিগত দুই দফা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে পরাজিত হন এ নেতা। ফলে জনপ্রিয়তার প্রশ্নে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছেন বলে জানান স্থানীয় উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতারা।
এদিকে শ্রীবরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোতাহারুল ইসলাম লিটন মনোনয়ন পেতে নড়ে চড়ে বসেছেন। নেতাকর্মীদের নিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে তরুণ এ নেতার ভীত শক্তিশালী করতে সামাজিক উন্নয়নে সভা-সমাবেশ করে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। জনপ্রিয়তার দিক থেকে পিছিয়ে নেই এই নেতাও। তবে তিনিও নতুন মুখ।
আওয়ামী লীগ থেকে আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়াকাজীরচর ইউনিয়ন পরিষদের একাধিকবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান এডিএম শহীদুল ইসলাম। তরুণ এ নেতার জনপ্রিয়তা সর্বমহলে নজর কেড়েছে। তিনি দৌড়াচ্ছেন মাঠে-ময়দানে। তিনি জানান, আমার রাজনৈতিক জীবনে ঘুষ দুর্নীতিসহ নানাবিধ অপছায়া আমাকে স্পর্শ করতে পারেনি। আমি আশাবাদী দল আমাকে মনোনয়ন দিলে এ আসনের নৌকার বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না। তবে জোটের শীর্ষ স্থানীয় নেতারা জানান, তিনি এ আসনে নতুন মুখ। ফলে ত্যাগী নেতাদের সমর্থন পেতে তাকে আরো অপেক্ষা করতে হবে। এ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা নাছরিন। ফাতেমা ইতিমধ্যে পেয়েছেন হাইকমান্ডের সমর্থন। তিনি বলেন, এ আসন থেকে একমাত্র মহিলা প্রার্থী হিসেবে জোট এবার আমাকেই মনোনয়ন দেবে। অন্যদিকে এ আসন থেকে বিএনপির একক প্রার্থী সাবেক এমপি মরহুম ডা. সিরাজুল হকের ছেলে জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি মাহমুদুল হক রুবেল। দুবার নির্বাচিত এ নেতা বিগত নির্বাচনে পরাজিত হলেও এ আসনের প্রত্যন্ত এলাকার নেতাকর্মীদের সঙ্গে রয়েছে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ। এ আসনে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল থাকায় মনোনয়ন দিতে ভুল করলে খেসারত দিতে হবে তাদের। এমনটাই জানালেন নেতা-কর্মীরা।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

আওয়ামী লীগের ৭ জন মনোনয়ন যুদ্ধে

আপডেট টাইম : ০৪:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩ নভেম্বর ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যবেষ্টিত সীমান্তবর্তী শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী উপজেলা নিয়ে গঠিত শেরপুর-৩ আসন। এ আসনে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বড় দুই জোটের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা পাড়া-মহল্লা, বাজারে পথসভা, গণসংযোগ করে জানান দিচ্ছেন নিজেদের প্রার্থিতার কথা। আবার অনেকে পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন টাঙিয়ে নিজেদের কথা তুলে ধরছেন। জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে কেউ কেউ দিচ্ছেন নানামুখী উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি। এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ৭ জন। এরা হলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য প্রকৌশলী একেএম ফজলুল হক চান, ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম ওয়ারেজ নাঈম, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক এমপি খন্দকার খুররম, শ্রীবরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোতাহারুল ইসলাম লিটন, সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম এমএ বারীর ছেলে মুহসীনুল বারী রুমী, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এডিএম শহীদুল ইসলাম ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা নাছরিন।

অভিযোগ রয়েছে, সংসদ সদস্য প্রকৌশলী একেএম ফজলুল হক চান ত্যাগী নেতাদের অবমূল্যায়ন করেন। আর এ কারণে ক্ষুব্ধ অনেকেই। সাবেক এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য খন্দকার খুররমকে শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতীর উন্নয়নের নায়ক হিসাবে ডাকেন সবাই। সে অর্থে সাধারণ মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন এ নেতা। আবার অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করায় কিছুটা পিছিয়েও রয়েছেন। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থতা আর দল বদলের বিষয়টি নিয়েও প্রশ্ন তুলেন অনেকে।
এ আসনের আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী ১৯৯৬ সালের সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম এমএ বারীর ছেলে মুহসীনুল বারী রুমী। ২০০৮ সালে মনোনয়ন দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে ছিলেন তিনি। পড়ে জোটের সিদ্ধান্তে মনোনয়ন দেয়া হয় বর্তমান এমপি একেএম ফজলুল হক চানকে। জোটের পক্ষে ওই নির্বাচনে তার উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। ফলে জোটের তৃণমূল নেতাদের নজর কাড়েন এ নেতা।
এ আসনের আওয়ামী লীগ থেকে আরেক জোরালো মনোনয়ন প্রত্যাশী ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম ওয়ারেজ নাঈম। তিনি সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলা থেকে আওয়ামী লীগের একমাত্র মনোনয়ন প্রত্যাশী। বিগত নির্বাচনগুলোতে বারবার মনোনয়ন বঞ্চিত হলেও আগামী নির্বাচনে তাকেই মনোনয়ন দেবেন বলে জানান তিনি। কিন্তু বিগত দুই দফা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে পরাজিত হন এ নেতা। ফলে জনপ্রিয়তার প্রশ্নে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছেন বলে জানান স্থানীয় উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতারা।
এদিকে শ্রীবরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোতাহারুল ইসলাম লিটন মনোনয়ন পেতে নড়ে চড়ে বসেছেন। নেতাকর্মীদের নিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে তরুণ এ নেতার ভীত শক্তিশালী করতে সামাজিক উন্নয়নে সভা-সমাবেশ করে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। জনপ্রিয়তার দিক থেকে পিছিয়ে নেই এই নেতাও। তবে তিনিও নতুন মুখ।
আওয়ামী লীগ থেকে আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়াকাজীরচর ইউনিয়ন পরিষদের একাধিকবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান এডিএম শহীদুল ইসলাম। তরুণ এ নেতার জনপ্রিয়তা সর্বমহলে নজর কেড়েছে। তিনি দৌড়াচ্ছেন মাঠে-ময়দানে। তিনি জানান, আমার রাজনৈতিক জীবনে ঘুষ দুর্নীতিসহ নানাবিধ অপছায়া আমাকে স্পর্শ করতে পারেনি। আমি আশাবাদী দল আমাকে মনোনয়ন দিলে এ আসনের নৌকার বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না। তবে জোটের শীর্ষ স্থানীয় নেতারা জানান, তিনি এ আসনে নতুন মুখ। ফলে ত্যাগী নেতাদের সমর্থন পেতে তাকে আরো অপেক্ষা করতে হবে। এ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা নাছরিন। ফাতেমা ইতিমধ্যে পেয়েছেন হাইকমান্ডের সমর্থন। তিনি বলেন, এ আসন থেকে একমাত্র মহিলা প্রার্থী হিসেবে জোট এবার আমাকেই মনোনয়ন দেবে। অন্যদিকে এ আসন থেকে বিএনপির একক প্রার্থী সাবেক এমপি মরহুম ডা. সিরাজুল হকের ছেলে জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি মাহমুদুল হক রুবেল। দুবার নির্বাচিত এ নেতা বিগত নির্বাচনে পরাজিত হলেও এ আসনের প্রত্যন্ত এলাকার নেতাকর্মীদের সঙ্গে রয়েছে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ। এ আসনে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল থাকায় মনোনয়ন দিতে ভুল করলে খেসারত দিতে হবে তাদের। এমনটাই জানালেন নেতা-কর্মীরা।