ঢাকা , শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আরও এক ঐতিহাসিক গির্জাকে মসজিদ বানাচ্ছে তুরস্ক

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের নির্দেশে ইস্তানবুলের আরও একটি সাবেক গির্জা ও বর্তমান জাদুঘরকে মসজিদ বানাচ্ছে তুরস্ক। ঐতিহাসিক এ ভবনটির বর্তমান নাম কারিয়ে জাদুঘর। ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য ঘোষিত হায়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তরের মাত্র মাসখানেকের মধ্যেই কারিয়ে জাদুঘরের ক্ষেত্রেও একই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের আদেশ জারি করেছে তুর্কি সরকার। শুক্রবার তুরস্কের সরকারি গ্যাজেটে এ আদেশের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

কারিয়ে জাদুঘরের ইতিহাস অনেকটাই হায়া সোফিয়ার সঙ্গে মিলে যায়। প্রায় এক হাজার বছরের পুরোনো এ ভবনটি ইস্তানবুলের পশ্চিমাংশে ফাতিহ জেলায় অবস্থিত। মধ্যযুগে বাইজেন্টাইন শাসকদের তৈরি এ গির্জাটি ‘দ্য হোলি সেভিয়ার ইন হোরা’ বা হোরার পবিত্র ত্রাণকর্তা নামে পরিচিত। চতুর্দশ শতকের দেয়াললিপি দিয়ে সজ্জিত ভবনটি খ্রিস্টান বিশ্বে বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

অটোমান যোদ্ধাদের কনস্টানটিপোল জয়ের প্রায় অর্ধশতাব্দী পর ১৪৫৩ সালে গির্জাটিকে মসজিদে রূপান্তরিত করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তুরস্কের ধর্মনিরপক্ষ হয়ে ওঠার চেষ্টা হিসেবে তৎকালীন সরকার এটিকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করে।

দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় ভবনটির যথাসম্ভব পুরোনো রূপ ফিরিয়ে ১৯৫৮ সালে তা দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। তবে চলতি বছরের নভেম্বরেই জাদুঘরটিকে আবারও মসজিদে রূপান্তরিত করার অনুমতি দিয়েছেন তুরস্কের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক আদালত।

এর আগে, গত জুলাইয়ে প্রায় ৮৬ বছর পর জুমআর নামাজের জন্য খুলে দেয়া হয় ঐতিহাসিক স্থাপনা হায়া সোফিয়া।

প্রায় দেড় হাজার বছর আগে অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের প্রধান গির্জা (ক্যাথেড্রাল) হিসেবে হায়া সোফিয়া প্রতিষ্ঠিত হয়। কয়েক শতাব্দী পর অটোমান শাসকরা এটিকে মসজিদে রূপান্তরিত করেন। ১৯৩৪ সালে এটিকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করে তৎকালীন ধর্মনিরপেক্ষ তুর্কি সরকার। ১৯৮৫ সালে জাদুঘর হায়া সোফিয়াকে বিশ্ব ঐতিহ্য স্থাপনা ঘোষণা করে ইউনেস্কো।

গত ১০ জুলাই তুরস্কের আদালত হায়া সোফিয়াকে জাদুঘরের মর্যাদা বাতিল করে মসজিদে রূপান্তরের আদেশ দেন। মসজিদ ছাড়া অন্যকিছু হিসেবে এটির ব্যবহারকে অবৈধ বলেও জানান আদালত।

পরে দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ এই স্থাপনাকে মসজিদে রূপান্তরে আদালতের সিদ্ধান্ত স্বাগত জানিয়ে ২৪ জুলাই প্রথম জুমার নামাজের জন্য মসজিদটি খুলে দেয়ার ঘোষণা দেন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

আরও এক ঐতিহাসিক গির্জাকে মসজিদ বানাচ্ছে তুরস্ক

আপডেট টাইম : ০৩:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ অগাস্ট ২০২০

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের নির্দেশে ইস্তানবুলের আরও একটি সাবেক গির্জা ও বর্তমান জাদুঘরকে মসজিদ বানাচ্ছে তুরস্ক। ঐতিহাসিক এ ভবনটির বর্তমান নাম কারিয়ে জাদুঘর। ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য ঘোষিত হায়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তরের মাত্র মাসখানেকের মধ্যেই কারিয়ে জাদুঘরের ক্ষেত্রেও একই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের আদেশ জারি করেছে তুর্কি সরকার। শুক্রবার তুরস্কের সরকারি গ্যাজেটে এ আদেশের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

কারিয়ে জাদুঘরের ইতিহাস অনেকটাই হায়া সোফিয়ার সঙ্গে মিলে যায়। প্রায় এক হাজার বছরের পুরোনো এ ভবনটি ইস্তানবুলের পশ্চিমাংশে ফাতিহ জেলায় অবস্থিত। মধ্যযুগে বাইজেন্টাইন শাসকদের তৈরি এ গির্জাটি ‘দ্য হোলি সেভিয়ার ইন হোরা’ বা হোরার পবিত্র ত্রাণকর্তা নামে পরিচিত। চতুর্দশ শতকের দেয়াললিপি দিয়ে সজ্জিত ভবনটি খ্রিস্টান বিশ্বে বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

অটোমান যোদ্ধাদের কনস্টানটিপোল জয়ের প্রায় অর্ধশতাব্দী পর ১৪৫৩ সালে গির্জাটিকে মসজিদে রূপান্তরিত করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তুরস্কের ধর্মনিরপক্ষ হয়ে ওঠার চেষ্টা হিসেবে তৎকালীন সরকার এটিকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করে।

দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় ভবনটির যথাসম্ভব পুরোনো রূপ ফিরিয়ে ১৯৫৮ সালে তা দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। তবে চলতি বছরের নভেম্বরেই জাদুঘরটিকে আবারও মসজিদে রূপান্তরিত করার অনুমতি দিয়েছেন তুরস্কের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক আদালত।

এর আগে, গত জুলাইয়ে প্রায় ৮৬ বছর পর জুমআর নামাজের জন্য খুলে দেয়া হয় ঐতিহাসিক স্থাপনা হায়া সোফিয়া।

প্রায় দেড় হাজার বছর আগে অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের প্রধান গির্জা (ক্যাথেড্রাল) হিসেবে হায়া সোফিয়া প্রতিষ্ঠিত হয়। কয়েক শতাব্দী পর অটোমান শাসকরা এটিকে মসজিদে রূপান্তরিত করেন। ১৯৩৪ সালে এটিকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করে তৎকালীন ধর্মনিরপেক্ষ তুর্কি সরকার। ১৯৮৫ সালে জাদুঘর হায়া সোফিয়াকে বিশ্ব ঐতিহ্য স্থাপনা ঘোষণা করে ইউনেস্কো।

গত ১০ জুলাই তুরস্কের আদালত হায়া সোফিয়াকে জাদুঘরের মর্যাদা বাতিল করে মসজিদে রূপান্তরের আদেশ দেন। মসজিদ ছাড়া অন্যকিছু হিসেবে এটির ব্যবহারকে অবৈধ বলেও জানান আদালত।

পরে দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ এই স্থাপনাকে মসজিদে রূপান্তরে আদালতের সিদ্ধান্ত স্বাগত জানিয়ে ২৪ জুলাই প্রথম জুমার নামাজের জন্য মসজিদটি খুলে দেয়ার ঘোষণা দেন।