ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুসলমানদের প্রতি সৌদি আরব

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ (২৩ সেপ্টেম্বর ছিল সৌদি আরবের জাতীয় দিবস) সারা বিশ্বে কোরআনকে
ছড়িয়ে দেয়ার জন্য বাদশাহ ফাহাদের নিজস্ব উদ্যোগে ১৪০৩ সালে মদিনা মুনাওয়ারার তাবুক রোডের পাশে ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার জমির ওপর ‘মুজাম্মা আল মালিক ফাহ্দ লি-তাবাআতিল মুসহাফ আশ শারিফ’ বা ‘বাদশাহ ফাহাদ কোরআন প্রিন্টিং প্রেস’ প্রতিষ্ঠিত হয়, যা ১৪০৫ হিজরি থেকে কার্যক্রম শুরু করে। এ সংস্থা থেকে বছরে ৭০ লাখ কপি কোরআন ও বিশ্বের প্রধান প্রধান ভাষাাসহ বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা
কপি ছাপানো হয়

সৌদি আরব শুধু মুসলিম বিশ্বের কেন্দ্রভূমিই নয়, ধীরে ধীরে দেশটি পুরো বিশ্বের কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে এবং এ ধারাবাহিকতা ভবিষ্যতেও বজায় থাকবে। কারণ এ দেশেই অবস্থিত উম্মুল কুরা (নগরমাতা) মক্কা আল-মোকাররমা, যেখানে রয়েছে পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম ইবাদতগৃহ ও আল্লাহর ঘর ‘কাবা’, যা মানবজাতির হেদায়েতের জন্য তৈরি করা হয়েছে বলে আল্লাহ তায়ালা কোরআনে ঘোষণা করেছেন। আর এটিই মুসলমানদের কেবলা, যার দিকে ফিরে বিশ্বের মুসলমানরা প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত পড়ে, বছরে একবার হজ সম্পাদন করে এবং সারা বছর ওমরা পালন করে। উল্লেখ্য, সৌদি আরবের জেনারেল অথরিটি ফর স্ট্যাটিসটিকসের হিসাব মতে, ১৪৩৮ হিজরি মোতাবেক ২০১৭ সালে পুরো বিশ্ব থেকে ২৩ লাখ ৫২ হাজার ১২২ জন মুসলমান হজ পালন করেছেন, যার মধ্যে ৬ লাখ ১০৮ জন সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ হাজী আর বাকি ১৭ লাখ ৫২ হাজার ১৪ জন হাজী সৌদি আরবের বাইর থেকে এসে হজ পালন করেছেন। শুধু বাংলাদেশ থেকেই ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ হাজী হজ পালন করেছেন।
সৌদি আরবে রাজতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা প্রচলিত থাকলেও দেশটির বাদশাহরা নিজেদের বাদশাহ পরিচয় দেয়ার চেয়ে ‘খাদিমুল হারামাইন আশ-শারিফাইন’ বা ‘দুই হারামের (মক্কা ও মদিনা) সেবক’ হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করেন। তারা হাজী, ওমরাকারী ও জিয়ারতকারীদের জন্য রাস্তায় রাস্তায় বিলবোর্ডে ও দেয়ালে বড় করে লিখে রেখেছেন ‘খিদমাতুকুম শারফুন লানা’ অর্থাৎ ‘আপনাদের সেবা করা আমাদের জন্য মর্যাদার বিষয়’।
সৌদি আরব শুধু হারামাইনের খেদমতেই নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখছে না। দেশটি সারা দুনিয়ায় ইসলামের প্রচার ও প্রসারেও সাধ্যানুযায়ী অবদান রেখে যাচ্ছে। সারা বিশ্বে কোরআনকে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য বাদশাহ ফাহাদের নিজস্ব উদ্যোগে ১৪০৩ সালে মদিনা মুনাওয়ারার তাবুক রোডের পাশে ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার জমির ওপর ‘মুজাম্মা আল মালিক ফাহ্দ লি-তাবাআতিল মুসহাফ আশ শারিফ’ বা ‘বাদশাহ ফাহাদ কোরআন প্রিন্টিং প্রেস’ প্রতিষ্ঠিত হয়, যা ১৪০৫ হিজরি থেকে কার্যক্রম শুরু করে। এ সংস্থা থেকে বছরে ৭০ লাখ কপি কোরআন ও বিশ্বের প্রধান প্রধান ভাষাসহ বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা কপি ছাপানো হয়। এ সংস্থা থেকে ক্যাসেট, সিডি করেও কোরআন বিতরণ করা হয়। আর এ সংস্থাটি এখন হয়ে উঠেছে কোরআন গবেষণার প্রাণকেন্দ্র।
সৌদি আরব মুসলিম বিশ্বের ইসলামী ভাবধারা সমৃদ্ধকরণ, আরবি ও ইসলামী খেদমতকে ত্বরান্বিত ও বিস্তৃত করার জন্য বাদশাহ ফয়সাল ফাউন্ডেশনের অধীনে কিং ফয়সাল আন্তর্জাতিক পুরস্কার ঘোষণা করে, যা বর্তমান মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার হিসেবে পরিগণিত হয়। মুসলিম ও অমুসলিম নির্বিশেষে সবার জন্য ইসলামের সেবা, ইসলামী শিক্ষা, আরবি সাহিত্য, চিকিৎসা ও বিজ্ঞানÑ এ পাঁচটি বিষয়ের ওপর ১৯৭৯ সাল থেকে এ পুরস্কার দেয়া চালু রয়েছে।
সৌদি আরব শুধু বিশ্বব্যাপী মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার নির্মাণ করেই থেমে থাকেনি; বরং যেখানেই মুসলমানরা নির্যাতিত ও নিপীড়িত হয়েছে, সেখানেই তাদের পাশে ছায়ার মতো দাঁড়িয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর সৌদি আরব এবং এর ইসলামী সংস্থাগুলো মধ্য এশিয়ার নবসৃষ্ট মুসলিম প্রজাতন্ত্রগুলোকে সাহায্যের ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। বসনিয়া-হার্জেগোভিনার মুসলমানরা যখন সার্ব বাহিনী কর্তৃক গণহত্যার শিকার হয়, তখন সৌদি আরব সেখানকার মুসলমানদের সৌদি আরবে এনে রক্ষা করে এবং তাদের স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ করে দেয়। সঙ্গে সঙ্গে তাদের সাহায্য করার জন্য ‘বসনিয়া-হার্জেগোভিনায় মুসলমানদের জন্য সাহায্য সংগ্রহের উচ্চকমিটি’ গঠন করে এবং এর মাধ্যমে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সাহায্য সংগ্রহ করে নিপীড়িত মানুষের মাঝে বিতরণ করে।
২০১২ সালে মিয়ানমারের মুসলমানরা গণহত্যার শিকার হলে সৌদি আরব ওআইসির চতুর্থ বিশেষ শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করে এবং তাদের জন্য ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদানের ঘোষণা করে। সম্প্রতি মিয়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত জাতিগত নির্মূল অভিযানে ও গণহত্যার প্রেক্ষাপটে রাখাইন রাজ্য ছেড়ে বাঁচার জন্য বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ১২৩ কোটি টাকা) ত্রাণ হিসেবে পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আযীয আলে সাউদ।
সৌদি আরবের বর্তমান বাদশাহ খাদিমুল হারামাইন সালমান বিন আবদুল আযীয আলে সাউদ, ক্রাউন প্রিন্স ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী মুহাম্মাদ বিন সালমানের নেতৃত্বে সৌদি আরব আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও অর্থনীতিতে এক নতুন শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। তারা ভিশন-২০৩০ ঘোষণা করেছে এবং তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। আমরা আশা করছি, পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে ও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সৌদি আরব ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর স্বার্থে আরও বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে। সিরিয়া, ইরাক, ফিলিস্তিন, মিয়ানমারসহ বিশ্বের যেখানেই মুসলমানরা নির্যাতিত ও নিপীড়িত হচ্ছে, তাদের পাশে দাঁড়িয়ে স্থায়ীভাবে তাদের সমস্যা দূরীকরণে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। বিশেষ করে আশা করছি, মুসলমানদের ঐক্য ও সংহতি প্রতিষ্ঠায় এবং সন্ত্রাস, দারিদ্র্যসহ অন্যান্য সমস্যা দূরীকরণে মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্ব প্রদান করবে। যেহেতু সৌদি আরব কোরআন অবতরণের স্থান, নবী মুহাম্মাদ (সা.) এর কর্মক্ষেত্র এবং যেহেতু তাদের আল্লাহ তায়ালা প্রতি বছর লাখ লাখ হাজীর মেহমানদারি করার ও ইসলামের প্রধান দুইটি কেন্দ্র মক্কা এবং মদিনার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দিয়েছেন, তাই তাদের দায়িত্ব ও তাদের প্রতি সারা বিশ্বের প্রত্যেক মুসলমানের আশা-আকাক্সক্ষার মাত্রাও বেশি।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

মুসলমানদের প্রতি সৌদি আরব

আপডেট টাইম : ০৪:০৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ (২৩ সেপ্টেম্বর ছিল সৌদি আরবের জাতীয় দিবস) সারা বিশ্বে কোরআনকে
ছড়িয়ে দেয়ার জন্য বাদশাহ ফাহাদের নিজস্ব উদ্যোগে ১৪০৩ সালে মদিনা মুনাওয়ারার তাবুক রোডের পাশে ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার জমির ওপর ‘মুজাম্মা আল মালিক ফাহ্দ লি-তাবাআতিল মুসহাফ আশ শারিফ’ বা ‘বাদশাহ ফাহাদ কোরআন প্রিন্টিং প্রেস’ প্রতিষ্ঠিত হয়, যা ১৪০৫ হিজরি থেকে কার্যক্রম শুরু করে। এ সংস্থা থেকে বছরে ৭০ লাখ কপি কোরআন ও বিশ্বের প্রধান প্রধান ভাষাাসহ বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা
কপি ছাপানো হয়

সৌদি আরব শুধু মুসলিম বিশ্বের কেন্দ্রভূমিই নয়, ধীরে ধীরে দেশটি পুরো বিশ্বের কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে এবং এ ধারাবাহিকতা ভবিষ্যতেও বজায় থাকবে। কারণ এ দেশেই অবস্থিত উম্মুল কুরা (নগরমাতা) মক্কা আল-মোকাররমা, যেখানে রয়েছে পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম ইবাদতগৃহ ও আল্লাহর ঘর ‘কাবা’, যা মানবজাতির হেদায়েতের জন্য তৈরি করা হয়েছে বলে আল্লাহ তায়ালা কোরআনে ঘোষণা করেছেন। আর এটিই মুসলমানদের কেবলা, যার দিকে ফিরে বিশ্বের মুসলমানরা প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত পড়ে, বছরে একবার হজ সম্পাদন করে এবং সারা বছর ওমরা পালন করে। উল্লেখ্য, সৌদি আরবের জেনারেল অথরিটি ফর স্ট্যাটিসটিকসের হিসাব মতে, ১৪৩৮ হিজরি মোতাবেক ২০১৭ সালে পুরো বিশ্ব থেকে ২৩ লাখ ৫২ হাজার ১২২ জন মুসলমান হজ পালন করেছেন, যার মধ্যে ৬ লাখ ১০৮ জন সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ হাজী আর বাকি ১৭ লাখ ৫২ হাজার ১৪ জন হাজী সৌদি আরবের বাইর থেকে এসে হজ পালন করেছেন। শুধু বাংলাদেশ থেকেই ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ হাজী হজ পালন করেছেন।
সৌদি আরবে রাজতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা প্রচলিত থাকলেও দেশটির বাদশাহরা নিজেদের বাদশাহ পরিচয় দেয়ার চেয়ে ‘খাদিমুল হারামাইন আশ-শারিফাইন’ বা ‘দুই হারামের (মক্কা ও মদিনা) সেবক’ হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করেন। তারা হাজী, ওমরাকারী ও জিয়ারতকারীদের জন্য রাস্তায় রাস্তায় বিলবোর্ডে ও দেয়ালে বড় করে লিখে রেখেছেন ‘খিদমাতুকুম শারফুন লানা’ অর্থাৎ ‘আপনাদের সেবা করা আমাদের জন্য মর্যাদার বিষয়’।
সৌদি আরব শুধু হারামাইনের খেদমতেই নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখছে না। দেশটি সারা দুনিয়ায় ইসলামের প্রচার ও প্রসারেও সাধ্যানুযায়ী অবদান রেখে যাচ্ছে। সারা বিশ্বে কোরআনকে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য বাদশাহ ফাহাদের নিজস্ব উদ্যোগে ১৪০৩ সালে মদিনা মুনাওয়ারার তাবুক রোডের পাশে ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার জমির ওপর ‘মুজাম্মা আল মালিক ফাহ্দ লি-তাবাআতিল মুসহাফ আশ শারিফ’ বা ‘বাদশাহ ফাহাদ কোরআন প্রিন্টিং প্রেস’ প্রতিষ্ঠিত হয়, যা ১৪০৫ হিজরি থেকে কার্যক্রম শুরু করে। এ সংস্থা থেকে বছরে ৭০ লাখ কপি কোরআন ও বিশ্বের প্রধান প্রধান ভাষাসহ বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা কপি ছাপানো হয়। এ সংস্থা থেকে ক্যাসেট, সিডি করেও কোরআন বিতরণ করা হয়। আর এ সংস্থাটি এখন হয়ে উঠেছে কোরআন গবেষণার প্রাণকেন্দ্র।
সৌদি আরব মুসলিম বিশ্বের ইসলামী ভাবধারা সমৃদ্ধকরণ, আরবি ও ইসলামী খেদমতকে ত্বরান্বিত ও বিস্তৃত করার জন্য বাদশাহ ফয়সাল ফাউন্ডেশনের অধীনে কিং ফয়সাল আন্তর্জাতিক পুরস্কার ঘোষণা করে, যা বর্তমান মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার হিসেবে পরিগণিত হয়। মুসলিম ও অমুসলিম নির্বিশেষে সবার জন্য ইসলামের সেবা, ইসলামী শিক্ষা, আরবি সাহিত্য, চিকিৎসা ও বিজ্ঞানÑ এ পাঁচটি বিষয়ের ওপর ১৯৭৯ সাল থেকে এ পুরস্কার দেয়া চালু রয়েছে।
সৌদি আরব শুধু বিশ্বব্যাপী মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার নির্মাণ করেই থেমে থাকেনি; বরং যেখানেই মুসলমানরা নির্যাতিত ও নিপীড়িত হয়েছে, সেখানেই তাদের পাশে ছায়ার মতো দাঁড়িয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর সৌদি আরব এবং এর ইসলামী সংস্থাগুলো মধ্য এশিয়ার নবসৃষ্ট মুসলিম প্রজাতন্ত্রগুলোকে সাহায্যের ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। বসনিয়া-হার্জেগোভিনার মুসলমানরা যখন সার্ব বাহিনী কর্তৃক গণহত্যার শিকার হয়, তখন সৌদি আরব সেখানকার মুসলমানদের সৌদি আরবে এনে রক্ষা করে এবং তাদের স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ করে দেয়। সঙ্গে সঙ্গে তাদের সাহায্য করার জন্য ‘বসনিয়া-হার্জেগোভিনায় মুসলমানদের জন্য সাহায্য সংগ্রহের উচ্চকমিটি’ গঠন করে এবং এর মাধ্যমে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সাহায্য সংগ্রহ করে নিপীড়িত মানুষের মাঝে বিতরণ করে।
২০১২ সালে মিয়ানমারের মুসলমানরা গণহত্যার শিকার হলে সৌদি আরব ওআইসির চতুর্থ বিশেষ শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করে এবং তাদের জন্য ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদানের ঘোষণা করে। সম্প্রতি মিয়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত জাতিগত নির্মূল অভিযানে ও গণহত্যার প্রেক্ষাপটে রাখাইন রাজ্য ছেড়ে বাঁচার জন্য বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ১২৩ কোটি টাকা) ত্রাণ হিসেবে পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আযীয আলে সাউদ।
সৌদি আরবের বর্তমান বাদশাহ খাদিমুল হারামাইন সালমান বিন আবদুল আযীয আলে সাউদ, ক্রাউন প্রিন্স ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী মুহাম্মাদ বিন সালমানের নেতৃত্বে সৌদি আরব আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও অর্থনীতিতে এক নতুন শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। তারা ভিশন-২০৩০ ঘোষণা করেছে এবং তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। আমরা আশা করছি, পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে ও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সৌদি আরব ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর স্বার্থে আরও বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে। সিরিয়া, ইরাক, ফিলিস্তিন, মিয়ানমারসহ বিশ্বের যেখানেই মুসলমানরা নির্যাতিত ও নিপীড়িত হচ্ছে, তাদের পাশে দাঁড়িয়ে স্থায়ীভাবে তাদের সমস্যা দূরীকরণে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। বিশেষ করে আশা করছি, মুসলমানদের ঐক্য ও সংহতি প্রতিষ্ঠায় এবং সন্ত্রাস, দারিদ্র্যসহ অন্যান্য সমস্যা দূরীকরণে মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্ব প্রদান করবে। যেহেতু সৌদি আরব কোরআন অবতরণের স্থান, নবী মুহাম্মাদ (সা.) এর কর্মক্ষেত্র এবং যেহেতু তাদের আল্লাহ তায়ালা প্রতি বছর লাখ লাখ হাজীর মেহমানদারি করার ও ইসলামের প্রধান দুইটি কেন্দ্র মক্কা এবং মদিনার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দিয়েছেন, তাই তাদের দায়িত্ব ও তাদের প্রতি সারা বিশ্বের প্রত্যেক মুসলমানের আশা-আকাক্সক্ষার মাত্রাও বেশি।