ঢাকা , সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ক্রীতদাসী মুমিনের গুণ বর্ণনায় যেভাবে মুক্ত হলেন

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ ক্ষমা ও দাসত্বের অনন্য নজির স্থাপন করেছিলেন হজরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর নাতি হজরত হোসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহুর ছেলে হজরত আলী বিন হোসাইন রাহমাতুল্লাহি আলাইহি।

তাদের সংস্পর্শে থাকা এক ক্রীতদাসী তাঁকে মুমিন ব্যক্তির গুণ এবং আল্লাহর প্রশংসার কথা বলেন এবং তা বাস্তবায়নের আশা প্রকাশ করেন যার ফলশ্রুতিতে হজরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুর নাতি হজরত আলী বিন হোসাইন রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ওই ক্রীতদাসীকে আজাদ (দাসত্ব থেকে মুক্ত) করে দেন।

দাসীকে আজাদ করার ঘটনা
হজরত আলী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি একদিন অজু করার জন্য ওঠলেন। তাঁ খাদেমা গরম পানির পাত্র নিয়ে উপস্থিত হলেন। হঠাৎ করেই খাদেমার হাত থেকে গরম পানি পাত্র পড়ে যায়। গরম পানি হজরত আলী বিন হোসাইন রহমাতুল্লাহি আলাইহির এর শরীরে পড়ে এবং শরীর যখম হয়ে যায়।

হজরত আলী বিন হোসাইন খাদেমার দিকে চোখ তুলে তাকাতেই খাদেমা বলে উঠলেন যে-

>> আল্লাহ তাআলা মুমিনদের প্রশংসায় বলেন, মুমিন ব্যক্তি ক্রোধ সংবরণ করে।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৩৪)
তিনি (হজরত আলী বিন হোসাইন) বললেন, ‘আমি ক্রোধ সংবরণ করলাম।

খাদেমা মুমিনের দ্বিতীয় গুণ উল্লেখ করে বলল, আল্লাহ তাআলা আরো ইরশাদ করেন, ‘(তারা/মুমিনরা) মানুষকে ক্ষমাকারী।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৩৪)

তিনি (হজরত আলী বিন হোসাইন) বললেন, ‘আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করুন।’ অথ্যাৎ আমি তোমাকে ক্ষমা করলাম।

খাদেমা মুমিনের তৃতীয় গুণ উল্লেখ করে বলেন, ‘আল্লাহ অনুগ্রহকারীদেরকে পছন্দ করেন।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৩৪)
তিনি (হজরত আলী বিন হোসাইন) বললেন, ‘আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তোমাকে আজাদ (দাসত্ব থেকে মুক্তি) করে দিলাম। (সুবহানাল্লাহ!)

মুমিন ব্যক্তির উল্লেখযোগ্য গুণগুলো সুরা আল-ইমরানের ১৩৪নং আয়াতে ওঠে এসেছে। আর তাহলো-
‘যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল অবস্থায় দান করে; ক্রোধ সংবরণ করে এবং মানুষকে ক্ষমা করে। আর আল্লাহ বিশুদ্ধচিত্তে) সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন।’

যারা এগুণগুলো অর্জন করবে; আল্লাহ তাআলা তাদের উদ্দেশ্য করে আগের আয়াতে বলেন-

‘তোমরা প্রতিযোগিতা (তরা) কর; তোমাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে ক্ষমা ও বেহেশত লাভের জন্য; যার প্রস্থ আকাষ ও পৃথিবীর সমান। যা ধর্মভীরুদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৩৩)

দয়া ও ক্ষমার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন হজরত আলী বিন হোসাইন রহমাতুল্লাহি আলাইহি। যা হওয়া উচিত মুসলিম উম্মাহর অনুকরণীয় সর্বোত্তম আদর্শ।

আল্লাহ তাআলা কুরআনের আলোকে মুসলিম উম্মাহকে জীবনের সর্বক্ষেত্রে ক্ষমা ও দয়ার মূর্তপ্রতীক হওয়ার তাওফিক দান করুন। কুরআনে ঘোষিত গুণের আদলে মুমিন জীবন সাজানোর তাওফিক দান করুন। দুনিয়ায় ইসলামি জীবন-যাপন করে পরকালের কল্যাণ ও সফলতা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

ক্রীতদাসী মুমিনের গুণ বর্ণনায় যেভাবে মুক্ত হলেন

আপডেট টাইম : ০২:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ অক্টোবর ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ ক্ষমা ও দাসত্বের অনন্য নজির স্থাপন করেছিলেন হজরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর নাতি হজরত হোসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহুর ছেলে হজরত আলী বিন হোসাইন রাহমাতুল্লাহি আলাইহি।

তাদের সংস্পর্শে থাকা এক ক্রীতদাসী তাঁকে মুমিন ব্যক্তির গুণ এবং আল্লাহর প্রশংসার কথা বলেন এবং তা বাস্তবায়নের আশা প্রকাশ করেন যার ফলশ্রুতিতে হজরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুর নাতি হজরত আলী বিন হোসাইন রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ওই ক্রীতদাসীকে আজাদ (দাসত্ব থেকে মুক্ত) করে দেন।

দাসীকে আজাদ করার ঘটনা
হজরত আলী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি একদিন অজু করার জন্য ওঠলেন। তাঁ খাদেমা গরম পানির পাত্র নিয়ে উপস্থিত হলেন। হঠাৎ করেই খাদেমার হাত থেকে গরম পানি পাত্র পড়ে যায়। গরম পানি হজরত আলী বিন হোসাইন রহমাতুল্লাহি আলাইহির এর শরীরে পড়ে এবং শরীর যখম হয়ে যায়।

হজরত আলী বিন হোসাইন খাদেমার দিকে চোখ তুলে তাকাতেই খাদেমা বলে উঠলেন যে-

>> আল্লাহ তাআলা মুমিনদের প্রশংসায় বলেন, মুমিন ব্যক্তি ক্রোধ সংবরণ করে।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৩৪)
তিনি (হজরত আলী বিন হোসাইন) বললেন, ‘আমি ক্রোধ সংবরণ করলাম।

খাদেমা মুমিনের দ্বিতীয় গুণ উল্লেখ করে বলল, আল্লাহ তাআলা আরো ইরশাদ করেন, ‘(তারা/মুমিনরা) মানুষকে ক্ষমাকারী।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৩৪)

তিনি (হজরত আলী বিন হোসাইন) বললেন, ‘আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করুন।’ অথ্যাৎ আমি তোমাকে ক্ষমা করলাম।

খাদেমা মুমিনের তৃতীয় গুণ উল্লেখ করে বলেন, ‘আল্লাহ অনুগ্রহকারীদেরকে পছন্দ করেন।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৩৪)
তিনি (হজরত আলী বিন হোসাইন) বললেন, ‘আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তোমাকে আজাদ (দাসত্ব থেকে মুক্তি) করে দিলাম। (সুবহানাল্লাহ!)

মুমিন ব্যক্তির উল্লেখযোগ্য গুণগুলো সুরা আল-ইমরানের ১৩৪নং আয়াতে ওঠে এসেছে। আর তাহলো-
‘যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল অবস্থায় দান করে; ক্রোধ সংবরণ করে এবং মানুষকে ক্ষমা করে। আর আল্লাহ বিশুদ্ধচিত্তে) সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন।’

যারা এগুণগুলো অর্জন করবে; আল্লাহ তাআলা তাদের উদ্দেশ্য করে আগের আয়াতে বলেন-

‘তোমরা প্রতিযোগিতা (তরা) কর; তোমাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে ক্ষমা ও বেহেশত লাভের জন্য; যার প্রস্থ আকাষ ও পৃথিবীর সমান। যা ধর্মভীরুদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৩৩)

দয়া ও ক্ষমার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন হজরত আলী বিন হোসাইন রহমাতুল্লাহি আলাইহি। যা হওয়া উচিত মুসলিম উম্মাহর অনুকরণীয় সর্বোত্তম আদর্শ।

আল্লাহ তাআলা কুরআনের আলোকে মুসলিম উম্মাহকে জীবনের সর্বক্ষেত্রে ক্ষমা ও দয়ার মূর্তপ্রতীক হওয়ার তাওফিক দান করুন। কুরআনে ঘোষিত গুণের আদলে মুমিন জীবন সাজানোর তাওফিক দান করুন। দুনিয়ায় ইসলামি জীবন-যাপন করে পরকালের কল্যাণ ও সফলতা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।