কোচ হাথুরুসিংহে আর ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন দুজনই আগেরদিন জানিয়ে দিলেন, কালও ( আজ শুক্রবার) ঐচ্ছিক প্র্যাকটিস। কেউ আসতে চাইলে আসতেও পারে। আসতে না চাইলে বিশ্রামও নিতে পারে। কোচ ও ম্যানেজারের মুখে এমন কথা শুনে মনে হয়েছিল , শেষ ম্যাচের আগের শেষ প্র্যাকটিস সেশনেও বুঝি পুরো দল এক সঙ্গে আসবে না। বেশ ক`জন হোটেল রুমে বিশ্রাম নিবেন।
কিন্তু আজ দুপুর দেড়টায় ( স্থানীয় সময়) বাংলাদেশ দলের সাদা রঙ্গের টিম বাস সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাবের মূল গেটে এসে দাঁড়ানোর পর দেখা গেল পুরো দলই প্রায় অনুশীলনে। মাঠে প্র্যাকটিসের আগে টিম মিটিং। তারপর লাঞ্চ সেড়ে প্র্যাকটিসে মাশরাফিবাহিনী।
১৭ জনের বহরের শুধু একজন মাত্র নেই। আর সবাই আছেন। সাকিব আল হাসানই অনুপস্থিত। ইতিহাস গড়ার হাতছানি। শ্রীলঙ্কার মাটিতে লঙ্কানদের জয়শূন্য সিরিজ শেষ করে নিজেরা সিরিজ জয়ের আনন্দে মেতে ওঠার খুব কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া। আর একটি মাত্র জয় দরকার। তাহলেই সাফল্যের
নতুন ইতিহাস রচিত হবে। এমন ঐতিহাসিক ও স্মরণীয় ম্যাচের ২৪ ঘণ্টা আগে শেষ প্র্যাকটিস সেশনে সাকিবের মত গুরুত্বপূর্ণ ও নির্ভরযোগ্য এক কার্যকর পারফর্মার অনুশীলনে নেই।
ঐচ্ছিক অনুশীলন জেনেও শুধু আগামীকালকের (শনিবার) ম্যাচের গুরুত্বের কথা বিবেচনা করেই আর সবাই ঠিক অনুশীলনে চলে এসেছেন। শুধু সাকিব আসেননি। কেন আসেননি? তবে কি সাকিবের শরীর খারাপ? নাকি কোন ইনজুরি? বাংলাদেশের সাংবাদিকদের মধ্যে নানা কৌতূহলী প্রশ্ন উকি ঝুঁকি দিল।
কে একজন অধিনায়ক মাশরাফিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন, ‘কাল এমন একটা সিরিজ নির্ধারণী লড়াই। সেখানে ঐচ্ছিক অনুশীলন জেনেও সবাই নিজেকে শেষ মুহূর্তে প্রস্তুত করতে প্র্যাকটিসে চলে এসেছেন অথচ সাকিব আসেননি। কেন?
মাশরাফি খুব ধীর ও স্থিরভাবে জবাব দিলেন। তবে খানিক রসিকতা করে। প্রথমে বললেন, শুনুন, সারা বছর যে নিয়মিত মনোযোগ দিয়ে পড়ালেখা করে, তার আর পরীক্ষার আগের রাতে পড়ি কি মরি করে বই হাতে সারা রাত বসে থাকতে হয় না। তার না পড়লেও চলে। তারপর রসিকতা ছেড়ে সিরিয়াস মাশরাফি, আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠা, গরম দেখেছেন।
সি অসহনীয় তাপ। শরীর পুরে যায়। কিছু করার দরকার নেই দাঁড়িয়ে থাকলেও ঘেমে নেয়ে উঠতে হয়। এমন গরমে দাঁড়ায়ে থাকলেও ঘেমে যায় শরীর। এমন প্রচণ্ড গরমে একদিন অনুশীলন না করায় এমন কিছু এসে যায় না।’
অধিনায়ক মাশরাফি কি একটুও বাড়িয়ে বলেছেন? সাকিবকে যারা চেনেন ও জানেন, তাদের সবার খুব ভালো জানা। শতভাগ পেশাদার মানসিকতায় গড়া সাকিব। ঠিক জায়গামত কি করতে হয়, তা ভালোই জানেন। কে জানে আজ ম্যাচের দিন অনুশীলন না করা সাকিবই যে কাল ম্যাচসেরা হবেন না, বাংলাদেশের জয়ের রূপকার হবেন না, তাইবা কি করে বলা?
অতীতে বহুবার এমন দেখা গেছে। পুরো দল এক মাসের বেশি সময় ধরে অনুশীলন করছে। সাকিব আইপিএল, বিগ ব্যাশ কিংবা কাউন্টি খেলে দলের সাথে চার-পাঁচদিন অনুশীলন করে মাঠে নেমে প্রথম ম্যাচেই হয়েছেন ম্যাচসেরা। তার ব্যাট ও বলের ওপর ভড় করেই জিতেছে বাংলাদেশ।