ঢাকা , মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দীর্ঘস্থায়ী বন্যার আশঙ্কা

ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে দেশে দীর্ঘস্থায়ী বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বন্যায় পাহাড় ধসে ও পানিতে ডুবে ইতিমধ্যে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অবিরাম বৃষ্টিতে দেশের উত্তর-মধ্য-পূর্বাঞ্চলে পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। বন্যার দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে চলতি মাসের শেষে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ও আগস্টের শুরুতে দেশের অধিকাংশ স্থানে আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা করা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, চলতি মাসের বাকি সময়জুড়ে দেশের বেশিরভাগ স্থানে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। প্রতিবেশী দেশ ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরও কয়েক সপ্তাহ টানা বৃষ্টি হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে। দেশের উজানের এলাকা ভারতের আসাম ও মেঘালয়েও ভারি মাত্রার বৃষ্টি হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা, মিজোরাম ও মেঘালয়ে প্রবল বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এসব কারণে উজান থেকে নেমে আসা ঢলের মাত্রাও বাড়ছে। এতে দেশের বেশিরভাগ নদীর পানি আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে পারে এবং বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।

ইতিমধ্যে ভারত, চীন ও জাপানের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশেও বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়ছেন লাখ লাখ মানুষ।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান সমকালকে বলেন, ‘গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও পদ্মায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে বৃষ্টিপাত বাড়লে উজান থেকে আসা পানি বন্যার স্থায়িত্ব বাড়িয়ে দিতে পারে।’

ব্রহ্মপুত্র, গঙ্গা, মেঘনা, পদ্মা, কুশিয়ারা, সুরমা, ধলেশ্বরী, তিস্তা ও দক্ষিণ-পূর্ব পাহাড়ি অববাহিকায় পানির উচ্চতা অস্বাভাবিক গতিতে বাড়ছে। গত দু’দিন ধরে দেশের প্রধান নদী অববাহিকার পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। শুক্রবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৯০টি নদী পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে ৫১টি পয়েন্টে পানি অস্বাভাবিক গতিতে বাড়তে দেখা গেছে। এর মধ্যে যমুনা, সুরমা, কুশিয়ারা ও কংশের সাতটি পর্যবেক্ষণ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে।

পানি বিশেষজ্ঞ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক মহাপরিচালক ড. শহীদুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ‘দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। এ অবস্থা জুলাই পর্যন্ত অব্যাহত থাকলে এবং এ সময়ে নতুন করে বন্যা দেখা দিলে তা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। জুলাইয়ের বন্যা আগস্ট পর্যন্ত স্থায়ী হলে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা থাকে। এবার এমনটিই মনে হচ্ছে।’

১৯৮৮, ১৯৯৮ ও ২০০৭ সালের বন্যার আগে মৌসুমি বায়ুর গতিপ্রকৃতির সঙ্গে এবারের মৌসুমি বায়ুর গতিপ্রকৃতির অনেকটা মিল রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন। বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, ৭ থেকে ১০ বছর পর পর একটি করে বড় বন্যা হয়ে থাকে। ২০০৭ সালের পর এবারই বড় ও দীর্ঘস্থায়ী বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। নদ-নদীর পানি বাড়ার মাত্রাও অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার অনেক বেশি। উজানের দেশ ভারতে পর্যাপ্ত বৃষ্টি এবং গঙ্গা- ব্রহ্মপুত্রে একসঙ্গে পানি বাড়লে দেশে বড় বন্যার আশঙ্কা করা হয়। এবার এ তিনটি লক্ষণ একসঙ্গে দেখা দেওয়ায় বড় বন্যার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সক্রিয় মৌসুমি বায়ু দেশের উত্তর দিকে অগ্রসর হওয়ায় দেশের উত্তরাঞ্চলে বৃষ্টি বেড়েছে। নদীভাঙনও তীব্র হয়ে উঠেছে। বৃষ্টিপাত সপ্তাহ দুয়েক অব্যাহত থাকলে বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র। হাওর বিপর্যয়ের দু’মাস পর মৌলভীবাজার ও সিলেটের বিস্তীর্ণ এলাকা এখন নতুন করে বন্যাকবলিত।ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে দেশে দীর্ঘস্থায়ী বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বন্যায় পাহাড় ধসে ও পানিতে ডুবে ইতিমধ্যে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অবিরাম বৃষ্টিতে দেশের উত্তর-মধ্য-পূর্বাঞ্চলে পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। বন্যার দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে চলতি মাসের শেষে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ও আগস্টের শুরুতে দেশের অধিকাংশ স্থানে আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা করা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, চলতি মাসের বাকি সময়জুড়ে দেশের বেশিরভাগ স্থানে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। প্রতিবেশী দেশ ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরও কয়েক সপ্তাহ টানা বৃষ্টি হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে। দেশের উজানের এলাকা ভারতের আসাম ও মেঘালয়েও ভারি মাত্রার বৃষ্টি হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা, মিজোরাম ও মেঘালয়ে প্রবল বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এসব কারণে উজান থেকে নেমে আসা ঢলের মাত্রাও বাড়ছে। এতে দেশের বেশিরভাগ নদীর পানি আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে পারে এবং বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। ইতিমধ্যে ভারত, চীন ও জাপানের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশেও বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়ছেন লাখ লাখ মানুষ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান সমকালকে বলেন, ‘গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও পদ্মায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে বৃষ্টিপাত বাড়লে উজান থেকে আসা পানি বন্যার স্থায়িত্ব বাড়িয়ে দিতে পারে।’ ব্রহ্মপুত্র, গঙ্গা, মেঘনা, পদ্মা, কুশিয়ারা, সুরমা, ধলেশ্বরী, তিস্তা ও দক্ষিণ-পূর্ব পাহাড়ি অববাহিকায় পানির উচ্চতা অস্বাভাবিক গতিতে বাড়ছে। গত দু’দিন ধরে দেশের প্রধান নদী অববাহিকার পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। শুক্রবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৯০টি নদী পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে ৫১টি পয়েন্টে পানি অস্বাভাবিক গতিতে বাড়তে দেখা গেছে। এর মধ্যে যমুনা, সুরমা, কুশিয়ারা ও কংশের সাতটি পর্যবেক্ষণ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। পানি বিশেষজ্ঞ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক মহাপরিচালক ড. শহীদুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ‘দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। এ অবস্থা জুলাই পর্যন্ত অব্যাহত থাকলে এবং এ সময়ে নতুন করে বন্যা দেখা দিলে তা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। জুলাইয়ের বন্যা আগস্ট পর্যন্ত স্থায়ী হলে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা থাকে। এবার এমনটিই মনে হচ্ছে।’ ১৯৮৮, ১৯৯৮ ও ২০০৭ সালের বন্যার আগে মৌসুমি বায়ুর গতিপ্রকৃতির সঙ্গে এবারের মৌসুমি বায়ুর গতিপ্রকৃতির অনেকটা মিল রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন। বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, ৭ থেকে ১০ বছর পর পর একটি করে বড় বন্যা হয়ে থাকে। ২০০৭ সালের পর এবারই বড় ও দীর্ঘস্থায়ী বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। নদ-নদীর পানি বাড়ার মাত্রাও অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার অনেক বেশি। উজানের দেশ ভারতে পর্যাপ্ত বৃষ্টি এবং গঙ্গা- ব্রহ্মপুত্রে একসঙ্গে পানি বাড়লে দেশে বড় বন্যার আশঙ্কা করা হয়। এবার এ তিনটি লক্ষণ একসঙ্গে দেখা দেওয়ায় বড় বন্যার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। সক্রিয় মৌসুমি বায়ু দেশের উত্তর দিকে অগ্রসর হওয়ায় দেশের উত্তরাঞ্চলে বৃষ্টি বেড়েছে। নদীভাঙনও তীব্র হয়ে উঠেছে। বৃষ্টিপাত সপ্তাহ দুয়েক অব্যাহত থাকলে বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র। হাওর বিপর্যয়ের দু’মাস পর মৌলভীবাজার ও সিলেটের বিস্তীর্ণ এলাকা এখন নতুন করে বন্যাকবলিত।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

দীর্ঘস্থায়ী বন্যার আশঙ্কা

আপডেট টাইম : ০৪:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ জুলাই ২০১৭

ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে দেশে দীর্ঘস্থায়ী বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বন্যায় পাহাড় ধসে ও পানিতে ডুবে ইতিমধ্যে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অবিরাম বৃষ্টিতে দেশের উত্তর-মধ্য-পূর্বাঞ্চলে পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। বন্যার দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে চলতি মাসের শেষে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ও আগস্টের শুরুতে দেশের অধিকাংশ স্থানে আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা করা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, চলতি মাসের বাকি সময়জুড়ে দেশের বেশিরভাগ স্থানে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। প্রতিবেশী দেশ ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরও কয়েক সপ্তাহ টানা বৃষ্টি হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে। দেশের উজানের এলাকা ভারতের আসাম ও মেঘালয়েও ভারি মাত্রার বৃষ্টি হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা, মিজোরাম ও মেঘালয়ে প্রবল বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এসব কারণে উজান থেকে নেমে আসা ঢলের মাত্রাও বাড়ছে। এতে দেশের বেশিরভাগ নদীর পানি আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে পারে এবং বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।

ইতিমধ্যে ভারত, চীন ও জাপানের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশেও বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়ছেন লাখ লাখ মানুষ।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান সমকালকে বলেন, ‘গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও পদ্মায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে বৃষ্টিপাত বাড়লে উজান থেকে আসা পানি বন্যার স্থায়িত্ব বাড়িয়ে দিতে পারে।’

ব্রহ্মপুত্র, গঙ্গা, মেঘনা, পদ্মা, কুশিয়ারা, সুরমা, ধলেশ্বরী, তিস্তা ও দক্ষিণ-পূর্ব পাহাড়ি অববাহিকায় পানির উচ্চতা অস্বাভাবিক গতিতে বাড়ছে। গত দু’দিন ধরে দেশের প্রধান নদী অববাহিকার পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। শুক্রবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৯০টি নদী পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে ৫১টি পয়েন্টে পানি অস্বাভাবিক গতিতে বাড়তে দেখা গেছে। এর মধ্যে যমুনা, সুরমা, কুশিয়ারা ও কংশের সাতটি পর্যবেক্ষণ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে।

পানি বিশেষজ্ঞ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক মহাপরিচালক ড. শহীদুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ‘দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। এ অবস্থা জুলাই পর্যন্ত অব্যাহত থাকলে এবং এ সময়ে নতুন করে বন্যা দেখা দিলে তা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। জুলাইয়ের বন্যা আগস্ট পর্যন্ত স্থায়ী হলে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা থাকে। এবার এমনটিই মনে হচ্ছে।’

১৯৮৮, ১৯৯৮ ও ২০০৭ সালের বন্যার আগে মৌসুমি বায়ুর গতিপ্রকৃতির সঙ্গে এবারের মৌসুমি বায়ুর গতিপ্রকৃতির অনেকটা মিল রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন। বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, ৭ থেকে ১০ বছর পর পর একটি করে বড় বন্যা হয়ে থাকে। ২০০৭ সালের পর এবারই বড় ও দীর্ঘস্থায়ী বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। নদ-নদীর পানি বাড়ার মাত্রাও অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার অনেক বেশি। উজানের দেশ ভারতে পর্যাপ্ত বৃষ্টি এবং গঙ্গা- ব্রহ্মপুত্রে একসঙ্গে পানি বাড়লে দেশে বড় বন্যার আশঙ্কা করা হয়। এবার এ তিনটি লক্ষণ একসঙ্গে দেখা দেওয়ায় বড় বন্যার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সক্রিয় মৌসুমি বায়ু দেশের উত্তর দিকে অগ্রসর হওয়ায় দেশের উত্তরাঞ্চলে বৃষ্টি বেড়েছে। নদীভাঙনও তীব্র হয়ে উঠেছে। বৃষ্টিপাত সপ্তাহ দুয়েক অব্যাহত থাকলে বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র। হাওর বিপর্যয়ের দু’মাস পর মৌলভীবাজার ও সিলেটের বিস্তীর্ণ এলাকা এখন নতুন করে বন্যাকবলিত।ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে দেশে দীর্ঘস্থায়ী বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বন্যায় পাহাড় ধসে ও পানিতে ডুবে ইতিমধ্যে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অবিরাম বৃষ্টিতে দেশের উত্তর-মধ্য-পূর্বাঞ্চলে পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। বন্যার দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে চলতি মাসের শেষে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ও আগস্টের শুরুতে দেশের অধিকাংশ স্থানে আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা করা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, চলতি মাসের বাকি সময়জুড়ে দেশের বেশিরভাগ স্থানে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। প্রতিবেশী দেশ ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরও কয়েক সপ্তাহ টানা বৃষ্টি হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে। দেশের উজানের এলাকা ভারতের আসাম ও মেঘালয়েও ভারি মাত্রার বৃষ্টি হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা, মিজোরাম ও মেঘালয়ে প্রবল বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এসব কারণে উজান থেকে নেমে আসা ঢলের মাত্রাও বাড়ছে। এতে দেশের বেশিরভাগ নদীর পানি আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে পারে এবং বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। ইতিমধ্যে ভারত, চীন ও জাপানের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশেও বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়ছেন লাখ লাখ মানুষ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান সমকালকে বলেন, ‘গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও পদ্মায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে বৃষ্টিপাত বাড়লে উজান থেকে আসা পানি বন্যার স্থায়িত্ব বাড়িয়ে দিতে পারে।’ ব্রহ্মপুত্র, গঙ্গা, মেঘনা, পদ্মা, কুশিয়ারা, সুরমা, ধলেশ্বরী, তিস্তা ও দক্ষিণ-পূর্ব পাহাড়ি অববাহিকায় পানির উচ্চতা অস্বাভাবিক গতিতে বাড়ছে। গত দু’দিন ধরে দেশের প্রধান নদী অববাহিকার পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। শুক্রবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৯০টি নদী পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে ৫১টি পয়েন্টে পানি অস্বাভাবিক গতিতে বাড়তে দেখা গেছে। এর মধ্যে যমুনা, সুরমা, কুশিয়ারা ও কংশের সাতটি পর্যবেক্ষণ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। পানি বিশেষজ্ঞ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক মহাপরিচালক ড. শহীদুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ‘দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। এ অবস্থা জুলাই পর্যন্ত অব্যাহত থাকলে এবং এ সময়ে নতুন করে বন্যা দেখা দিলে তা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। জুলাইয়ের বন্যা আগস্ট পর্যন্ত স্থায়ী হলে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা থাকে। এবার এমনটিই মনে হচ্ছে।’ ১৯৮৮, ১৯৯৮ ও ২০০৭ সালের বন্যার আগে মৌসুমি বায়ুর গতিপ্রকৃতির সঙ্গে এবারের মৌসুমি বায়ুর গতিপ্রকৃতির অনেকটা মিল রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন। বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, ৭ থেকে ১০ বছর পর পর একটি করে বড় বন্যা হয়ে থাকে। ২০০৭ সালের পর এবারই বড় ও দীর্ঘস্থায়ী বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। নদ-নদীর পানি বাড়ার মাত্রাও অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার অনেক বেশি। উজানের দেশ ভারতে পর্যাপ্ত বৃষ্টি এবং গঙ্গা- ব্রহ্মপুত্রে একসঙ্গে পানি বাড়লে দেশে বড় বন্যার আশঙ্কা করা হয়। এবার এ তিনটি লক্ষণ একসঙ্গে দেখা দেওয়ায় বড় বন্যার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। সক্রিয় মৌসুমি বায়ু দেশের উত্তর দিকে অগ্রসর হওয়ায় দেশের উত্তরাঞ্চলে বৃষ্টি বেড়েছে। নদীভাঙনও তীব্র হয়ে উঠেছে। বৃষ্টিপাত সপ্তাহ দুয়েক অব্যাহত থাকলে বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র। হাওর বিপর্যয়ের দু’মাস পর মৌলভীবাজার ও সিলেটের বিস্তীর্ণ এলাকা এখন নতুন করে বন্যাকবলিত।