ঢাকা , শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শতাধিক আসনে নৌকা ডুবাতে আওয়ামী লীগই যথেষ্ট

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ তৃণমূলই আওয়ামী লীগের প্রাণ। সব সময় তাদের মতকে প্রাধান্য দেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় সংসদ থেকে ইউনিয়ন—সব পর্যায়ের নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে তিনি তৃণমূলের পছন্দ-অপছন্দকে গুরুত্ব দেন। তারপরও তৃণমূলে ক্ষোভ, দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিত্য হচ্ছে। দল সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, টানা ১০ বছর ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় এমপি ও নেতাদের অবহেলায় আওয়ামী লীগের তৃণমূলে বেহালদশা বিরাজ করছে। নিজের মনোনয়ন বা নেতা হওয়ার পথ প্রশস্ত করতে একাধিক গ্রুপিং, দলের বাইরে নতুন বলয় তৈরি করার মতো বিষয় এখন দলটির জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সারাদেশে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা নাজুক। কেন্দ্র থেকে ওয়ার্ড পর্যন্ত কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। কেউ কাউকে মানতে চান না। ফলে কোনো সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরও তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না।

জনপ্রতিনিধি হওয়ার আগ্রহ, পদ আঁকড়ে ধরার প্রবণতা এবং নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না করায় তৃণমূলে এ অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নিরসন করে দ্রুত সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব না হলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃণমূলই আওয়ামী লীগের কাল হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন নেতারা।

সারাদেশের বিভিন্ন জেলা ও আসনভিত্তিক আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থার খবর নিতে গিয়ে জানা গেছে, বেশিরভাগ জেলার সাংগঠনিক অবস্থা খুবই দুর্বল। আসনগুলোর অবস্থাও বেশ নাজুক। প্রতিটি আসনে ৪ থেকে ৫ জন করে সম্ভাব্য প্রার্থী তৎপর রয়েছেন। তারা পরস্পরের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো থেকে শুরু করে বিরোধিতার জন্য হেন কাজ নেই যা করছেন না। এসব কারণে নানা জায়গায় বিভিন্ন প্রার্থীর কর্মীদের মাঝে খুনোখুনি, প্রকাশ্য হামলা-মারামারিসহ নানা সংঘাত হচ্ছে। এমনকি এলাকার রাজনৈতিক অভিভাবক এমপি বা নেতাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার মতো ঘটনাও ঘটছে।

এসব সমস্যা সমাধানে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার তাগিদ দিলেও কাজ হচ্ছে না। সর্বশেষ গত ৬ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় তিনি এ নিয়ে ক্ষোভের সঙ্গে হুঁশিয়ারিও উচ্চারণ করেছেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কেন্দ্রীয়সহ ২৪ নেতাকে শোকজ করে আওয়ামী লীগ।

এরপরও থেমে নেই দ্বন্দ্ব-সংঘাত। গত কার্যনির্বাহী সভার আগের দিন দিনাজপুরের বীরগঞ্জ-কাহারোল আসনের এমপি মনোরঞ্জন শীলকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ।

এর দু’দিন আগে ৪ সেপ্টেম্বর বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন করে স্থানীয় এমপি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।

গত ২৮ আগস্ট রাজশাহীর দুর্গাপুরে শোক দিবসের এক আলোচনায় সংসদ সদস্য আবদুল ওয়াদুদকে প্রতিহত করার ঘোষণা দেন নিজ দলের নেতাকর্মীরা। গত মে মাসে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীকে মনোনয়ন না দেয়ার সুপারিশ করে শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগ।

এছাড়া নালিতাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা এবং দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী আসনের এমপি এ কে এম ফজলুল হকসহ পাঁচজনকে জেলা কমিটি থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়।

গেল বছরের অক্টোবরে নাটোরের গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম আসনের এমপি আবদুল কুদ্দুসকে বয়কট করার ঘোষণা দেন দলের একাংশ। ওই বছর জুলাইয়ে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সাতক্ষীরা থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ডা. আ ফ ম রুহুল হককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে জেলার দেবহাটা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ।

সম্প্রতি খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুমিল্লা-৮, চাঁদপুর-১, নোয়াখালী-৬, নেত্রকোনা-৫, ময়মনসিংহ-১০, ফরিদপুর-৪, নড়াইল-১, যশোর-২, দিনাজপুর-১, ঢাকা-৫ ও ঢাকা-১৪ আসনে নির্বাচন ঘিরে ব্যাপক কোন্দল বিরাজ করছে। এসব আসনে দু’তিনটি গ্রুপ বিদ্যমান। নেতারা কেউ কারো ছায়াও মাড়ান না। এক টেবিলে বসেন না, এমনকি কোনো কর্মসূচিও একসঙ্গে করেন না। এসব আসনে কোন্দল মিটিয়ে মনোনয়ন না দিলে প্রতিপক্ষের প্রার্থীদের বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনায় বেশি।

একইভাবে ঢাকা, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, খুলনা, পিরোজপুর, নাটোর, চট্টগ্রাম, মুন্সীগঞ্জ, কুমিল্লা, চাঁদপুরসহ বিভিন্ন জেলার প্রায় শতাধিক আসনে নৌকা ডুবানোর জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই যথেষ্ট বলে মনে করা হচ্ছে।

তবে তৃণমূলের আপাত কোন্দল নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা উদ্বিগ্ন নন বলে মুখে বলছেন। তাদের ভাষ্যে, আওয়ামী লীগের সত্যিকারের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও নৌকার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ। মনোনয়ন দেয়া পর্যন্ত নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকবে। কিন্তু, শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দিবেন, সবাই তার পক্ষে কাজ করবে। নৌকাকে বিজয়ী করতে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন সাংবাদিককে বলেন, ‘বাংলাদেশের বড় দলগুলোর মধ্যে প্রার্থী চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত এ ধরনের কোন্দল, গ্রুপিং-লবিং, প্রতিযোগিতা স্বাভাবিক ঘটনা। নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগেও এ প্রতিযোগিতা চলছে। তবে প্রার্থী চূড়ান্ত হলে কোনো সমস্যা থাকবে না। তখন সব নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকা মার্কার প্রার্থীকে জেতানোর জন্য কাজ করবে।’

তিনি বলেন, ‘সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে দু’এক জায়গায় ব্যতিক্রম হয় না, তা বলব না। তবে সে রকম কিছু হলে কেন্দ্র থেকে হস্তক্ষেপ করে সমাধান করা হবে। আগামী নির্বাচনে দলের বাইরে কেউ প্রার্থী হলে দলীয়ভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন জেলায় এই পদক্ষেপ দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।’

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিককে বলেন, ‘আদর্শিক জায়গা ঠিক থাকলে এ ধরনের প্রতিযোগিতা বড় ধরনের সংকট নয়। যেখানে গণতন্ত্র আছে, রাজনীতির চর্চা আছে, সেখানে নেতার বিকাশ ঘটবেই। যার প্রতিফলন প্রার্থীর ব্যাপপকতা। আমরা এটিকে ইতিবাচকভাবেই নিচ্ছি।’

আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর সাংবাদিককে বলেন, ‘দলে কিছুটা কলহ ও নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকাটা স্বাভাবিক। তবে আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মীরা বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও নৌকার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ। শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত দিলে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে সেটা বাস্তবায়নে কাজ করবে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শতাধিক আসনে নৌকা ডুবাতে আওয়ামী লীগই যথেষ্ট

আপডেট টাইম : ০১:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ তৃণমূলই আওয়ামী লীগের প্রাণ। সব সময় তাদের মতকে প্রাধান্য দেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় সংসদ থেকে ইউনিয়ন—সব পর্যায়ের নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে তিনি তৃণমূলের পছন্দ-অপছন্দকে গুরুত্ব দেন। তারপরও তৃণমূলে ক্ষোভ, দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিত্য হচ্ছে। দল সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, টানা ১০ বছর ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় এমপি ও নেতাদের অবহেলায় আওয়ামী লীগের তৃণমূলে বেহালদশা বিরাজ করছে। নিজের মনোনয়ন বা নেতা হওয়ার পথ প্রশস্ত করতে একাধিক গ্রুপিং, দলের বাইরে নতুন বলয় তৈরি করার মতো বিষয় এখন দলটির জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সারাদেশে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা নাজুক। কেন্দ্র থেকে ওয়ার্ড পর্যন্ত কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। কেউ কাউকে মানতে চান না। ফলে কোনো সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরও তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না।

জনপ্রতিনিধি হওয়ার আগ্রহ, পদ আঁকড়ে ধরার প্রবণতা এবং নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না করায় তৃণমূলে এ অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নিরসন করে দ্রুত সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব না হলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃণমূলই আওয়ামী লীগের কাল হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন নেতারা।

সারাদেশের বিভিন্ন জেলা ও আসনভিত্তিক আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থার খবর নিতে গিয়ে জানা গেছে, বেশিরভাগ জেলার সাংগঠনিক অবস্থা খুবই দুর্বল। আসনগুলোর অবস্থাও বেশ নাজুক। প্রতিটি আসনে ৪ থেকে ৫ জন করে সম্ভাব্য প্রার্থী তৎপর রয়েছেন। তারা পরস্পরের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো থেকে শুরু করে বিরোধিতার জন্য হেন কাজ নেই যা করছেন না। এসব কারণে নানা জায়গায় বিভিন্ন প্রার্থীর কর্মীদের মাঝে খুনোখুনি, প্রকাশ্য হামলা-মারামারিসহ নানা সংঘাত হচ্ছে। এমনকি এলাকার রাজনৈতিক অভিভাবক এমপি বা নেতাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার মতো ঘটনাও ঘটছে।

এসব সমস্যা সমাধানে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার তাগিদ দিলেও কাজ হচ্ছে না। সর্বশেষ গত ৬ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় তিনি এ নিয়ে ক্ষোভের সঙ্গে হুঁশিয়ারিও উচ্চারণ করেছেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কেন্দ্রীয়সহ ২৪ নেতাকে শোকজ করে আওয়ামী লীগ।

এরপরও থেমে নেই দ্বন্দ্ব-সংঘাত। গত কার্যনির্বাহী সভার আগের দিন দিনাজপুরের বীরগঞ্জ-কাহারোল আসনের এমপি মনোরঞ্জন শীলকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ।

এর দু’দিন আগে ৪ সেপ্টেম্বর বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন করে স্থানীয় এমপি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।

গত ২৮ আগস্ট রাজশাহীর দুর্গাপুরে শোক দিবসের এক আলোচনায় সংসদ সদস্য আবদুল ওয়াদুদকে প্রতিহত করার ঘোষণা দেন নিজ দলের নেতাকর্মীরা। গত মে মাসে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীকে মনোনয়ন না দেয়ার সুপারিশ করে শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগ।

এছাড়া নালিতাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা এবং দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী আসনের এমপি এ কে এম ফজলুল হকসহ পাঁচজনকে জেলা কমিটি থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়।

গেল বছরের অক্টোবরে নাটোরের গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম আসনের এমপি আবদুল কুদ্দুসকে বয়কট করার ঘোষণা দেন দলের একাংশ। ওই বছর জুলাইয়ে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সাতক্ষীরা থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ডা. আ ফ ম রুহুল হককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে জেলার দেবহাটা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ।

সম্প্রতি খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুমিল্লা-৮, চাঁদপুর-১, নোয়াখালী-৬, নেত্রকোনা-৫, ময়মনসিংহ-১০, ফরিদপুর-৪, নড়াইল-১, যশোর-২, দিনাজপুর-১, ঢাকা-৫ ও ঢাকা-১৪ আসনে নির্বাচন ঘিরে ব্যাপক কোন্দল বিরাজ করছে। এসব আসনে দু’তিনটি গ্রুপ বিদ্যমান। নেতারা কেউ কারো ছায়াও মাড়ান না। এক টেবিলে বসেন না, এমনকি কোনো কর্মসূচিও একসঙ্গে করেন না। এসব আসনে কোন্দল মিটিয়ে মনোনয়ন না দিলে প্রতিপক্ষের প্রার্থীদের বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনায় বেশি।

একইভাবে ঢাকা, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, খুলনা, পিরোজপুর, নাটোর, চট্টগ্রাম, মুন্সীগঞ্জ, কুমিল্লা, চাঁদপুরসহ বিভিন্ন জেলার প্রায় শতাধিক আসনে নৌকা ডুবানোর জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই যথেষ্ট বলে মনে করা হচ্ছে।

তবে তৃণমূলের আপাত কোন্দল নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা উদ্বিগ্ন নন বলে মুখে বলছেন। তাদের ভাষ্যে, আওয়ামী লীগের সত্যিকারের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও নৌকার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ। মনোনয়ন দেয়া পর্যন্ত নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকবে। কিন্তু, শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দিবেন, সবাই তার পক্ষে কাজ করবে। নৌকাকে বিজয়ী করতে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন সাংবাদিককে বলেন, ‘বাংলাদেশের বড় দলগুলোর মধ্যে প্রার্থী চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত এ ধরনের কোন্দল, গ্রুপিং-লবিং, প্রতিযোগিতা স্বাভাবিক ঘটনা। নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগেও এ প্রতিযোগিতা চলছে। তবে প্রার্থী চূড়ান্ত হলে কোনো সমস্যা থাকবে না। তখন সব নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকা মার্কার প্রার্থীকে জেতানোর জন্য কাজ করবে।’

তিনি বলেন, ‘সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে দু’এক জায়গায় ব্যতিক্রম হয় না, তা বলব না। তবে সে রকম কিছু হলে কেন্দ্র থেকে হস্তক্ষেপ করে সমাধান করা হবে। আগামী নির্বাচনে দলের বাইরে কেউ প্রার্থী হলে দলীয়ভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন জেলায় এই পদক্ষেপ দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।’

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিককে বলেন, ‘আদর্শিক জায়গা ঠিক থাকলে এ ধরনের প্রতিযোগিতা বড় ধরনের সংকট নয়। যেখানে গণতন্ত্র আছে, রাজনীতির চর্চা আছে, সেখানে নেতার বিকাশ ঘটবেই। যার প্রতিফলন প্রার্থীর ব্যাপপকতা। আমরা এটিকে ইতিবাচকভাবেই নিচ্ছি।’

আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর সাংবাদিককে বলেন, ‘দলে কিছুটা কলহ ও নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকাটা স্বাভাবিক। তবে আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মীরা বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও নৌকার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ। শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত দিলে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে সেটা বাস্তবায়নে কাজ করবে।