বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের নিরাপত্তা জোরদার করা হচ্ছে। জাতীয় নির্বাচনের কার্যক্রম চলাকালে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনকালীন যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বদা প্রস্তুত থাকেন—এ ধরনের দক্ষ ও চৌকস আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য চাওয়া হয়েছে। ইসির নিরাপত্তা শাখা থেকে সম্প্রতি পুলিশ ও আনসার সদর দফতরে এ চিঠি পাঠানো হয়। চাহিদাপত্রে ছয়জন পুলিশ সদস্য এবং ১০ জন আনসার সদস্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ইসি সচিবালয়ে বর্তমান কর্মরত পুলিশ ও আনসার সদস্যকে প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন সচিব মো. হেলালুদ্দীন আহমেদ বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন। এ নির্বাচন উপলক্ষে কিছু দক্ষ-চৌকস পুলিশ ও আনসার সদস্য চাওয়া হয়েছে। কারণ, এখন যারা ইসি সচিবালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন তারা অনেক দিন থাকার কারণে কিছু কাজে শৈথিলতা চলে এসেছে। একইসঙ্গে নির্বাচন চলাকালে রাত-দিন কাজ চলবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীসহ নানা ধরনের মানুষের সমাগম ঘটবে এ অফিসে। এসব সার্বিক বিবেচনায় দক্ষ ও চৌকস পুলিশ ও আনসার সদস্য চাওয়া হয়েছে। আশা করছি, সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ কার্যক্রম পরিচালনায় কমিশনের চাহিদানুযায়ী সংশ্লিষ্ট দফতরগুলো ইসিকে সহযোগিতা করবে।
ইসির কর্মকর্তারা বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে আগেই। এখন চলছে সুষ্ঠু ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠানে সার্বিক প্রস্তুতির কাজ। এরই মধ্যে নির্বাচনে ব্যবহার উপযোগী নির্বাচনী সামগ্রীর নমুনা সংগ্রহ সাপেক্ষে পরীক্ষার কাজও শেষ করেছে ইসি। বিএসটিআইয়ের ল্যাবে তা পরীক্ষা করানো হয়েছে। পরীক্ষা সামগ্রীর মধ্যে লাল গালা, অমোচনীয় কালির কলম, মাকিং ও ব্রস সিলসহ অন্যান্য সামগ্রী রয়েছে। এছাড়া গত ১৩ সেপ্টেম্বর নির্বাচনী সামগ্রী ক্রয়ে দরপত্র কার্যক্রম শেষ হয়েছে।
আর গতকাল মঙ্গলবার একনেকে আলোচিত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ক্রয়ের অনুমোদন মিলেছে। জাতীয় সংসদসহ বিভিন্ন নির্বাচনে ব্যবহারের জন্য দেড় লাখ ইভিএমের পেছনে ব্যয় হবে ৩ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা। এই প্রকল্পটি পাস হওয়ার মাধ্যমে ইসির কর্মযজ্ঞও বেড়েছে বহুগুণ। কারণ, নির্বাচনে এই প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হলে দক্ষ জনবল লাগবে, জাতীয় নির্বাচনের অন্যান্য কর্মযজ্ঞের সঙ্গে এটির প্রতি বেশি নজর দিতে হবে কমিশনকে।
নির্বাচনের এই কর্মযজ্ঞের মধ্যে সচিবালয়ের নিরাপত্তা জোরদারও গুরুত্ব পেয়েছে সাংবিধানিক সংস্থা ইসির কাছে। কারণ সরকার পরিবর্তনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। এ নির্বাচনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার সম্পৃক্ত। বিভিন্ন দাতা সংস্থাসহ উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোর নজর থাকে এ নির্বাচনের প্রতি। ইসিতে এসে নির্বাচনের খোঁজ-খবরও নেন। এসব ভিআইপিদের নিরাপত্তার কথাও ভাবতে হয় ইসিকে। এ লক্ষ্যে গত সোমবার সচিবালয়ের নিরাপত্তায় দক্ষ ও চৌকস আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য চেয়ে পুলিশ সদর দফতর ও আনসার দফতরে চিঠি দিয়েছে। চিঠিতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, আগামী ৩১ অক্টোবর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ক্ষণগণনা শুরু হচ্ছে। পরবর্তী বছরের ২৮ জানুয়ারি সময়ের মধ্যে এ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ করতে হবে। নির্বাচন কমিশন ২৫-২৭ ডিসেম্বর এ সময়ের মধ্যে ভোটগ্রহণ আয়োজন করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ উপলক্ষে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের পর যেকোনো দিন তফশিল ঘোষণা করবে সাংবিধানিক সংস্থাটি।