ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪, ১০ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নতুন করে দস্যুর কবলে না পড়তে কঠোর নিরাপত্তাবলয়ে এমভি আবদুল্লাহ

নতুন করে যাতে আবার দস্যুর কবলে না পড়ে সেজন্য এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কঠোর করা হয়েছে। জাহাজে রয়েছে গার্ড। চারপাশে লাগানো হয়েছে তারকাটা বেড়া। জলকামানের আদলে তৈরি করা হয়েছে নিরাপত্তাব্যুহ। যাতে দস্যুরা জাহাজে উঠতে না পারে। এ ছাড়া এই জাহাজকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দুটি জাহাজ পাহারা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হারামাইন বন্দরে।

জাহাজটি মঙ্গলবার সকালেও এডেন মহাসাগরে দস্যুপ্রবণ এলাকা পাড়ি দিচ্ছিল। মধ্যরাতে এটি আরব সাগরে পৌঁছার কথা। যেহেতু জাহাজটি ধীরে চলছে, তাই সেটি দুবাইয়ের আল হারামাইন বন্দরে পৌঁছতে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত সময় লাগতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

এদিকে জাহাজের মুক্ত নাবিকরা তাদের পরিবারের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলে সময় কাটাচ্ছেন। আর পরিবারের সদস্যরাও অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন নাবিকদের ফিরে আসার জন্য। আনোয়ারার বাসিন্দা অয়েলার শামসুদ্দিন শিমুলকে তার স্বজনের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলতে দেখা গেছে। জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হওয়া নাবিকদের পরিবারে বইছে আনন্দের বন্যা।

এসআর শিপিংয়ের সিইও মেহেরুল করিম বলেন, তাদের জাহাজটি দস্যুর কবল থেকে মুক্ত হওয়ার পর ‘আক্রান্ত স্থান’ থেকে কয়েকবার গতি পরিবর্তন করেছে। এটি মঙ্গলবার দুপুরে এডেন মহাসাগর অতিক্রম করছিল। ওই এলাকাটা উচ্চ ঝুঁকিপ্রবণ এলাকা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দুুটি জাহাজ এই জাহাজকে পাহারা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এই দুই জাহাজের গতির সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে কিছুটা ধীরগতিতে চলতে হচ্ছে এমভি আবদুল্লাহকে। আরও ৬৫ থেকে ৭০ নটিক্যাল মাইল চলার পর তাদের জাহাজটি আরব সাগরের নিরাপদ এলাকায় পৌঁছবে বলে জানান তিনি।

জাহাজটিতে ৩১ দিন ধরে থেকে অনেকটা নোংরা করে ফেলেছে দস্যুরা। যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলে জাহাজের অবস্থা এমন করেছে যে জাহাজের ভেতরের চেহারাই পাল্টে গেছে। এমভি আবদুল্লাহর নাবিকরা সেই জাহাজ চলন্ত অবস্থায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেন বলে জানায় সূত্র।

জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হওয়া নাবিক শামসুদ্দিনের স্বজন বদরুল হক যুগান্তরকে বলেন, ‘প্রতিদিনই শামসুদ্দিনের সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের কখনো ভিডিও কলে, কখনো ফোন কলে কথা হচ্ছে। ওরা বেশ খুশিতে আছে। তার ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন সবাই।’

উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ দুপুরে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি জিম্মি করে সোমালিয়ান দস্যুরা। সেখানে থাকা ২৩ নাবিককে একটি কেবিনে আটকে রাখা হয়। আটকের পর জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়। ৫৮ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে গত ৪ মার্চ আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে এমভি আবদুল্লাহ। ১৯ মার্চ সেটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হারামাইন বন্দরে পৌঁছার কথা রয়েছে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

নতুন করে দস্যুর কবলে না পড়তে কঠোর নিরাপত্তাবলয়ে এমভি আবদুল্লাহ

আপডেট টাইম : ০২:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪

নতুন করে যাতে আবার দস্যুর কবলে না পড়ে সেজন্য এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কঠোর করা হয়েছে। জাহাজে রয়েছে গার্ড। চারপাশে লাগানো হয়েছে তারকাটা বেড়া। জলকামানের আদলে তৈরি করা হয়েছে নিরাপত্তাব্যুহ। যাতে দস্যুরা জাহাজে উঠতে না পারে। এ ছাড়া এই জাহাজকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দুটি জাহাজ পাহারা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হারামাইন বন্দরে।

জাহাজটি মঙ্গলবার সকালেও এডেন মহাসাগরে দস্যুপ্রবণ এলাকা পাড়ি দিচ্ছিল। মধ্যরাতে এটি আরব সাগরে পৌঁছার কথা। যেহেতু জাহাজটি ধীরে চলছে, তাই সেটি দুবাইয়ের আল হারামাইন বন্দরে পৌঁছতে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত সময় লাগতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

এদিকে জাহাজের মুক্ত নাবিকরা তাদের পরিবারের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলে সময় কাটাচ্ছেন। আর পরিবারের সদস্যরাও অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন নাবিকদের ফিরে আসার জন্য। আনোয়ারার বাসিন্দা অয়েলার শামসুদ্দিন শিমুলকে তার স্বজনের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলতে দেখা গেছে। জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হওয়া নাবিকদের পরিবারে বইছে আনন্দের বন্যা।

এসআর শিপিংয়ের সিইও মেহেরুল করিম বলেন, তাদের জাহাজটি দস্যুর কবল থেকে মুক্ত হওয়ার পর ‘আক্রান্ত স্থান’ থেকে কয়েকবার গতি পরিবর্তন করেছে। এটি মঙ্গলবার দুপুরে এডেন মহাসাগর অতিক্রম করছিল। ওই এলাকাটা উচ্চ ঝুঁকিপ্রবণ এলাকা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দুুটি জাহাজ এই জাহাজকে পাহারা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এই দুই জাহাজের গতির সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে কিছুটা ধীরগতিতে চলতে হচ্ছে এমভি আবদুল্লাহকে। আরও ৬৫ থেকে ৭০ নটিক্যাল মাইল চলার পর তাদের জাহাজটি আরব সাগরের নিরাপদ এলাকায় পৌঁছবে বলে জানান তিনি।

জাহাজটিতে ৩১ দিন ধরে থেকে অনেকটা নোংরা করে ফেলেছে দস্যুরা। যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলে জাহাজের অবস্থা এমন করেছে যে জাহাজের ভেতরের চেহারাই পাল্টে গেছে। এমভি আবদুল্লাহর নাবিকরা সেই জাহাজ চলন্ত অবস্থায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেন বলে জানায় সূত্র।

জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হওয়া নাবিক শামসুদ্দিনের স্বজন বদরুল হক যুগান্তরকে বলেন, ‘প্রতিদিনই শামসুদ্দিনের সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের কখনো ভিডিও কলে, কখনো ফোন কলে কথা হচ্ছে। ওরা বেশ খুশিতে আছে। তার ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন সবাই।’

উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ দুপুরে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি জিম্মি করে সোমালিয়ান দস্যুরা। সেখানে থাকা ২৩ নাবিককে একটি কেবিনে আটকে রাখা হয়। আটকের পর জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়। ৫৮ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে গত ৪ মার্চ আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে এমভি আবদুল্লাহ। ১৯ মার্চ সেটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হারামাইন বন্দরে পৌঁছার কথা রয়েছে।