ঢাকা , শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ: সিটি কর্পোরেশনের কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ গত বছরের চেয়ে বেশি হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন প্রায় ২৫০ জন।

জানুয়ারিতে এ সংখ্যা ছিল ১৯৯, অথচ গত বছরের জানুয়ারিতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন মাত্র ৩৮ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৮ এবং মার্চে ১৭ জন। বর্তমানে বিগত বছরের এ সময়ের তুলনায় রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ২ দশমিক ৭ গুণ। এ থেকেই আশঙ্কা হয়, কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা না নেয়া হলে এ বছর ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপ আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে। এটি সবার জন্যই একটি সতর্কবার্তা।

গত বছরের ডেঙ্গু পরিস্থিতি আমাদের সবার জানা। গত বছর ডেঙ্গু সন্দেহে ২৭৬ জনের মৃত্যুর তথ্য এসেছিল সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর)। বিশেষজ্ঞ পর্যালোচনায় এর মধ্যে ১৭৯ জনের ডেঙ্গুজনিত মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।

গত বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধির জন্য এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের ব্যর্থতাকে দায়ী করা হয়ে থাকে। বছরব্যাপী মশক নিধন কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ রূপ নিত না। মশক নিধনের জন্য যে ওষুধ আমদানি করা হয়েছিল, সেগুলোও অকার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছিল।

ডেঙ্গু নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন উচ্চ আদালতও। উদ্বেগের বিষয় হল, সে সময় ডেঙ্গুর প্রকোপ চলাকালীন এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে বলা হলেও এরপর দুই সিটির মশক নিয়ন্ত্রণে যেসব কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়, তা ছিল কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম।

এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে দুই সিটির তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। চলতি বছর এডিস মশা তথা ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধির আশঙ্কা বেড়েছে এ কারণেই। বৃষ্টির পানি জমতে শুরু হলেই ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে। গত বছর ডেঙ্গুবাহিত এডিস মশা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এই মশা যেখানেই গেছে সেখানেই ডিম পেড়েছে।

প্রতিকূল পরিবেশে এসব ডিম সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে দীর্ঘদিন। যখনই বৃষ্টির পানি জমতে শুরু করবে, তখনই ওই ডিম থেকে বেরিয়ে আসবে মশা। এ পরিস্থিতি এড়াতে এখনই সারা দেশের সম্ভাব্য ডেঙ্গুর প্রজনন ক্ষেত্রগুলো ধ্বংস করা দরকার। এ ব্যাপারে দুই সিটি কর্পোরেশনকে জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

নবনির্বাচিত দুই সিটির মেয়র তাদের নির্বাচনী প্রচারণায় মশক নিধনের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন। তাদের সেই নির্বাচনী ইশতেহারের যথাযথ বাস্তবায়ন দেখতে চাই আমরা।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ: সিটি কর্পোরেশনের কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি

আপডেট টাইম : ০৫:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৪ মার্চ ২০২০

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ গত বছরের চেয়ে বেশি হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন প্রায় ২৫০ জন।

জানুয়ারিতে এ সংখ্যা ছিল ১৯৯, অথচ গত বছরের জানুয়ারিতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন মাত্র ৩৮ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৮ এবং মার্চে ১৭ জন। বর্তমানে বিগত বছরের এ সময়ের তুলনায় রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ২ দশমিক ৭ গুণ। এ থেকেই আশঙ্কা হয়, কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা না নেয়া হলে এ বছর ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপ আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে। এটি সবার জন্যই একটি সতর্কবার্তা।

গত বছরের ডেঙ্গু পরিস্থিতি আমাদের সবার জানা। গত বছর ডেঙ্গু সন্দেহে ২৭৬ জনের মৃত্যুর তথ্য এসেছিল সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর)। বিশেষজ্ঞ পর্যালোচনায় এর মধ্যে ১৭৯ জনের ডেঙ্গুজনিত মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।

গত বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধির জন্য এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের ব্যর্থতাকে দায়ী করা হয়ে থাকে। বছরব্যাপী মশক নিধন কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ রূপ নিত না। মশক নিধনের জন্য যে ওষুধ আমদানি করা হয়েছিল, সেগুলোও অকার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছিল।

ডেঙ্গু নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন উচ্চ আদালতও। উদ্বেগের বিষয় হল, সে সময় ডেঙ্গুর প্রকোপ চলাকালীন এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে বলা হলেও এরপর দুই সিটির মশক নিয়ন্ত্রণে যেসব কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়, তা ছিল কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম।

এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে দুই সিটির তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। চলতি বছর এডিস মশা তথা ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধির আশঙ্কা বেড়েছে এ কারণেই। বৃষ্টির পানি জমতে শুরু হলেই ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে। গত বছর ডেঙ্গুবাহিত এডিস মশা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এই মশা যেখানেই গেছে সেখানেই ডিম পেড়েছে।

প্রতিকূল পরিবেশে এসব ডিম সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে দীর্ঘদিন। যখনই বৃষ্টির পানি জমতে শুরু করবে, তখনই ওই ডিম থেকে বেরিয়ে আসবে মশা। এ পরিস্থিতি এড়াতে এখনই সারা দেশের সম্ভাব্য ডেঙ্গুর প্রজনন ক্ষেত্রগুলো ধ্বংস করা দরকার। এ ব্যাপারে দুই সিটি কর্পোরেশনকে জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

নবনির্বাচিত দুই সিটির মেয়র তাদের নির্বাচনী প্রচারণায় মশক নিধনের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন। তাদের সেই নির্বাচনী ইশতেহারের যথাযথ বাস্তবায়ন দেখতে চাই আমরা।