ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনায় বেকারদের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা প্রায় ২৬ লাখ। যদিও আইএলও’র মতে দেশে কর্মক্ষম প্রায় ৪ কোটি ৮২ লাখ মানুষ কর্মবিহীন। সম্প্রতি সংবাদপত্রে প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা সাত বছরে দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের মতে, বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য আগামীতে ১৫টি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে, যার অন্যতম বেকারত্ব

বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে চাকরির জন্য লড়াই করতে হয় এদেশের লাখো তরুণকে। সামাজিক মর্যাদার কথা চিন্তা করে অনেক শিক্ষিত গ্র্যাজুয়েটকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে হয়। এর মধ্যে প্রতি বছর বিসিএসের জন্য অপেক্ষায় থাকে হাজারও তরুণ মেধাবী। এছাড়াও অন্যান্য চাকরির জন্য প্রস্তুতি নেয় হাজারও পরীক্ষার্থী। বেকার অবস্থায় সামাজিকভাবে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার শিকার হতে হয় তাদের অনেককে। পরিবার, আত্মীয়-স্বজনদের থেকেও বিভিন্ন ধরনের কথা শুনতে হয়। সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, বেকারত্ব সমাজে অস্থিরতা বৃদ্ধি করে। বেকারত্বের হতাশায় ডুবে আত্মহত্যার মতো ঘটনাও এদেশে নতুন নয়। বেকারত্বের অভিশাপে অনেকেই নিজেকে সমাজ ও পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার চেষ্টা করে। অনেকে জড়িয়ে পড়ে অন্ধকার জগতে।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে এ বছর মে মাসের মধ্যে ৪১তম বিসিএস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল; কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে তা সম্ভব হয়নি। কবে অনুষ্ঠিত হবে তা এখনও নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। এছাড়াও ব্যাংকে চাকরির বেশকিছু পরীক্ষা হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। অন্যান্য চাকরির পরীক্ষাও আটকে গেছে করোনা পরিস্থিতির কারণে। এসব পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অপেক্ষায় থাকা মেধাবী তরুণরা হতাশায় দিন পার করছে। এদের মধ্যে অনেকেই আছেন যাদের চাকরিতে প্রবেশের বয়স শেষের দিকে। করোনা যেন তাদের জন্য মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। অনেকে দীর্ঘদিন ধরে চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা চরম হতাশার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। বিসিএস, ব্যাংক ও অন্যান্য নিয়োগ পরীক্ষায় যতসংখ্যক শূন্যপদ থাকে সেই তুলনায় প্রস্তুতি নেয়া মেধাবীর সংখ্যা অনেক বেশি। এ বাস্তবতায় করোনার জন্য আটকে যাওয়া চাকরির পরীক্ষাগুলো এখন তাদের জন্য গলার কাঁটার মতো।

তবে আশার কথা হল, বেকারদের কথা চিন্তা করে ‘লস টাইম’ দেয়ার কথা উঠেছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী বেকারদের কথা মাথায় রেখে নভেম্বরের পর সব পরীক্ষা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়াও ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের ঝুলে থাকা চূড়ান্ত ফলাফলগুলো প্রকাশ করছে। এতে করে আশার সঞ্চার হচ্ছে বেকারদের মধ্যে। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে ৩৮তম বিসিএসের ফলাফল।

পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে জীবনযুদ্ধে লেগে থাকা এসব মেধাবী যেন করোনার দিনগুলোতে অসহায় সময় পার করছেন। তাদের চোখেমুখে হাজারও অনিশ্চয়তা, মনে নানা প্রশ্ন। পৃথিবী থেকে বিদায় নিক করোনাভাইরাস। পরীক্ষার্থীরা আবারও তাদের পড়ালেখা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করুক।

পরিশ্রম করে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জন করুক অপেক্ষারত তরুণরা, এই আমাদের প্রার্থনা।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

করোনায় বেকারদের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ

আপডেট টাইম : ০৫:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ জুলাই ২০২০

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা প্রায় ২৬ লাখ। যদিও আইএলও’র মতে দেশে কর্মক্ষম প্রায় ৪ কোটি ৮২ লাখ মানুষ কর্মবিহীন। সম্প্রতি সংবাদপত্রে প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা সাত বছরে দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের মতে, বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য আগামীতে ১৫টি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে, যার অন্যতম বেকারত্ব

বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে চাকরির জন্য লড়াই করতে হয় এদেশের লাখো তরুণকে। সামাজিক মর্যাদার কথা চিন্তা করে অনেক শিক্ষিত গ্র্যাজুয়েটকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে হয়। এর মধ্যে প্রতি বছর বিসিএসের জন্য অপেক্ষায় থাকে হাজারও তরুণ মেধাবী। এছাড়াও অন্যান্য চাকরির জন্য প্রস্তুতি নেয় হাজারও পরীক্ষার্থী। বেকার অবস্থায় সামাজিকভাবে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার শিকার হতে হয় তাদের অনেককে। পরিবার, আত্মীয়-স্বজনদের থেকেও বিভিন্ন ধরনের কথা শুনতে হয়। সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, বেকারত্ব সমাজে অস্থিরতা বৃদ্ধি করে। বেকারত্বের হতাশায় ডুবে আত্মহত্যার মতো ঘটনাও এদেশে নতুন নয়। বেকারত্বের অভিশাপে অনেকেই নিজেকে সমাজ ও পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার চেষ্টা করে। অনেকে জড়িয়ে পড়ে অন্ধকার জগতে।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে এ বছর মে মাসের মধ্যে ৪১তম বিসিএস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল; কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে তা সম্ভব হয়নি। কবে অনুষ্ঠিত হবে তা এখনও নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। এছাড়াও ব্যাংকে চাকরির বেশকিছু পরীক্ষা হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। অন্যান্য চাকরির পরীক্ষাও আটকে গেছে করোনা পরিস্থিতির কারণে। এসব পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অপেক্ষায় থাকা মেধাবী তরুণরা হতাশায় দিন পার করছে। এদের মধ্যে অনেকেই আছেন যাদের চাকরিতে প্রবেশের বয়স শেষের দিকে। করোনা যেন তাদের জন্য মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। অনেকে দীর্ঘদিন ধরে চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা চরম হতাশার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। বিসিএস, ব্যাংক ও অন্যান্য নিয়োগ পরীক্ষায় যতসংখ্যক শূন্যপদ থাকে সেই তুলনায় প্রস্তুতি নেয়া মেধাবীর সংখ্যা অনেক বেশি। এ বাস্তবতায় করোনার জন্য আটকে যাওয়া চাকরির পরীক্ষাগুলো এখন তাদের জন্য গলার কাঁটার মতো।

তবে আশার কথা হল, বেকারদের কথা চিন্তা করে ‘লস টাইম’ দেয়ার কথা উঠেছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী বেকারদের কথা মাথায় রেখে নভেম্বরের পর সব পরীক্ষা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়াও ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের ঝুলে থাকা চূড়ান্ত ফলাফলগুলো প্রকাশ করছে। এতে করে আশার সঞ্চার হচ্ছে বেকারদের মধ্যে। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে ৩৮তম বিসিএসের ফলাফল।

পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে জীবনযুদ্ধে লেগে থাকা এসব মেধাবী যেন করোনার দিনগুলোতে অসহায় সময় পার করছেন। তাদের চোখেমুখে হাজারও অনিশ্চয়তা, মনে নানা প্রশ্ন। পৃথিবী থেকে বিদায় নিক করোনাভাইরাস। পরীক্ষার্থীরা আবারও তাদের পড়ালেখা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করুক।

পরিশ্রম করে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জন করুক অপেক্ষারত তরুণরা, এই আমাদের প্রার্থনা।