ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিশ্চিন্দিপুর থেকে টুঙ্গিপাড়া

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ ধূলি-ধূসরিত গ্রামের ছোট ছোট আনন্দ-বেদনার যে জীবন; যে জীবন ঘাস-লতা-পাতা-শ্যাওলার সূর্য ছায়ায় অনন্তকাল চলমান, সেই দুঃখ দহনের পথের পাঁচালীকেই আজন্ম ভালোবেসেছেন শেখ হাসিনা। এ পথের হয়তো কোনো শেষ নেই। তবু তিনি আশৈশব বুকের মধ্যে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পথের পাঁচালী’কে এমনভাবে আগলে রেখেছেন যেন সারা দুনিয়ার ঝা-চকচকে শহর তাকে আজও এতটুকু মোহমুগ্ধ করেনি। এজন্য শেখ হাসিনা কেবল গ্রামে ফিরতে চান। জন্মগ্রাম গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যেতে চান। হারানো মা, বাবা, ভাই ও স্নেহের ছোটভাই রাসেলকে ওই নীলাকাশ আর আলো-বাতাসে খুঁজে পেতে চান। এ অনুভূতির পেছনে রয়েছে তার আরেক নিশ্চিন্দিপুর গ্রামের অনিকেত জীবনলীলা।

তিনি চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশের সফল প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে এক অভূতপূর্ব উন্নয়নের যুগস্রষ্টা হয়েও শেখ হাসিনার অন্তরে একটা অবিনাশী গ্রাম যেন তাকে নিরন্তর ডাকে। তার বয়স এখন ৭৩ বছর। তবুও গ্রামের ধূলিকণামাখা জীবনকে শত ব্যস্ততার ভিড়ে কখনই তিনি ভুলে যাননি।

বিভূতিভূষণের পথের পাঁচালীর নিশ্চিন্দিপুর। সে গ্রামের হরিহর, সর্বজয়া, ইন্দির ঠাকুরণ, প্রকৃতির সন্তান অপু-দুর্গা, তাদের জোড়াতালি দেয়া বিষণ্ন না-পাওয়ার সংসার, দুই ভাই-বোনের চোখের জলে ধোয়া রূপকথার জগৎ, মাঠভরা কাঁশফুল, জলে-জঙ্গলে বনলক্ষ্মীর কৃপা। বনছায়ার মধ্যে কিশোরী দুর্গা গান গায় :

হলুদ বনে বনে,

নাক ছবিটি হারিয়ে গেছে,

সুখ নেইকো মনে।

সংসারে চাওয়া-পাওয়ার উর্ধ্বে থাকা প্রকৃতি দুহিতা দুর্গার সেই অনিন্দ্য সুন্দর মাধুর্য আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এখনও বিমোহিত করে রেখেছে। গর্বিত পিতামাতার কাছে শৈশব-কৈশোরে গল্প-উপন্যাসের কাহিনী শুনে শুনে, ভাই-বোনের স্নেহ-মমতার আকর্ষণে, ব্যাপক পড়াশোনায় তিনি কালক্রমে বাংলা সাহিত্যের একজন সংবেদনশীল বিদগ্ধ পাঠক হয়ে ওঠেন। শেখ হাসিনা গভীরভাবে আত্মস্থ করেন রবীন্দ নাথ, নজরুল, শরৎচন্দ , বিভূতিভূষণ, জীবনানন্দ, জসিমউদ্দিনসহ অমর কবি-সাহিত্যিকদের লেখা। আবার ব্যস্ত রাজনৈতিক জীবনে সময় বের করে নিজেও মাঝেমাঝে তার নানা অভিজ্ঞতার কথা লিখছেন।

জাতির পিতার মতোই শেখ হাসিনা চিরকালের বাঙালির মঙ্গলালোকের প্রসন্ন মানুষ, মানবতাবাদী। রাজনৈতিক জীবনে তিনি বাংলার মানুষের ভোট ও ভাতের নিশ্চয়তা দানকারী। বাংলাদেশের উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে তিনি বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী ও জাতির পিতাসহ পরিবারের সদস্যদের খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও বিচার নিশ্চিত করে বাঙালি জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন। একজন নিরহংকার খোদাভক্ত মানুষ, যিনি পিতা-মাতা, ভাই ও স্বজনহারানোর বেদনার জগদ্দল পাথর বুকে নিয়ে বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে অবিরাম সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তার শুভ জন্মদিনে তাকে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

নিশ্চিন্দিপুর থেকে টুঙ্গিপাড়া

আপডেট টাইম : ০৩:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ ধূলি-ধূসরিত গ্রামের ছোট ছোট আনন্দ-বেদনার যে জীবন; যে জীবন ঘাস-লতা-পাতা-শ্যাওলার সূর্য ছায়ায় অনন্তকাল চলমান, সেই দুঃখ দহনের পথের পাঁচালীকেই আজন্ম ভালোবেসেছেন শেখ হাসিনা। এ পথের হয়তো কোনো শেষ নেই। তবু তিনি আশৈশব বুকের মধ্যে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পথের পাঁচালী’কে এমনভাবে আগলে রেখেছেন যেন সারা দুনিয়ার ঝা-চকচকে শহর তাকে আজও এতটুকু মোহমুগ্ধ করেনি। এজন্য শেখ হাসিনা কেবল গ্রামে ফিরতে চান। জন্মগ্রাম গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যেতে চান। হারানো মা, বাবা, ভাই ও স্নেহের ছোটভাই রাসেলকে ওই নীলাকাশ আর আলো-বাতাসে খুঁজে পেতে চান। এ অনুভূতির পেছনে রয়েছে তার আরেক নিশ্চিন্দিপুর গ্রামের অনিকেত জীবনলীলা।

তিনি চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশের সফল প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে এক অভূতপূর্ব উন্নয়নের যুগস্রষ্টা হয়েও শেখ হাসিনার অন্তরে একটা অবিনাশী গ্রাম যেন তাকে নিরন্তর ডাকে। তার বয়স এখন ৭৩ বছর। তবুও গ্রামের ধূলিকণামাখা জীবনকে শত ব্যস্ততার ভিড়ে কখনই তিনি ভুলে যাননি।

বিভূতিভূষণের পথের পাঁচালীর নিশ্চিন্দিপুর। সে গ্রামের হরিহর, সর্বজয়া, ইন্দির ঠাকুরণ, প্রকৃতির সন্তান অপু-দুর্গা, তাদের জোড়াতালি দেয়া বিষণ্ন না-পাওয়ার সংসার, দুই ভাই-বোনের চোখের জলে ধোয়া রূপকথার জগৎ, মাঠভরা কাঁশফুল, জলে-জঙ্গলে বনলক্ষ্মীর কৃপা। বনছায়ার মধ্যে কিশোরী দুর্গা গান গায় :

হলুদ বনে বনে,

নাক ছবিটি হারিয়ে গেছে,

সুখ নেইকো মনে।

সংসারে চাওয়া-পাওয়ার উর্ধ্বে থাকা প্রকৃতি দুহিতা দুর্গার সেই অনিন্দ্য সুন্দর মাধুর্য আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এখনও বিমোহিত করে রেখেছে। গর্বিত পিতামাতার কাছে শৈশব-কৈশোরে গল্প-উপন্যাসের কাহিনী শুনে শুনে, ভাই-বোনের স্নেহ-মমতার আকর্ষণে, ব্যাপক পড়াশোনায় তিনি কালক্রমে বাংলা সাহিত্যের একজন সংবেদনশীল বিদগ্ধ পাঠক হয়ে ওঠেন। শেখ হাসিনা গভীরভাবে আত্মস্থ করেন রবীন্দ নাথ, নজরুল, শরৎচন্দ , বিভূতিভূষণ, জীবনানন্দ, জসিমউদ্দিনসহ অমর কবি-সাহিত্যিকদের লেখা। আবার ব্যস্ত রাজনৈতিক জীবনে সময় বের করে নিজেও মাঝেমাঝে তার নানা অভিজ্ঞতার কথা লিখছেন।

জাতির পিতার মতোই শেখ হাসিনা চিরকালের বাঙালির মঙ্গলালোকের প্রসন্ন মানুষ, মানবতাবাদী। রাজনৈতিক জীবনে তিনি বাংলার মানুষের ভোট ও ভাতের নিশ্চয়তা দানকারী। বাংলাদেশের উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে তিনি বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী ও জাতির পিতাসহ পরিবারের সদস্যদের খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও বিচার নিশ্চিত করে বাঙালি জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন। একজন নিরহংকার খোদাভক্ত মানুষ, যিনি পিতা-মাতা, ভাই ও স্বজনহারানোর বেদনার জগদ্দল পাথর বুকে নিয়ে বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে অবিরাম সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তার শুভ জন্মদিনে তাকে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।