বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ আসন্ন শীত মৌসুমে দেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় সংক্রমণ রোধে সরকারের পক্ষ থেকে সার্বিক প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এর অংশ হিসেবে আক্রান্তদের চিকিৎসায় প্রয়োজনে বন্ধ সব কোভিড হাসপাতাল ও ইউনিট চালু করা হবে।
সরকারের এ উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। উল্লেখ্য, শীতকালে দেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় সংক্রমণের আশঙ্কা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তার এ উদ্বেগ যথার্থ। আমাদের দেশে শীতকালে ফ্লুর প্রকোপ বেড়ে যায়। ফলে এ সময় মানুষের সর্দি-কাশি বেশি হয়। তাছাড়া যাদের শ্বাসকষ্ট ও অ্যাজমার সমস্যা রয়েছে, তারাও এ সময় আক্রান্ত হয়ে থাকেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেসব এনজাইম আছে, তা স্বাভাবিকের চেয়ে কম তাপমাত্রায় কম কার্যকর হয়ে পড়ে। ফলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায়। শীতে বাতাসের তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে আর্দ্রতাও কমে যায়, যা আমাদের শ্বাসনালির স্বাভাবিক কর্মপ্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করে ভাইরাসের আক্রমণ সহজ করে। কোভিড-১৯ যেহেতু ভাইরাসজনিত একটি রোগ, তাই শীতকালে এর ব্যাপক সংক্রমণ থেকে সুরক্ষার জন্য আগাম প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে বৈকি।
দেশে প্রথম করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হয় ৮ মার্চ। এরপর থেকে শনাক্তের হার ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, কার্যকর ভ্যাকসিন আবিষ্কারের আগ পর্যন্ত করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করতে স্বাস্থ্য সুবিধা বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকারি পরিকল্পনার যথাযথ বাস্তবায়ন জরুরি। আশঙ্কার বিষয় হল, দেশে নির্ধারিত কোভিড হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর হার যেমন কমেছে, তেমনি হ্রাস পেয়েছে নমুনা পরীক্ষাও।
সংশ্লিষ্টরা অবশ্য বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন। তাদের মতে, আক্রান্তদের অধিকাংশই বাড়িতে অবস্থান করছেন এবং খুব জটিলতা দেখা না দিলে তারা হাসপাতালে যাচ্ছেন না। তবে এ সত্য অস্বীকার করার উপায় নেই যে, শুরু থেকেই দেশে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা লক্ষ করা গেছে, যা সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে প্রকট হয়ে উঠেছে।
কাজেই করোনাভাইরাস সংক্রমণের ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ রোধে বন্ধ থাকা কোভিড হাসপাতাল ও ইউনিটগুলো চালুই শেষ কথা নয়; একই সঙ্গে কোভিড-১৯ চিকিৎসায় বিরাজমান সমন্বয়হীনতা কাটিয়ে ওঠার পাশাপাশি মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার ব্যাপারে বাধ্য করা জরুরি।