ঢাকা , রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আপনার মোবাইল ফোনটি বৈধ কি না, যাচাই করবেন যেভাবে

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ শুক্রবার (১ অক্টোবর) থেকে অবৈধ কোনো মোবাইল সেট চলবে না। সেটে সিম প্রবেশ করানোর সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বার্তা চলে আসবে। সেট অবৈধ হলে যে কোনো সময় বন্ধের সতর্কতা দিয়ে বার্তা আসবে। পাশাপাশি বৈধ কাগজপত্র থাকলে তা দিয়ে রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ দেবে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন বিটিআরসি। বৈধ কাগজপত্র না থাকলে বা সেটটি বৈধ না হলে সংক্রিয়ভাবে সেটি অচল হয়ে যাবে।

তবে এখন থেকে নতুন হ্যান্ডসেট নেটওয়ার্কে সচল করতে হলে অবশ্যই তার আইএমইআই নম্বরটি বিটিআরসি’র ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) ব্যবস্থায় নিবন্ধিত থাকতে হবে। শুধুমাত্র বৈধভাবে দেশে উৎপাদিত এবং বৈধ পথে আমদানি করা হ্যান্ডসেটগুলো এনআইআর ব্যবস্থায় নিবন্ধিত থাকবে। ফলে চোরই পথে আসা এবং নকল হ্যান্ডসেট আর বাংলাদেশের নেটওয়ার্কে ব্যবহার করা যাবে না। এমন পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই ব্যবহারকারীদের মনে প্রশ্ন উঠেছে, তিনি যে ফোনটি ব্যবহার করছন সেটি বৈধ নাকি অবৈধ!

খুব সহজেই এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। তারা বলছে, মোবাইল থেকে মেসেজ পাঠিয়ে গ্রাহকেরা সহজেই বৈধ বা অবৈধ মোবাইল চিহ্নিত করতে পারবেন।

হাতের সেটটি বৈধ কি-না জানবেন কীভাবে: যে কেউ চাইলে তার হাতে থাকা মোবাইল হ্যান্ডসেটের বর্তমান অবস্থা জেনে নিতে পারেন। মোবাইল হ্যান্ডসেটে *১৬১৬১# নম্বরে ডায়াল করতে হবে। স্ক্রিনে অপশন এলে Status Check সিলেক্ট করতে হবে। তখন একটি অটোমেটিক বক্স আসবে, সেখানে মোবাইল হ্যান্ডসেটের ১৫ ডিজিটের আইইএমআই নম্বরটি লিখে পাঠাতে হবে। গ্রাহকের মোবাইলে তখন হ্যাঁ/না অপশন সংবলিত একটি অটোমেটিক বক্স আসবে। তাতে হ্যাঁ Select করে নিশ্চিত করতে হবে। ফিরতি মেসেজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের/হ্যান্ডসেটের হালনাগাদ অবস্থা জানানো হবে।

হ্যান্ডসেট কেনার আগে যা করতে হবে: যে কোনো মাধ্যমে (বিক্রয় কেন্দ্র, অনলাইন বিক্রয় কেন্দ্র, ই-কমার্স সাইট ইত্যাদি) মোবাইল হ্যান্ডসেট কেনার আগে অবশ্যই হ্যান্ডসেটটির বৈধতা যাচাই করতে হবে। সেজন্য একটি পদ্ধতি অনুসরণের পাশাপাশি হ্যান্ডসেটের ক্রয় রসিদ সংরক্ষণ করতে বলছে বিটিআরসি। মোবাইল হ্যান্ডসেটটি বৈধ হলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে এনইআইআর সিস্টেমে নিবন্ধিত হয়ে যাবে। মোবাইল ফোনের মেসেজ অপশনে গিয়ে KYD লিখে space দিয়ে ১৫ ডিজিটের আইএমইআই নম্বরটি লিখতে হবে। এরপর ১৬০০২ নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি মেসেজ মোবাইল হ্যান্ডসেটের বৈধতা সম্পর্কে জানিয়ে দেওয়া হবে।

বিদেশ থেকে আনা হ্যান্ডসেট যেভাবে নিবন্ধন হবে: বিদেশ থেকে বৈধভাবে কিনে আনা বা উপহার পাওয়া হ্যান্ডসেট দেশে চালু করার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবেই নেটওয়ার্কে সচল হবে। এ ধরনের গ্রাহককে ১০ দিনের মধ্যে অনলাইনে তথ্য দিয়ে নিবন্ধন করার জন্য এসএমএস পাঠানো হবে। ১০ দিনের মধ্যে নিবন্ধন হয়ে গেলে ঐ হ্যান্ডসেট ‘বৈধ’ বিবেচিত হবে। আর তা না হলে হ্যান্ডসেটটি অবৈধ বিবেচনা করে গ্রাহককে এসএমএস এর মাধ্যমে জানানো হবে।

কাল থেকে আর চলবে না নকল মোবাইল ফোনসেটবিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহীদুল ইসলাম ইত্তেফাককে বলেন, গত পহেলা জুলাই থেকে তিন মাসের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্ট্রার-এনইআইআর চালু হয়েছে। ৩০ সেপ্টেম্বর সেই সময় শেষ হচ্ছে। পহেলা অক্টোবর থেকে কোনোভাবেই আর অবৈধ বা নকল সেট ব্যবহার করা যাবে না। এ সময়ের মধ্যে যে সেটগুলো ব্যবহার হয়েছে সেগুলো সার্ভারে সংযুক্ত হয়ে যাবে। নতুন যেসব সেট যুক্ত হবে সেগুলো অবশ্যই বৈধ সেট হতে হবে।

এদিকে বিটিআরসি সূত্রে জানা গেছে, দেশে প্রতিদিন ১ লাখ ১০ হাজার নতুন মোবাইল হ্যান্ডসেট নিবন্ধন হচ্ছে, যেগুলোর মধ্যে প্রায় ১০ শতাংশই অবৈধ ও নকল বলে ধরা পড়ছে। এ হিসেবে প্রতিদিন গ্রাহকের হাতে আসা ১১ হাজার অবৈধ ও নকল হ্যান্ডসেট চিহ্নিত হচ্ছে। জানা গেছে, এই সেটগুলো আপাতত বন্ধ হচ্ছে না। তবে এসব সেট চালু হওয়া মাত্রই গ্রাহকের কাছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বার্তা চলে যাচ্ছে যে, তার সেটটি ‘অবৈধ বা নকল’।

বিটিআরসির সর্বশেষ কমিশন বৈঠকে নকল বা অবৈধ হ্যান্ডসেটের ব্যাপারে আর ছাড় দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিটিআরসির কমিশনার (স্পেকট্রাম) এ কে এম শহীদুজ্জামান ইত্তেফাককে বলেন, পহেলা অক্টোবর থেকে কোনোভাবেই আর নকল সেট চালানো যাবে না। সেটটি চালু করার সঙ্গে সঙ্গে সংক্রিয় বার্তা চলে যাবে। বৈধ কাগজপত্র থাকলে রেজিস্ট্রেশন করা যাবে। না থাকলে যেখান থেকে গ্রাহক কিনেছেন সেখানে যোগাযোগ করে বদলে নিতে হবে। অবৈধভাবে দেশে আনা কোনো সেট আর কোনোভাবেই চালু করা যাবে না।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

আপনার মোবাইল ফোনটি বৈধ কি না, যাচাই করবেন যেভাবে

আপডেট টাইম : ০৪:০৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১ অক্টোবর ২০২১

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ শুক্রবার (১ অক্টোবর) থেকে অবৈধ কোনো মোবাইল সেট চলবে না। সেটে সিম প্রবেশ করানোর সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বার্তা চলে আসবে। সেট অবৈধ হলে যে কোনো সময় বন্ধের সতর্কতা দিয়ে বার্তা আসবে। পাশাপাশি বৈধ কাগজপত্র থাকলে তা দিয়ে রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ দেবে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন বিটিআরসি। বৈধ কাগজপত্র না থাকলে বা সেটটি বৈধ না হলে সংক্রিয়ভাবে সেটি অচল হয়ে যাবে।

তবে এখন থেকে নতুন হ্যান্ডসেট নেটওয়ার্কে সচল করতে হলে অবশ্যই তার আইএমইআই নম্বরটি বিটিআরসি’র ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) ব্যবস্থায় নিবন্ধিত থাকতে হবে। শুধুমাত্র বৈধভাবে দেশে উৎপাদিত এবং বৈধ পথে আমদানি করা হ্যান্ডসেটগুলো এনআইআর ব্যবস্থায় নিবন্ধিত থাকবে। ফলে চোরই পথে আসা এবং নকল হ্যান্ডসেট আর বাংলাদেশের নেটওয়ার্কে ব্যবহার করা যাবে না। এমন পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই ব্যবহারকারীদের মনে প্রশ্ন উঠেছে, তিনি যে ফোনটি ব্যবহার করছন সেটি বৈধ নাকি অবৈধ!

খুব সহজেই এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। তারা বলছে, মোবাইল থেকে মেসেজ পাঠিয়ে গ্রাহকেরা সহজেই বৈধ বা অবৈধ মোবাইল চিহ্নিত করতে পারবেন।

হাতের সেটটি বৈধ কি-না জানবেন কীভাবে: যে কেউ চাইলে তার হাতে থাকা মোবাইল হ্যান্ডসেটের বর্তমান অবস্থা জেনে নিতে পারেন। মোবাইল হ্যান্ডসেটে *১৬১৬১# নম্বরে ডায়াল করতে হবে। স্ক্রিনে অপশন এলে Status Check সিলেক্ট করতে হবে। তখন একটি অটোমেটিক বক্স আসবে, সেখানে মোবাইল হ্যান্ডসেটের ১৫ ডিজিটের আইইএমআই নম্বরটি লিখে পাঠাতে হবে। গ্রাহকের মোবাইলে তখন হ্যাঁ/না অপশন সংবলিত একটি অটোমেটিক বক্স আসবে। তাতে হ্যাঁ Select করে নিশ্চিত করতে হবে। ফিরতি মেসেজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের/হ্যান্ডসেটের হালনাগাদ অবস্থা জানানো হবে।

হ্যান্ডসেট কেনার আগে যা করতে হবে: যে কোনো মাধ্যমে (বিক্রয় কেন্দ্র, অনলাইন বিক্রয় কেন্দ্র, ই-কমার্স সাইট ইত্যাদি) মোবাইল হ্যান্ডসেট কেনার আগে অবশ্যই হ্যান্ডসেটটির বৈধতা যাচাই করতে হবে। সেজন্য একটি পদ্ধতি অনুসরণের পাশাপাশি হ্যান্ডসেটের ক্রয় রসিদ সংরক্ষণ করতে বলছে বিটিআরসি। মোবাইল হ্যান্ডসেটটি বৈধ হলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে এনইআইআর সিস্টেমে নিবন্ধিত হয়ে যাবে। মোবাইল ফোনের মেসেজ অপশনে গিয়ে KYD লিখে space দিয়ে ১৫ ডিজিটের আইএমইআই নম্বরটি লিখতে হবে। এরপর ১৬০০২ নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি মেসেজ মোবাইল হ্যান্ডসেটের বৈধতা সম্পর্কে জানিয়ে দেওয়া হবে।

বিদেশ থেকে আনা হ্যান্ডসেট যেভাবে নিবন্ধন হবে: বিদেশ থেকে বৈধভাবে কিনে আনা বা উপহার পাওয়া হ্যান্ডসেট দেশে চালু করার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবেই নেটওয়ার্কে সচল হবে। এ ধরনের গ্রাহককে ১০ দিনের মধ্যে অনলাইনে তথ্য দিয়ে নিবন্ধন করার জন্য এসএমএস পাঠানো হবে। ১০ দিনের মধ্যে নিবন্ধন হয়ে গেলে ঐ হ্যান্ডসেট ‘বৈধ’ বিবেচিত হবে। আর তা না হলে হ্যান্ডসেটটি অবৈধ বিবেচনা করে গ্রাহককে এসএমএস এর মাধ্যমে জানানো হবে।

কাল থেকে আর চলবে না নকল মোবাইল ফোনসেটবিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহীদুল ইসলাম ইত্তেফাককে বলেন, গত পহেলা জুলাই থেকে তিন মাসের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্ট্রার-এনইআইআর চালু হয়েছে। ৩০ সেপ্টেম্বর সেই সময় শেষ হচ্ছে। পহেলা অক্টোবর থেকে কোনোভাবেই আর অবৈধ বা নকল সেট ব্যবহার করা যাবে না। এ সময়ের মধ্যে যে সেটগুলো ব্যবহার হয়েছে সেগুলো সার্ভারে সংযুক্ত হয়ে যাবে। নতুন যেসব সেট যুক্ত হবে সেগুলো অবশ্যই বৈধ সেট হতে হবে।

এদিকে বিটিআরসি সূত্রে জানা গেছে, দেশে প্রতিদিন ১ লাখ ১০ হাজার নতুন মোবাইল হ্যান্ডসেট নিবন্ধন হচ্ছে, যেগুলোর মধ্যে প্রায় ১০ শতাংশই অবৈধ ও নকল বলে ধরা পড়ছে। এ হিসেবে প্রতিদিন গ্রাহকের হাতে আসা ১১ হাজার অবৈধ ও নকল হ্যান্ডসেট চিহ্নিত হচ্ছে। জানা গেছে, এই সেটগুলো আপাতত বন্ধ হচ্ছে না। তবে এসব সেট চালু হওয়া মাত্রই গ্রাহকের কাছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বার্তা চলে যাচ্ছে যে, তার সেটটি ‘অবৈধ বা নকল’।

বিটিআরসির সর্বশেষ কমিশন বৈঠকে নকল বা অবৈধ হ্যান্ডসেটের ব্যাপারে আর ছাড় দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিটিআরসির কমিশনার (স্পেকট্রাম) এ কে এম শহীদুজ্জামান ইত্তেফাককে বলেন, পহেলা অক্টোবর থেকে কোনোভাবেই আর নকল সেট চালানো যাবে না। সেটটি চালু করার সঙ্গে সঙ্গে সংক্রিয় বার্তা চলে যাবে। বৈধ কাগজপত্র থাকলে রেজিস্ট্রেশন করা যাবে। না থাকলে যেখান থেকে গ্রাহক কিনেছেন সেখানে যোগাযোগ করে বদলে নিতে হবে। অবৈধভাবে দেশে আনা কোনো সেট আর কোনোভাবেই চালু করা যাবে না।