ঢাকা , বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জ্বালাও-পোড়াওকারীরা একাত্তরের পরাজিত শক্তির দালাল: প্রধানমন্ত্রী

যারা জ্বালাও-পোড়াও করে, রেললাইন তুলে ফেলে মানুষ হত্যা করে, তাদেরকে ‘একাত্তরের পরাজিত শক্তির দালাল’ অভিহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাদেরকে বর্জন করতে দেশের মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান। আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, হত্যাকারীরা কখনো গণতন্ত্র দিতে পারে না, এটা জনগণকে বুঝতে হবে। রেললাইন কেটে মানুষ হত্যা করে তারা কোন গণতন্ত্র দেবে? যারা জ্বালাও-পোড়াও করে, রেললাইন তুলে ফেলে, তারা একাত্তরের পরাজিত শক্তির দালাল, পরাজিত শক্তির দোসর। এদেরকে ‘না’ বলুন। এদের বাংলাদেশের রাজনীতি করারই কোনো অধিকার নেই। জঙ্গি, সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজদের এ দেশে রাজনীতি করার অধিকার নেই।

বিএনপির হত্যা আর সন্ত্রাসের রাজনীতি দলটির প্রতিষ্ঠাকাল থেকে চলছে, অভিযোগ করে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান হাজার হাজার সেনা অফিসারকে হত্যা করেছে, ফাঁসি দিয়েছে। অনেকের লাশও খুঁজে পাওয়া যায়নি। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অকথ্য নির্যাতন করেছে। ২০০১ সালে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল খালেদা জিয়া। হত্যা-নির্যাতন শুরু করেছিল পাকিস্তিানি হানাদার বাহিনীর মতো। সারা দেশে গ্রেডেন হামলা, বোমা হামলা, আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা, ধরে নিয়ে টর্চার করা হয়েছিল। বাংলাদেশ হয়েছিল সন্ত্রাস-দুর্নীতি-মানি লন্ডারিং-অস্ত্র চোরাকারবারির একটা খোলা জায়গা। এমন কোনো অপকর্ম নেই, তারা করত না।

শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়ার পদাঙ্ক অনুসরণ করে যাচ্ছে তার ছেলে (তারেক রহমান)। জিয়া, খালেদার পর তার ছেলেও একই কাজ করছে। একটা অমানুষ পয়দা করেছে। যে মুচলেকা দিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল, এখন বিদেশে বসে হুকুম দিয়ে হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে। গত পরশু ভোর রাতে রেললাইন কেটে ফেলেছে। দুর্ঘটনা ঘটেছে। একজন মানুষ মারাও গেছে। আরও বেশি মানুষ মারা যেতে পারত। এর আগেও অনেক জায়গায় রেললাইন কেটেছে। এর আগে যাত্রীসহ বাস পুড়িয়ে দিয়েছে। পাকিস্তানের মতো তারেকের হুকুমে খাদ্যসহ ট্রাক পুড়িয়ে দিচ্ছ।

আন্দোলনের নামে অগ্নিসন্ত্রাস করে বিএনপি কোন গণতন্ত্র দেবে, সেই প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হরতাল-অবরোধে তাদের দেখা নেই; ধ্বংস করে পুড়িয়ে তাদের আন্দোলন। গণতন্ত্র তারা শিখেছে? ওর বাপ (জিয়াউর রহমান) কি গণতন্ত্র দিয়েছিল? সারা রাত থাকত কারফিউ। সে এখন দূরে বসে হুকুম দেয় আর এখানে মানুষ মারার পরিকল্পনা করে। যারা মানুষ পুড়িয়ে মারে, তারা কোন গণতন্ত্র দেবে, নিশ্চয় বাংলাদেশের মানুষ বুঝতে পারে। এজন্য তাদের আন্দোলনে মানুষ সাড়া দেয় না।

বিএনপির আন্দোলনে কয়েকটি বাম দলের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে তিনি বলেন, অতিবামরাও নেমে পড়েছে। কী অদ্ভুত! এক পাশে জামায়াত, আরেক পাশে বাম। কোথায় তাদের আদর্শ?তারা বলে, বাংলাদেশ নাকি ভালো নেই। যে দেশে দারিদ্র্যের হার ৪১ থেকে ১৮ ভাগে নামিয়ে এনেছি। সারা দেশে মানুষ ভালো আছে। উন্নয়ন হচ্ছে। আজকে বিশ্ব বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল বলছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ থাকলে এ দেশের মানুষ সেবা পায়। এখন মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে পেরেছি। আজকে মানুষ বিদেশে গেলে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে সম্মান পায়। এই সম্মান দিতে পারে না দেশের কিছু কুলাঙ্গার। তারা পাকিস্তানের প্রেতাত্মা হয়ে মানুষকে হত্যা করে যাচ্ছে।

মানুষকে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে সজাগ ও সতর্ক থেকে তা প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেখানে রেললাইন আছে, এই ধরনের ঘটনা ঘটানোর আগে মাঠে নামলে তারা হালে পানি পাবে না। এরা ধ্বংস করতে পারে, গড়তে পারে না। মানুষের জীবন উন্নয়ন করতে পারে না, ধ্বংস করতে পারে। রেললাইন তুলে ফেলা, আগুন দিলে সাথে সাথে তাদের ধরতে হবে।

বাংলাদেশকে আর কখনো পরাজিত শক্তির হাতে তুলে দিতে দেওয়া হবে না, উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, শহিদের রক্ত কখনো বৃথা যায়নি, যাবে না। আজকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। জাতির পিতার ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি। এ দেশের মানুষ হাত পেতে না, মাথা উঁচু করে চলবে।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত করে জাতির পিতার ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে এবং জাতিকে বিকৃত ইতিহাস থেকে সত্যের ইতিহাস জানাতে দেশে ফিরে এসেছিলেন বলেও জানান শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, পঁচাত্তরের পর যে গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল, সেই অধিকার জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিতে হবে। দেশ জাতির পিতার আদর্শে গড়ে উঠবে, সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। ২০০৯ থেকে ২০২৩, আজকে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশকে হেয় চোখে দেখা হতো, যে বাংলাদেশকে পাকিস্তানিরা মনে করত বোঝা; আজকে তারা বলছে, আমাদের বাংলাদেশ বানিয়ে দাও।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের বিষয়—যারা জাতির পিতাকে হত্যা করেছে, তাদের বিচার করা যাবে না। ইনডেমনিটি জারি করে জিয়াউর রহমান তাদের পুরস্কৃত করেছিল। যে স্বাধীনতাবিরোধীরা বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে, বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার চক্রান্ত করেছিল, যাদের বিচার বঙ্গবন্ধু শুরু করেছিলেন, ১৫ আগস্টের পর সেই সমস্ত অপরাধীদের বিচার বন্ধ করে দেওয়া হয়। অপরাধী বন্দিদের মুক্তি দেয়া হয়। সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদে ছিল—যুদ্ধাপরাধীরা কখনো ভোটার হতে পারবে না। সেটি পরিবর্তন করে যুদ্ধপরাধীদের রাজনীতি করা ও ভোটার হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিল জিয়া।

জিয়াউর রহমানের পর খালেদা জিয়াও বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আশ্রয়-প্রশয় এবং তাদের সাংসদ বানানোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া তো আরও এক ধাপ এগিয়ে। ১৯৯৫ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচন করে, ভোট চুরি করে খুনিদের সংসদে বসালো। ঘোষণা দিলো, সে দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হয়েছে। খুনিদের যখন সংসদে বসিয়েছে, সেই সংসদে খালেদা জিয়া বেশিদিন বসতে পারেনি। জনগণের রুদ্ররোষে খালেদা জিয়াকে নাকে খত দিয়ে বিদায় নিতে হয়েছিল। এটা বিএনপি নেতাদের মনে রাখা উচিত। ভোট চুরির অপরাধে দুই দুইবার খালেদা জিয়ার বিদায় নিতে হয়েছিল।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

জ্বালাও-পোড়াওকারীরা একাত্তরের পরাজিত শক্তির দালাল: প্রধানমন্ত্রী

আপডেট টাইম : ০২:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩

যারা জ্বালাও-পোড়াও করে, রেললাইন তুলে ফেলে মানুষ হত্যা করে, তাদেরকে ‘একাত্তরের পরাজিত শক্তির দালাল’ অভিহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাদেরকে বর্জন করতে দেশের মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান। আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, হত্যাকারীরা কখনো গণতন্ত্র দিতে পারে না, এটা জনগণকে বুঝতে হবে। রেললাইন কেটে মানুষ হত্যা করে তারা কোন গণতন্ত্র দেবে? যারা জ্বালাও-পোড়াও করে, রেললাইন তুলে ফেলে, তারা একাত্তরের পরাজিত শক্তির দালাল, পরাজিত শক্তির দোসর। এদেরকে ‘না’ বলুন। এদের বাংলাদেশের রাজনীতি করারই কোনো অধিকার নেই। জঙ্গি, সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজদের এ দেশে রাজনীতি করার অধিকার নেই।

বিএনপির হত্যা আর সন্ত্রাসের রাজনীতি দলটির প্রতিষ্ঠাকাল থেকে চলছে, অভিযোগ করে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান হাজার হাজার সেনা অফিসারকে হত্যা করেছে, ফাঁসি দিয়েছে। অনেকের লাশও খুঁজে পাওয়া যায়নি। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অকথ্য নির্যাতন করেছে। ২০০১ সালে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল খালেদা জিয়া। হত্যা-নির্যাতন শুরু করেছিল পাকিস্তিানি হানাদার বাহিনীর মতো। সারা দেশে গ্রেডেন হামলা, বোমা হামলা, আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা, ধরে নিয়ে টর্চার করা হয়েছিল। বাংলাদেশ হয়েছিল সন্ত্রাস-দুর্নীতি-মানি লন্ডারিং-অস্ত্র চোরাকারবারির একটা খোলা জায়গা। এমন কোনো অপকর্ম নেই, তারা করত না।

শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়ার পদাঙ্ক অনুসরণ করে যাচ্ছে তার ছেলে (তারেক রহমান)। জিয়া, খালেদার পর তার ছেলেও একই কাজ করছে। একটা অমানুষ পয়দা করেছে। যে মুচলেকা দিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল, এখন বিদেশে বসে হুকুম দিয়ে হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে। গত পরশু ভোর রাতে রেললাইন কেটে ফেলেছে। দুর্ঘটনা ঘটেছে। একজন মানুষ মারাও গেছে। আরও বেশি মানুষ মারা যেতে পারত। এর আগেও অনেক জায়গায় রেললাইন কেটেছে। এর আগে যাত্রীসহ বাস পুড়িয়ে দিয়েছে। পাকিস্তানের মতো তারেকের হুকুমে খাদ্যসহ ট্রাক পুড়িয়ে দিচ্ছ।

আন্দোলনের নামে অগ্নিসন্ত্রাস করে বিএনপি কোন গণতন্ত্র দেবে, সেই প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হরতাল-অবরোধে তাদের দেখা নেই; ধ্বংস করে পুড়িয়ে তাদের আন্দোলন। গণতন্ত্র তারা শিখেছে? ওর বাপ (জিয়াউর রহমান) কি গণতন্ত্র দিয়েছিল? সারা রাত থাকত কারফিউ। সে এখন দূরে বসে হুকুম দেয় আর এখানে মানুষ মারার পরিকল্পনা করে। যারা মানুষ পুড়িয়ে মারে, তারা কোন গণতন্ত্র দেবে, নিশ্চয় বাংলাদেশের মানুষ বুঝতে পারে। এজন্য তাদের আন্দোলনে মানুষ সাড়া দেয় না।

বিএনপির আন্দোলনে কয়েকটি বাম দলের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে তিনি বলেন, অতিবামরাও নেমে পড়েছে। কী অদ্ভুত! এক পাশে জামায়াত, আরেক পাশে বাম। কোথায় তাদের আদর্শ?তারা বলে, বাংলাদেশ নাকি ভালো নেই। যে দেশে দারিদ্র্যের হার ৪১ থেকে ১৮ ভাগে নামিয়ে এনেছি। সারা দেশে মানুষ ভালো আছে। উন্নয়ন হচ্ছে। আজকে বিশ্ব বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল বলছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ থাকলে এ দেশের মানুষ সেবা পায়। এখন মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে পেরেছি। আজকে মানুষ বিদেশে গেলে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে সম্মান পায়। এই সম্মান দিতে পারে না দেশের কিছু কুলাঙ্গার। তারা পাকিস্তানের প্রেতাত্মা হয়ে মানুষকে হত্যা করে যাচ্ছে।

মানুষকে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে সজাগ ও সতর্ক থেকে তা প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেখানে রেললাইন আছে, এই ধরনের ঘটনা ঘটানোর আগে মাঠে নামলে তারা হালে পানি পাবে না। এরা ধ্বংস করতে পারে, গড়তে পারে না। মানুষের জীবন উন্নয়ন করতে পারে না, ধ্বংস করতে পারে। রেললাইন তুলে ফেলা, আগুন দিলে সাথে সাথে তাদের ধরতে হবে।

বাংলাদেশকে আর কখনো পরাজিত শক্তির হাতে তুলে দিতে দেওয়া হবে না, উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, শহিদের রক্ত কখনো বৃথা যায়নি, যাবে না। আজকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। জাতির পিতার ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি। এ দেশের মানুষ হাত পেতে না, মাথা উঁচু করে চলবে।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত করে জাতির পিতার ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে এবং জাতিকে বিকৃত ইতিহাস থেকে সত্যের ইতিহাস জানাতে দেশে ফিরে এসেছিলেন বলেও জানান শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, পঁচাত্তরের পর যে গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল, সেই অধিকার জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিতে হবে। দেশ জাতির পিতার আদর্শে গড়ে উঠবে, সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। ২০০৯ থেকে ২০২৩, আজকে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশকে হেয় চোখে দেখা হতো, যে বাংলাদেশকে পাকিস্তানিরা মনে করত বোঝা; আজকে তারা বলছে, আমাদের বাংলাদেশ বানিয়ে দাও।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের বিষয়—যারা জাতির পিতাকে হত্যা করেছে, তাদের বিচার করা যাবে না। ইনডেমনিটি জারি করে জিয়াউর রহমান তাদের পুরস্কৃত করেছিল। যে স্বাধীনতাবিরোধীরা বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে, বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার চক্রান্ত করেছিল, যাদের বিচার বঙ্গবন্ধু শুরু করেছিলেন, ১৫ আগস্টের পর সেই সমস্ত অপরাধীদের বিচার বন্ধ করে দেওয়া হয়। অপরাধী বন্দিদের মুক্তি দেয়া হয়। সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদে ছিল—যুদ্ধাপরাধীরা কখনো ভোটার হতে পারবে না। সেটি পরিবর্তন করে যুদ্ধপরাধীদের রাজনীতি করা ও ভোটার হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিল জিয়া।

জিয়াউর রহমানের পর খালেদা জিয়াও বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আশ্রয়-প্রশয় এবং তাদের সাংসদ বানানোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া তো আরও এক ধাপ এগিয়ে। ১৯৯৫ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচন করে, ভোট চুরি করে খুনিদের সংসদে বসালো। ঘোষণা দিলো, সে দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হয়েছে। খুনিদের যখন সংসদে বসিয়েছে, সেই সংসদে খালেদা জিয়া বেশিদিন বসতে পারেনি। জনগণের রুদ্ররোষে খালেদা জিয়াকে নাকে খত দিয়ে বিদায় নিতে হয়েছিল। এটা বিএনপি নেতাদের মনে রাখা উচিত। ভোট চুরির অপরাধে দুই দুইবার খালেদা জিয়ার বিদায় নিতে হয়েছিল।