ঢাকা , শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চলতি মেয়াদেই ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ বিল আনতে যাচ্ছে মোদি সরকার

ভারতের এনডিএ সরকারের চলতি মেয়াদকালেই ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ কার্যকর হবে, পিটিআই সূত্রে সামনে এসেছে এই খবর। ইতিমধ্যে এই বিষয়ে তৎপরতা শুরু করেছে কেন্দ্র। যদিও বিগত লোকসভা ভোটে দুর্বল হয়েছে বিজেপি। সরকারে গুরুত্ব বেড়েছে এনডিএ জোটের। তথাপি জোট শরিকদের সঙ্গে নিয়েই ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ কার্যকর হতে চলেছে বলে খবর।

গত মাসে লালকেল্লায় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে ভাষণ দেয়ার সময় ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ নিয়ে সওয়াল করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি যুক্তি দেন, ঘন ঘন নির্বাচনে দেশের উন্নয়নমূলক কাজে বাধা পড়ে। প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, গোটা দেশ এই প্রক্রিয়াকে সমর্থনও জানাচ্ছে। সব রাজনৈতিক দলগুলিকে এই বিষয়ে সমর্থন করার আহ্বানও জানান তিনি। যদিও ‘গোটা দেশ’ বলতে কাদের কথা বলতে চেয়েছেন, তা স্পষ্ট করেননি প্রধানমন্ত্রী। কারণ বিরোধী দলগুলি শুরু থেকেই ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’-এর বিরোধিতা করে এসেছে।

বিরোধী নেতারা অভিযোগ করেছেন, এই নীতি ঘুরপথে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ধাঁচের ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে। যা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং সংসদীয় গণতান্ত্রের পরিপন্থী। কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম-সহ বিজেপি-বিরোধী দলগুলির আশঙ্কা, ‘এক দেশ এক নির্বাচন’ নীতি কার্যকর হলে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় এমপি এবং বিধায়ক নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে বিভিন্ন ফলাফল দেখা যায়, সেই বৈচিত্র বিনষ্ট হবে। এই সুযোগ কাজে লাগাবে বিজেপির মতো অর্থনৈতিক ভাবে প্রবল শক্তিশালী দল। তাদের প্রচারের ঢেউয়ে ভেসে যাবে তুলনায় ছোট আঞ্চলিক দলগুলি। অন্যদিকে সরকার পক্ষের দাবি করেছে, এই ব্যবস্থা চালু হলে ভোট প্রক্রিয়ার জন্য যে বিপুল অঙ্কের খরচ হয়ে থাকে, তা অনেকটাই কমে যাবে।

সব মিলিয়ে নির্বাচনের এই নতুন ভাবনা নিয়ে দ্বন্দ্ব কাটেনি। উল্লেখ্য, ‘এক দেশ, এক নির্বাচনে’-এর বাস্তবতা খতিয়ে দেখতে সাবেক রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করেছিল কেন্দ্র। গত মার্চ মাসে সেই কমিটি রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছে। ওই কমিটি ‘এক দেশ, এক নির্বাচনে’-এর পক্ষে সায় দিয়েছে বলেই খবর। আর এদিন পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, বিল আনতে তৎপরতা শুরু করেছে মোদি সরকার। তবে ঠিক কবে বিল পেশ করা হবে সংসদে তা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

চলতি মেয়াদেই ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ বিল আনতে যাচ্ছে মোদি সরকার

আপডেট টাইম : ০৪:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ভারতের এনডিএ সরকারের চলতি মেয়াদকালেই ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ কার্যকর হবে, পিটিআই সূত্রে সামনে এসেছে এই খবর। ইতিমধ্যে এই বিষয়ে তৎপরতা শুরু করেছে কেন্দ্র। যদিও বিগত লোকসভা ভোটে দুর্বল হয়েছে বিজেপি। সরকারে গুরুত্ব বেড়েছে এনডিএ জোটের। তথাপি জোট শরিকদের সঙ্গে নিয়েই ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ কার্যকর হতে চলেছে বলে খবর।

গত মাসে লালকেল্লায় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে ভাষণ দেয়ার সময় ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ নিয়ে সওয়াল করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি যুক্তি দেন, ঘন ঘন নির্বাচনে দেশের উন্নয়নমূলক কাজে বাধা পড়ে। প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, গোটা দেশ এই প্রক্রিয়াকে সমর্থনও জানাচ্ছে। সব রাজনৈতিক দলগুলিকে এই বিষয়ে সমর্থন করার আহ্বানও জানান তিনি। যদিও ‘গোটা দেশ’ বলতে কাদের কথা বলতে চেয়েছেন, তা স্পষ্ট করেননি প্রধানমন্ত্রী। কারণ বিরোধী দলগুলি শুরু থেকেই ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’-এর বিরোধিতা করে এসেছে।

বিরোধী নেতারা অভিযোগ করেছেন, এই নীতি ঘুরপথে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ধাঁচের ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে। যা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং সংসদীয় গণতান্ত্রের পরিপন্থী। কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম-সহ বিজেপি-বিরোধী দলগুলির আশঙ্কা, ‘এক দেশ এক নির্বাচন’ নীতি কার্যকর হলে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় এমপি এবং বিধায়ক নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে বিভিন্ন ফলাফল দেখা যায়, সেই বৈচিত্র বিনষ্ট হবে। এই সুযোগ কাজে লাগাবে বিজেপির মতো অর্থনৈতিক ভাবে প্রবল শক্তিশালী দল। তাদের প্রচারের ঢেউয়ে ভেসে যাবে তুলনায় ছোট আঞ্চলিক দলগুলি। অন্যদিকে সরকার পক্ষের দাবি করেছে, এই ব্যবস্থা চালু হলে ভোট প্রক্রিয়ার জন্য যে বিপুল অঙ্কের খরচ হয়ে থাকে, তা অনেকটাই কমে যাবে।

সব মিলিয়ে নির্বাচনের এই নতুন ভাবনা নিয়ে দ্বন্দ্ব কাটেনি। উল্লেখ্য, ‘এক দেশ, এক নির্বাচনে’-এর বাস্তবতা খতিয়ে দেখতে সাবেক রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করেছিল কেন্দ্র। গত মার্চ মাসে সেই কমিটি রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছে। ওই কমিটি ‘এক দেশ, এক নির্বাচনে’-এর পক্ষে সায় দিয়েছে বলেই খবর। আর এদিন পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, বিল আনতে তৎপরতা শুরু করেছে মোদি সরকার। তবে ঠিক কবে বিল পেশ করা হবে সংসদে তা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি।