গত ৭০ বছর ধরে নিউজিল্যান্ডের সরকারি এবং চার্চের আশ্রয়শিবিরে অত্যাচারের ঘটনা ঘটেছে।সম্প্রতি দেশটির কমিশনের প্রকাশিত এক রিপোর্টে এই তথ্য বেরিয়ে আসে। বিষয়টি নিয়ে আজ মঙ্গলবার নিউজিল্যান্ডের পার্লামেন্টে ক্ষমা চেয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী।
অনেকদিন ধরে অভিযোগ ছিল, আশ্রয়হীন হয়ে অথবা মানসিক সহায়তার প্রয়োজনে রাষ্ট্র বা চার্চের কাছে সাহায্য চাইতে গিয়ে তারা হেনস্থার শিকার হয়েছেন। তাদের উপর অত্যাচার হয়েছে। নিউজিল্যান্ডের সরকার এই অভিযোগ নিয়ে একটি কমিশন গঠন করেছিল। কমিশনের রিপোর্টে ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন অত্যাচার বা হেনস্থার শিকার হয়েছেন। এরপরেই পার্লামেন্টে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় এবং প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুকসন নিজের এবং সাবেক সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এমন ঘটনা যাতে আর কখনো না ঘটে, সে দিকে নজর দেওয়া হবে। যে ঘটনা ঘটেছে, তার তদন্ত হবে।
১৯৫০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করেছে কমিশন। তাতে বলা হয়েছে, অন্তত ৬ লাখ ৫০ হাজার মানুষ অত্যাচার এবং হেনস্থার শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে প্রচুর শিশু আছে। মানসিকভাবে, শারীরিকভাবে তাতে উপর অত্যাচার হয়েছে। বহু শিশু সরাসরি যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো, সরকারি এবং চার্চের প্রতিষ্ঠানে এই ঘটনা ঘটার ফলে তারা সরাসরি অভিযোগ জানাতেও পারেনি সব সময়।
কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, বহু শিশুকে সম্পূর্ণ অকারণে তাদের মায়েদের থেকে আলাদা করে দেওয়া হয়েছে জোর করে। শিশুদের অন্য লোকের কাছে দত্তক হিসেবে পাঠানো হয়েছে। শিশু এবং নারীদের উপর যৌন নির্যাতনের পাশাপাশি ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, মূলত বর্ণবাদের কারণেই এই অত্যাচার চালানো হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন নিউজিল্যান্ডের মাওরি জনজাতির মানুষ।
প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, কমিশনের এই রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দোষীদের চিহ্নিত করা হবে এবং ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা আর কখনো না ঘটে, তার ব্যবস্থা করা হবে।