ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি আজ ‘ক্লোজ ডাউন’, দাবি না মানলে কাল ‘বারাসাত ব্যারিকেড

রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে ‘কলেজ ক্লোজ ডাউন’ কর্মসূচি পালন করছে শিক্ষার্থীরা।এতে ওই কলেজে ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে সরকারের প্রতিক্রিয়া জানতে ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

তবে সরকার দাবি না মানলে আগামীকাল বুধবার থেকে আবারও সড়ক ও রেলপথ অবরোধে নামবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তারা এ কর্মসূচির নাম দিয়েছেন ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু মহাখালী’।

মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কলেজের প্রধান ফটকে অবস্থান কর্মসূচি থেকে এক ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এ ঘোষণা এসেছে।

ব্রিফিংয়ে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মতিউর রহমান জয় বলেন, ‘আজকে আমাদের দাবিগুলো নিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টাসহ সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা বসবেন বলে জেনেছি। সেখানে আমাদের প্রতিনিধি দলও থাকবে। এ বৈঠক থেকে দাবি মেনে নেওয়ার সুনির্দিষ্ট আশ্বাস না পেলে বুধবার বেলা ১১টা থেকে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করা হবে।’

ব্রিফিং শেষে ‘তিতুমীরের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘টিসি না টিইউ’, টিইউ টিইউ’, ‘ডিমান্ড টু গুলশান, ‘তিতুমীর ভার্সিটি’, ‘ডিমান্ড টু বনানী, তিতুমীর ভার্সিটি, ‘অধ্যক্ষ না ভিসি, ভিসি ভিসি’, ‘আমাদের ক্যাম্পাসে, আমরাই থাকব’, ‘ক্যাম্পাসে পুলিশ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে শোনা যায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রতি সম্মান জানিয়ে শেষবারের মতো তার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আজ শুধু ‘ক্লোজ ডাউন’ কর্মসূচি চলবে। তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত অন্য কোনো সিদ্ধান্ত নিলে বা কোনো রকম চক্রান্ত কেউ করলে তাৎক্ষণিকভাবে ‘বারাসাত ব্যারিকেড’ কর্মসূচি শুরু হবে। প্রয়োজনে আরও বড় কর্মসূচির ডাক দেওয়া হতে পারে।

এদিকে শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচিতে যেন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়, সেজন্য কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। এদিন কলেজের সামনে থেকে রেলগেট পর্যন্ত সড়কে সেনাবাহিনীর শতাধিক সদস্যকে অবস্থান নিতে দেখা গেছে।

দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীরা যেকোনো কর্মসূচি করতে পারেন। তবে সেটা কলেজের ভেতরেই করতে হবে। রাস্তা অবরোধ করলে যানজটে মানুষের ভোগান্তি হবে। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে কলেজে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে রাজধানীর মহাখালী এলাকায় গতকাল সাড়ে চার ঘণ্টা সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। এরপর আড়াই ঘণ্টা বিরতি দিয়ে সন্ধ্যায় আবার সড়ক অবরোধ করেন এবং পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে তারা অবরোধ তুলে নেন।

অবরোধের কারণে সড়কে যান চলাচল বন্ধের পাশাপাশি ঢাকার সঙ্গে প্রায় সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। মহাখালী উড়ালসড়ক ও এর নিচের বিমানবন্দর সড়কে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। দিনভর চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।

অবরোধের শুরুতে শিক্ষার্থীদের প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে কমলাপুরগামী একটি ট্রেন দ্রুতগতিতে মহাখালী রেলক্রসিং অতিক্রম করে। রেলপথ অবরোধ করা শিক্ষার্থীরা তখন ক্ষুব্ধ হয়ে ট্রেনে পাথর ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে ট্রেনে থাকা কয়েকজন যাত্রী আহত হন এবং ট্রেনের কিছু জানালার কাচ ভেঙে যায়।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি আজ ‘ক্লোজ ডাউন’, দাবি না মানলে কাল ‘বারাসাত ব্যারিকেড

আপডেট টাইম : ৫ ঘন্টা আগে

রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে ‘কলেজ ক্লোজ ডাউন’ কর্মসূচি পালন করছে শিক্ষার্থীরা।এতে ওই কলেজে ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে সরকারের প্রতিক্রিয়া জানতে ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

তবে সরকার দাবি না মানলে আগামীকাল বুধবার থেকে আবারও সড়ক ও রেলপথ অবরোধে নামবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তারা এ কর্মসূচির নাম দিয়েছেন ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু মহাখালী’।

মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কলেজের প্রধান ফটকে অবস্থান কর্মসূচি থেকে এক ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এ ঘোষণা এসেছে।

ব্রিফিংয়ে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মতিউর রহমান জয় বলেন, ‘আজকে আমাদের দাবিগুলো নিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টাসহ সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা বসবেন বলে জেনেছি। সেখানে আমাদের প্রতিনিধি দলও থাকবে। এ বৈঠক থেকে দাবি মেনে নেওয়ার সুনির্দিষ্ট আশ্বাস না পেলে বুধবার বেলা ১১টা থেকে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করা হবে।’

ব্রিফিং শেষে ‘তিতুমীরের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘টিসি না টিইউ’, টিইউ টিইউ’, ‘ডিমান্ড টু গুলশান, ‘তিতুমীর ভার্সিটি’, ‘ডিমান্ড টু বনানী, তিতুমীর ভার্সিটি, ‘অধ্যক্ষ না ভিসি, ভিসি ভিসি’, ‘আমাদের ক্যাম্পাসে, আমরাই থাকব’, ‘ক্যাম্পাসে পুলিশ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে শোনা যায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রতি সম্মান জানিয়ে শেষবারের মতো তার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আজ শুধু ‘ক্লোজ ডাউন’ কর্মসূচি চলবে। তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত অন্য কোনো সিদ্ধান্ত নিলে বা কোনো রকম চক্রান্ত কেউ করলে তাৎক্ষণিকভাবে ‘বারাসাত ব্যারিকেড’ কর্মসূচি শুরু হবে। প্রয়োজনে আরও বড় কর্মসূচির ডাক দেওয়া হতে পারে।

এদিকে শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচিতে যেন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়, সেজন্য কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। এদিন কলেজের সামনে থেকে রেলগেট পর্যন্ত সড়কে সেনাবাহিনীর শতাধিক সদস্যকে অবস্থান নিতে দেখা গেছে।

দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীরা যেকোনো কর্মসূচি করতে পারেন। তবে সেটা কলেজের ভেতরেই করতে হবে। রাস্তা অবরোধ করলে যানজটে মানুষের ভোগান্তি হবে। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে কলেজে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে রাজধানীর মহাখালী এলাকায় গতকাল সাড়ে চার ঘণ্টা সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। এরপর আড়াই ঘণ্টা বিরতি দিয়ে সন্ধ্যায় আবার সড়ক অবরোধ করেন এবং পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে তারা অবরোধ তুলে নেন।

অবরোধের কারণে সড়কে যান চলাচল বন্ধের পাশাপাশি ঢাকার সঙ্গে প্রায় সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। মহাখালী উড়ালসড়ক ও এর নিচের বিমানবন্দর সড়কে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। দিনভর চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।

অবরোধের শুরুতে শিক্ষার্থীদের প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে কমলাপুরগামী একটি ট্রেন দ্রুতগতিতে মহাখালী রেলক্রসিং অতিক্রম করে। রেলপথ অবরোধ করা শিক্ষার্থীরা তখন ক্ষুব্ধ হয়ে ট্রেনে পাথর ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে ট্রেনে থাকা কয়েকজন যাত্রী আহত হন এবং ট্রেনের কিছু জানালার কাচ ভেঙে যায়।