ঢাকা , বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাইফ আলী খানের ওপর হামলায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি সম্পর্কে যা জানা গেল

বলিউড অভিনেতা সাইফ আলী খানের ওপর হামলার ঘটনায় আটক মুহাম্মদ শরিফুল ইসলাম শেহজাদ (৩৫) ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মোল্লারহাট ইউনিয়নের রাজাবাড়িয়া গ্রামের সন্তান। তার পিতা মো. রুহুল আমিন ফকির (৬০) এক সময় খুলনায় জুট মিলে চাকরি করতেন। তিন ভাইয়ের মধ্যে শরিফুল ইসলাম শেহজাদ (বিজয় দাশ) দ্বিতীয়।

শেহজাদ ঢাকা ও নলছিটি থানায় হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি। নলছিটিতে মোটরসাইকেল চালক রফিকুল ইসলাম হত্যা মামলার পর থেকেই তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। পরিবারের সঙ্গেও কোনো যোগাযোগ ছিল না তার। নলছিটির পুলিশ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও শেহজাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। এক সময় এলাকায় তিনি ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাতেন।

স্থানীয়রা জানান, শেহজাদ খুলনায় থাকাকালীন অবস্থায় মাদক ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত হয়ে বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে পড়েন। এতে বিরক্ত হয়ে তার পরিবার গ্রামের বাড়ি নলসিটিতে চলে আসেন। এলাকায় মাঝে মধ্যে আসা-যাওয়া থাকলেও স্থায়ী হননি শেহজাদ। একটা সময় পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল তার।

শেহজাদের ছোট ভাই মো. সালমান ফকির (১৬) জানান, শেহজাদ মোটরসাইকেল চালক রফিকুল হত্যা মামলার আসামি হওয়ার পর থেকেই ভারতে পালিয়ে যান। দেশে থাকা অবস্থায় বেশ কয়েকবার পুলিশের হাতেও আটক হন। ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর পরিবারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ আছে কি না সে বিষয়ে কিছুই জানেন না সালমান ফকির।

প্রতিবেশীরা জানান, শেহজাদের চলাফেরা একরোখা ও উগ্র স্বভাবের ছিল। অপরাধ করেও তার মধ্যে বিন্দুমাত্র অনুশোচনা ছিল না। একাধিকবার পুলিশের হাতেও আটক হয় শেহজাদ।

প্রতিবেশী রিন্টু হাওলাদার জানান, খুব কম বয়সে বিয়ে করেছিল সে। তবে সেই সংসার বেশি দিন টেকেনি। সে সংসারে কোনো সন্তান ছিল না বলেও জানান তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজাবাড়িয়া এলাকার একাধিক লোকজন জানান, তার সঙ্গে এলাকার মানুষজনের সম্পর্কের অবনতির কারণ, তিনি যখন যা ইচ্ছেতাই করতেন। চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, হত্যাসহ একাদিক মামলাও রয়েছে শরিফুল ইসলাম শেহজাদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় জনতার হাতে একাধিকবার গণপিটুনির স্বীকারও হয়েছেন তিনি। তবুও বদলায়নি তার স্বভাব। একাধিক বিয়ে করলেও বর্তমানে কোনো স্ত্রী তার সঙ্গে নেই বলেও জানান তারা।

শেহজাদের বাবা রুহুল আমিন ফকির বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে শেহজাদের কোনো যোগাযোগ নেই। শুনেছি, সে ভারতে আটক হয়েছে। সে কবে, কিভাবে ভারত গেছে তাও আমাদের জানা নেই। খারাপ কাজ করলে সে শাস্তি পাবে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থাকলে সে শাস্তি মুক্ত হবে এটাই কামনা করছি।’

নলছিটি থানার ওসি আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমাদের কাছে এখনো কোনো বার্তা আসেনি। তবে শেহজাদের বিরুদ্ধে নলছিটি থানায় মামলা ছিল। ঢাকায়-বরিশালেও হত্যা মামলা আছে। সে ছিনতাইয়ের সঙ্গেও জড়িত বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ আছে।’

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

সাইফ আলী খানের ওপর হামলায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি সম্পর্কে যা জানা গেল

আপডেট টাইম : ১৭ ঘন্টা আগে

বলিউড অভিনেতা সাইফ আলী খানের ওপর হামলার ঘটনায় আটক মুহাম্মদ শরিফুল ইসলাম শেহজাদ (৩৫) ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মোল্লারহাট ইউনিয়নের রাজাবাড়িয়া গ্রামের সন্তান। তার পিতা মো. রুহুল আমিন ফকির (৬০) এক সময় খুলনায় জুট মিলে চাকরি করতেন। তিন ভাইয়ের মধ্যে শরিফুল ইসলাম শেহজাদ (বিজয় দাশ) দ্বিতীয়।

শেহজাদ ঢাকা ও নলছিটি থানায় হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি। নলছিটিতে মোটরসাইকেল চালক রফিকুল ইসলাম হত্যা মামলার পর থেকেই তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। পরিবারের সঙ্গেও কোনো যোগাযোগ ছিল না তার। নলছিটির পুলিশ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও শেহজাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। এক সময় এলাকায় তিনি ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাতেন।

স্থানীয়রা জানান, শেহজাদ খুলনায় থাকাকালীন অবস্থায় মাদক ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত হয়ে বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে পড়েন। এতে বিরক্ত হয়ে তার পরিবার গ্রামের বাড়ি নলসিটিতে চলে আসেন। এলাকায় মাঝে মধ্যে আসা-যাওয়া থাকলেও স্থায়ী হননি শেহজাদ। একটা সময় পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল তার।

শেহজাদের ছোট ভাই মো. সালমান ফকির (১৬) জানান, শেহজাদ মোটরসাইকেল চালক রফিকুল হত্যা মামলার আসামি হওয়ার পর থেকেই ভারতে পালিয়ে যান। দেশে থাকা অবস্থায় বেশ কয়েকবার পুলিশের হাতেও আটক হন। ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর পরিবারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ আছে কি না সে বিষয়ে কিছুই জানেন না সালমান ফকির।

প্রতিবেশীরা জানান, শেহজাদের চলাফেরা একরোখা ও উগ্র স্বভাবের ছিল। অপরাধ করেও তার মধ্যে বিন্দুমাত্র অনুশোচনা ছিল না। একাধিকবার পুলিশের হাতেও আটক হয় শেহজাদ।

প্রতিবেশী রিন্টু হাওলাদার জানান, খুব কম বয়সে বিয়ে করেছিল সে। তবে সেই সংসার বেশি দিন টেকেনি। সে সংসারে কোনো সন্তান ছিল না বলেও জানান তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজাবাড়িয়া এলাকার একাধিক লোকজন জানান, তার সঙ্গে এলাকার মানুষজনের সম্পর্কের অবনতির কারণ, তিনি যখন যা ইচ্ছেতাই করতেন। চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, হত্যাসহ একাদিক মামলাও রয়েছে শরিফুল ইসলাম শেহজাদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় জনতার হাতে একাধিকবার গণপিটুনির স্বীকারও হয়েছেন তিনি। তবুও বদলায়নি তার স্বভাব। একাধিক বিয়ে করলেও বর্তমানে কোনো স্ত্রী তার সঙ্গে নেই বলেও জানান তারা।

শেহজাদের বাবা রুহুল আমিন ফকির বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে শেহজাদের কোনো যোগাযোগ নেই। শুনেছি, সে ভারতে আটক হয়েছে। সে কবে, কিভাবে ভারত গেছে তাও আমাদের জানা নেই। খারাপ কাজ করলে সে শাস্তি পাবে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থাকলে সে শাস্তি মুক্ত হবে এটাই কামনা করছি।’

নলছিটি থানার ওসি আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমাদের কাছে এখনো কোনো বার্তা আসেনি। তবে শেহজাদের বিরুদ্ধে নলছিটি থানায় মামলা ছিল। ঢাকায়-বরিশালেও হত্যা মামলা আছে। সে ছিনতাইয়ের সঙ্গেও জড়িত বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ আছে।’