বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ কোরবানির ঈদ আসতে খুব বেশি দেরি নেই। পশুর হাটের ইজারা সম্পন্ন হয়েছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের খামারে প্রস্তুত রয়েছে কোরবানির পশু। ভারত থেকেও এবার কোরবানির গরু আসতে পারে। দেশে এখন প্রতিবছর এক কোটির কিছু বেশি পশু কোরবানি দেওয়া হয়। এর মধ্যে থাকে ৪০ থেকে ৪৫ লাখ গরু। দেশে গড়ে তোলা হয়েছে পাঁচ লাখের বেশি খামার। এগুলোই গত বছর গরুর চাহিদা মিটিয়েছে, এবারও সেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে খামারগুলো। এবার দেশে এক কোটি ১৫ লাখ ৫৭ হাজার পশু উৎপাদন হয়েছে শুধু কোরবানিকে ঘিরে। এর মধ্যে রয়েছে গরু, মহিষ, ভেড়া ও ছাগল। দেশে পাঁচ লাখ ২২ হাজার খামার গড়ে উঠেছে।
দেশের চামড়াশিল্পে বছরে যে পরিমাণ চামড়ার প্রয়োজন হয়, তার প্রায় অর্ধেক সংগ্রহ করা হয় কোরবানির ঈদে। পশু কোরবানির পর সারা দেশ থেকে সংগ্রহ করা কাঁচা চামড়া রাজধানীর পোস্তগোলাসহ বিভিন্ন আড়তে সংরক্ষণ করা হয়। দু-এক দিন পর ট্যানারি মালিকরা এসব চামড়া কিনে নিজস্ব ট্যানারিতে সংরক্ষণ করেন। চামড়া প্রক্রিয়াজাত করে সুবিধামতো তা পাকা করা হয়। এবার সমস্যা দেখা দিয়েছে ট্যানারি স্থানান্তরের কারণে। হাজারীবাগের সব ট্যানারি সাভারে স্থানান্তর করা হয়েছে। সেখানে প্লট পেয়েছে ১৫৫টি ট্যানারি। কিন্তু এসব ট্যানারির মধ্যে শুধু ৬৭টি সেখানে উৎপাদনে যেতে সক্ষম হয়েছে। বাকি ট্যানারিগুলো এখনো উপযুক্তভাবে গড়ে উঠতে পারেনি। বিশেষ করে কাঁচা চামড়া সংরক্ষণের উপযোগী হয়ে উঠতে পারেনি এসব কারখানা। নির্মাণকাজেও গতি নেই। এ অবস্থায় চলতি বছরের চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্য কী করে পূরণ হবে তা নিয়ে ব্যবসায়ীরা চিন্তিত। চলতি বছর ৩১ কোটি ৫০ লাখ বর্গফুট চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে কোরবানির ঈদে সংগ্রহ করা হবে ১৯ কোটি বর্গফুট। কিন্তু প্রায় অর্ধেক কারখানা যেখানে বন্ধ সেখানে বাকি কারখানাগুলো চামড়া কেনার জন্য আর্থিকভাবে সক্ষম কি না সে প্রশ্নটিই বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে দেশের অভ্যন্তরে পাওয়া চামড়া কিনতে স্থানীয় ট্যানারিগুলো ব্যর্থ হলে চামড়া পাচার হয়ে যেতে পারে—এমন আশঙ্কাও আছে। সব মিলিয়ে কোরবানির চামড়া নিয়ে দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে।
কোরবানির ঈদের চামড়া কেনা ও সংরক্ষণ আরো আগে থেকেই ভাবা উচিত ছিল। চামড়া শিল্পনগরীর সব কারখানায় গ্যাস সংযোগ থেকে শুরু করে অন্যান্য সুবিধা দেওয়া না হলে আরেকটি সংকট দেখা দেবে। তবে সবচেয়ে বড় সংকট দেখা দিতে পারে কারখানাগুলোর আর্থিক দিক থেকে। এ সংকট কাটাতে ব্যাংকগুলো এগিয়ে আসতে পারে। কোরবানির ঈদের সময় চামড়া কেনার জন্য ব্যাংক থেকে যে ঋণ দেওয়া হয় তার প্রবাহ এবার বাড়ানো যেতে পারে।