বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ আমাদের দেশে সহজলভ্য ও পুষ্টিকর ফল আমড়ার সাধারনত দুইটি প্রজাতির চাষ হয়। একটি দেশি আমড়া ও অপরটি বিলাতি আমড়া। তবে দেশি আমড়ার চাষ ইদানীং একেবারেই কমে গেছে। এর স্থান দখল করে নিয়েছে বিলাতি আমড়া। বিলাতি আমড়া দেশি আমড়ার মতো টক নয়। এটি খেতে টক-মিষ্টি স্বাদের। এতে শাঁস বেশি, আকারেও বড়। বিলাতি ও দেশি দুই ধরনের আমড়াই কাঁচা খাওয়া হয়। আমড়া থেকেই সুস্বাদু আচার, চাটনি এবং জেলি তৈরি করা যায়। তরকারি হিসেবে রান্না করেও আমড়া খাওয়া যায়।
প্রতি ১০০ গ্রাম ভক্ষণযোগ্য আমড়ায় ১ দশমিক ১ গ্রাম প্রোটিন, ১৫ গ্রাম শ্বেতসার, শূন্য দশমিক ১০ গ্রাম স্নেহ জাতীয় পদার্থ এবং ৮০০ মাইক্রোগ্রাম ক্যারোটিন আছে। এছাড়াও আছে শূন্য দশমিক ২৮ মিলিগ্রাম থায়ামিন, শূন্য দশিমক শূন্য চার মিলিগ্রাম রিবোফ্লাভিন, ৯২ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি, ৫৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম এবং তিন দশমিক নয় মিলিগ্রাম লৌহ। আমড়ার খাদ্যশক্তি ৬৬ কিলোক্যালোরি। খনিজ পদার্থ বা মিনারেলসের পরিমাণ শূন্য দশমিক ছয় গ্রাম।
মুখে রুচি বৃদ্ধিসহ অসংখ্য গুনাগুন রয়েছে আমড়ার। পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আমড়ায় প্রচুর পরিমান ভিটামিন সি, আয়রন, ক্যালসিয়াম আর আঁশ আছে, যেগুলো শরীরের জন্য খুব দরকারি। হজমেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই তেল ও চর্বিযুক্ত খাদ্য খাওয়ার পর আমড়া খেয়ে নিতে পারেন; হজমে সহায়ক হবে।
আমড়ায় প্রচুর ভিটামিন সি থাকায় এটি খেলে স্কার্ভি রোগ এড়ানো যায়। বিভিন্ন প্রকার ভাইরাল ইনফেকশনের বিরুদ্ধেও লড়তে পারে আমড়া। অসুস্থ ব্যক্তিদের মুখের স্বাদ ফিরিয়ে দেয়। সর্দি-কাশি-জ্বরের উপশমেও আমড়া অত্যন্ত উপকারী।
শিশুর দৈহিক গঠনে ক্যালসিয়াম খুব দরকারি। ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস এই আমড়া। শিশুদের এই ফল খেতে উৎসাহিত করতে পারেন। এছাড়া এটি রক্তস্বল্পতাও দূর করে। কিছু ভেষজ গুণ আছে আমড়ায়। এটি পিত্তনাশক ও কফনাশক। আমড়া খেলে মুখে রুচি ফেরে, ক্ষুধা বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে।
এছাড়া আমড়ায় থাকা ভিটামিন সি রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। খাদ্যে থাকা ভিটামিন এ এবং ই এটির সঙ্গে যুক্ত হয়ে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে দেহকে নানা ঘাত-প্রতিঘাত থেকে রক্ষা করে।