ঢাকা , শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইনুর নৌকা আছে, মশাল দরকার কী

নৌকা প্রতীক নিয়ে জাতীয় নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন হাসানুল হক ইনু । এখন তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী। অন্যদিকে অপর অংশ নাজমুল হক প্রধান নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন মশাল প্রতীক নিয়ে। তারপরও ইনু কীভাবে মশালের দাবি করেন ইনু- প্রশ্ন তুলেছেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক।

বুধবার (২২ জুন) জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) দলীয় প্রতীক মশাল বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে করা রিভিউ আবেদন আগামী ৩০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। শুনানিতে আম্বিয়া গ্রুপের আইনজীবী ছিলেন শাহদীন মালিক। আদেশের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরীফ নুরুল আম্বিয়ার নেতৃত্বধীন জাসদ নেতা নাজমুল হক প্রধান জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন মশাল প্রতীক নিয়ে। আর হাসানুল হক ইনু নৌকায় ভর করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। ইনু দল করবেন জাসদ, নির্বাচন করবেন নৌকা প্রতীক নিয়ে। এটি মোটেও ঠিক না।’ এ জন্য নাজমুল হক প্রধানকেই (জাসদ) মশাল প্রতীক বরাদ্দ দেয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

নির্বাচন কমিশন হঠাৎ করেই এক তরফাভাবে ইনু ও শিরিন আক্তারের নেতৃত্বাধীন জাসদকে মশাল প্রতীক দিয়ে দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন শাহদ্বীন মালিক। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন এভাবে সিদ্ধান্ত দিতে পারেন না।’

শাহদ্বীন মালিক বলেন, ‘আমরা ইসির এ সিদ্ধান্তের পুনর্বিবেচনা চেয়ে আপিল করি। কিন্তু দেড় মাস পার হয়ে গেলেও এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন কোনো সিদ্ধান্ত না দেয়ায় আমরা উচ্চ আদালতে আসি। শুনানি করে আজ আদালত এ আদেশ দেন।’

এসময় আদালত প্রাঙ্গণে থাকা জাসদের কয়েকজন নেতাকর্মীও উপস্থিত ছিলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ‘নেতা’ বলেন, ‘হাসানুল হক ইনু যেহেতু নৌকা নিয়ে নির্বাচন করেছেন, তাহলে তার আর মশাল কী দরকার?’

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি দলটির কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে বিভক্ত হয় জাসদ। শরীফ নুরুল আম্বিয়ার নেতৃত্বে একটি পক্ষ কাউন্সিলে বিদ্রোহ ঘোষণা করে দল থেকে বের হয়ে যায়। তারা নতুন একটি কমিটি গঠন করে, যেখানে তাকে সভাপতি, নাজমুল হক প্রধানকে সাধারণ সম্পাদক এবং মঈনুদ্দীন খান বাদলকে কার্যকরী সভাপতি করা হয়। এ কমিটির তালিকা ইসিতে পাঠিয়ে এই পক্ষ চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে তাদের সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীকে ‘মশাল’ প্রতীক দেয়ার দাবি জানায়।

এদিকে অপরপক্ষটি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে সভাপতি এবং শিরীন আখতারকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠন করে। তারাও ইউপি নির্বাচনে তাদের সমর্থিত ২৭ চেয়ারম্যান প্রার্থীকে ‘মশাল’ প্রতীক দেয়ার দাবি জানায়।

নিজেদের মূল জাসদ দাবি করে নিবন্ধন ও মশাল প্রতীক চেয়ে নির্বাচন কমিশনে দ্বারস্থ হয় দুই পক্ষই। বিষয়টি নিষ্পত্তিতে ৬ এপ্রিল শুনানি করে কমিশন। পরে ১৩ এপ্রিল ইনু-শিরিনের নেতৃত্বাধীন জাসদকেই মূলধারা হিসেবে স্বীকৃতি দেয় সাংবিধানিক এ সংস্থাটি। এরপরই ইসির এ রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করেন বিভক্ত জাসদের একাংশের কার্যকরি সভাপতি মইন উদ্দিন খান বাদল।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

ইনুর নৌকা আছে, মশাল দরকার কী

আপডেট টাইম : ০৫:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জুন ২০১৬

নৌকা প্রতীক নিয়ে জাতীয় নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন হাসানুল হক ইনু । এখন তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী। অন্যদিকে অপর অংশ নাজমুল হক প্রধান নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন মশাল প্রতীক নিয়ে। তারপরও ইনু কীভাবে মশালের দাবি করেন ইনু- প্রশ্ন তুলেছেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক।

বুধবার (২২ জুন) জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) দলীয় প্রতীক মশাল বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে করা রিভিউ আবেদন আগামী ৩০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। শুনানিতে আম্বিয়া গ্রুপের আইনজীবী ছিলেন শাহদীন মালিক। আদেশের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরীফ নুরুল আম্বিয়ার নেতৃত্বধীন জাসদ নেতা নাজমুল হক প্রধান জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন মশাল প্রতীক নিয়ে। আর হাসানুল হক ইনু নৌকায় ভর করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। ইনু দল করবেন জাসদ, নির্বাচন করবেন নৌকা প্রতীক নিয়ে। এটি মোটেও ঠিক না।’ এ জন্য নাজমুল হক প্রধানকেই (জাসদ) মশাল প্রতীক বরাদ্দ দেয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

নির্বাচন কমিশন হঠাৎ করেই এক তরফাভাবে ইনু ও শিরিন আক্তারের নেতৃত্বাধীন জাসদকে মশাল প্রতীক দিয়ে দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন শাহদ্বীন মালিক। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন এভাবে সিদ্ধান্ত দিতে পারেন না।’

শাহদ্বীন মালিক বলেন, ‘আমরা ইসির এ সিদ্ধান্তের পুনর্বিবেচনা চেয়ে আপিল করি। কিন্তু দেড় মাস পার হয়ে গেলেও এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন কোনো সিদ্ধান্ত না দেয়ায় আমরা উচ্চ আদালতে আসি। শুনানি করে আজ আদালত এ আদেশ দেন।’

এসময় আদালত প্রাঙ্গণে থাকা জাসদের কয়েকজন নেতাকর্মীও উপস্থিত ছিলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ‘নেতা’ বলেন, ‘হাসানুল হক ইনু যেহেতু নৌকা নিয়ে নির্বাচন করেছেন, তাহলে তার আর মশাল কী দরকার?’

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি দলটির কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে বিভক্ত হয় জাসদ। শরীফ নুরুল আম্বিয়ার নেতৃত্বে একটি পক্ষ কাউন্সিলে বিদ্রোহ ঘোষণা করে দল থেকে বের হয়ে যায়। তারা নতুন একটি কমিটি গঠন করে, যেখানে তাকে সভাপতি, নাজমুল হক প্রধানকে সাধারণ সম্পাদক এবং মঈনুদ্দীন খান বাদলকে কার্যকরী সভাপতি করা হয়। এ কমিটির তালিকা ইসিতে পাঠিয়ে এই পক্ষ চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে তাদের সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীকে ‘মশাল’ প্রতীক দেয়ার দাবি জানায়।

এদিকে অপরপক্ষটি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে সভাপতি এবং শিরীন আখতারকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠন করে। তারাও ইউপি নির্বাচনে তাদের সমর্থিত ২৭ চেয়ারম্যান প্রার্থীকে ‘মশাল’ প্রতীক দেয়ার দাবি জানায়।

নিজেদের মূল জাসদ দাবি করে নিবন্ধন ও মশাল প্রতীক চেয়ে নির্বাচন কমিশনে দ্বারস্থ হয় দুই পক্ষই। বিষয়টি নিষ্পত্তিতে ৬ এপ্রিল শুনানি করে কমিশন। পরে ১৩ এপ্রিল ইনু-শিরিনের নেতৃত্বাধীন জাসদকেই মূলধারা হিসেবে স্বীকৃতি দেয় সাংবিধানিক এ সংস্থাটি। এরপরই ইসির এ রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করেন বিভক্ত জাসদের একাংশের কার্যকরি সভাপতি মইন উদ্দিন খান বাদল।