বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার বাঁশমালি সম্প্রদায়ের মানুষরা বাঁশের পণ্যসামগ্রী তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। বংশ পরস্পমরায় এ সম্প্রদায়ের শিশু থেকে বৃদ্ধারা প্রত্যেকেই বাঁশের পণ্য তৈরির কাজ করেন।
উপজেলার কাঠালডাঙ্গী হারিপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির আঙ্গিনায় পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও বাঁশের পণ্য তৈরির কাজ করছেন। তৈরি করছেন চাটাই,কুলা,পাখা,ডালি,খাঁচি,খেলনা ভাঁড়সহ নানান পণ্যসামগ্রী। এগুলো বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়েই চলে বাঁশমালিদের সংসার। একই চিত্র দেখা যায় উপজেলার পতনডোবা,খোলড়া গ্রামের সকালে বাঁশ সংগ্রহের মধ্যদিয়ে কাজ শুরু করেন।
বাঁশমালির বতরিস বলেন, সকালে বাঁশ কেটে ফালি করে রোদে শুকানো পর স্ত্রীকে নিয়ে সানাদিন ডালি,খাঁচি ও কুলা তৈরি করি। স্কুল শেষে ছেলে-মেয়েরাও আমাদের কাজে সহযোগীতা করেন।
ঝেলঝেলি রানী জানান,আগে সহজে বাঁশ সংগ্রহ করা যেত। এখন বাঁশের সংকট হওয়ায় দাম বেড়েছে। তাই লাভ খুব কম হচ্ছে।
ধান ও গম মাড়াইয়ের মৌসুমে বাঁশের তৈরি কুলা,ডালি এসব পণ্যের চাহিদা বলে জানান রবি,মঙ্গলু।
তিনি আরো বলেন,পরিবারের সবাই মিলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বাঁশের জিনিস তৈরি করি। আর হাটের দিন এইসব পণ্য বিক্রি করি।
সরকারি ভাবে যদি কোনো সাহায্য বা আর্থিক ঋণ দেওয়া হয় তাহলে অনেক পণ্য তৈরি ও বিক্রি করে আমরা বাঁশমালিরা স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে পারবো। পণ্য তৈরিতে যদি খরচ হয় ৫০০ টাকা এতে লাভ হয় মাত্র ১০০ টাকা। তা দিয়ে কোনমত সংসারের খরচ চলে। এমনটাই জানান বিশু,নরেশ মিঠু।
একাধিক বাঁশমালি অভিযোগ করে বলেন, বাঁশ কারিগরদের প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের তৈরি পণ্য বাজারজাতকরণ। বর্তমানে তাদের তৈরি পণ্য বাজারজাত করতে স্থানীয় পাইকার সৃষ্টি হয়েছে।
আর তাদের কাছে এই বাঁশের শিল্পীরা জিম্মি হয়ে পড়েছেন।
এই স্থানীয় পাইকারদের কাছ থেকে আগাম টাকা নিয়ে বাঁশ শিল্পীরা বাঁশ সংগ্রহ করে পণ্য তৈরি করেন।
ফলে কম দামে পাইকারার তাদের কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করে বিভিন্ন হাটে বাজারে বিক্রি করেন।
যুগের পর যুগ এই বাঁশ শিল্পীদের ভাগ্যের পরিবর্তন না হলও তাদের এই শ্রম ও শৈল্পিক কাজের পুরো মুনাফাটা লুটে নিয়েছে মধ্যসত্ত্বভোগী পাইতার গোষ্ঠী।