বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলার বাঙ্গালপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক-শিক্ষিকা অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগে চাকরি হারাতে বসেছেন।
গত ২৮ ডিসেম্বর বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির এক বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে চাকরিতে ইস্তফা দিতে বলা হয়।
জানা যায়, বাঙ্গালপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিযুক্ত গণিতের শিক্ষক নাজমুল হক একই প্রতিষ্ঠানের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষিকার সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। কিছুদিন আগে ঐ শিক্ষিকা স্কুলের প্রধান শিক্ষক শহীদুল ইসলামের কাছে ছয় মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটির আবেদন করেন।
তখনই বিষয়টি জানাজানি হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অনেকেই বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা করে। তোপের মুখে পড়ে অভিযুক্ত দুইজনই স্বীকার করেন তারা বিয়ে করেছেন।
এরই ফলশ্রুতিতে গত ২৮ ডিসেম্বর বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির এক বৈঠকে বসে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্কুলের সুনাম ক্ষুন্ন হওয়ায় তাদের দুইজনকেই পরের দিন চাকরিতে ইস্তফা দিতে বলা হয়।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির এক সদস্য বাঙালী কণ্ঠকে জানান, কমিটির কাছে অভিযুক্ত শিক্ষক নাজমুল হক দাবি করেছেন তারা দুজন পারিবারিকভাবে বিয়ে করেছেন। শুধুমাত্র বিষয়টি এতদিন প্রকাশ করা হয়নি। আর এ কারণে যদি শাস্তি পেতে হয় তবে তিনি ইস্তফা না দিয়ে ঐ শিক্ষিকা ইস্তফা দিবেন বলে জানান। কিন্তু কমিটির কাছে শিক্ষকের কথা বিশ্বাসযোগ্য মনে করেনি। কমিটির মতে যদি বিয়েই করে থাকবেন তবে সেটি শিক্ষিকা গর্ভবতী হওয়ার পরে কেন প্রকাশ পাবে।
তিনি আরো বলেন, ঐ শিক্ষক যেন পুনরায় কোন ধরণের একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নিতে না পারেন সেজন্য বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি থানা প্রশাসনের সহায়তা চেয়েছে।
শিক্ষিকার ইস্তফার বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত শিক্ষক নাজমুল হক বাঙালী কণ্ঠকে বলেন, তিনি শুধু নিজের ইস্তফার বিষয়টি নিয়ে অনুরোধ করেছেন, শিক্ষিকার ইস্তফার বিষয়টি নিয়ে তিনি কথা বলেননি। নাজমুল দাবি করেন দুই পরিবারের সম্মতিক্রমে ২০১৪ সালের ১৫ নভেম্বর তারা বিয়ে করেছেন। অনেকেই বিষয়টি জানে। সুতরাং অবৈধ সম্পর্কের কোন প্রশ্নই আসতে পারে না। অভিযোগ শুধু বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখার জন্য।
তিনি জানান বিয়ের সমস্ত প্রমাণাদি তার কাছে আছে। এটি তাদের দুইজনেরই দ্বিতীয় বিয়ে। এই অপরাধে তারা দুইজনের বেতন বকেয়া রেখেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এতে তারা অর্থকষ্টে ভোগছেন। এখন বিয়ের কারণে যদি দুইজনেরই চাকরি চলে যায় তবে মরণ ছাড়া কোন উপায় থাকবে না।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সাংবাদিক পরিচয়ে ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়ে বাঙ্গালপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহীদুল ইসলামের কাছে টানা তিনদিন একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি এবং ফিরতি কলও করেনি।