ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আইনের আওতায় কিন্ডারগার্টেন

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ মাইলের পর মাইল হেঁটে গিয়ে একসময় মানুষ লেখাপড়া করত। এমনকি কয়েক ইউনিয়ন মিলে একটি স্কুল থাকত আর দূরদূরান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা পড়তে আসত। ভোরবেলা স্কুলের উদ্দেশে এলাকার সব ছেলেমেয়ে একসঙ্গে হেঁটে বাড়ি থেকে বের হতো, ঘণ্টা পড়ার ঠিক কিছুক্ষণ আগে স্কুলে গিয়ে উপস্থিত হতো। সময় পরিবর্তন হয়েছে, দেশ আধুনিকতার ছোঁয়ায় ভাসছে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করছি আমরা। কুঁড়েঘর থেকে পাঁচতলা ভবনে বাস করছি এখন। বর্তমানে শুধু গল্প শুনি দাদাদের সময়ে নাকি গরুর গাড়ি করে জামাই বিয়ে করতে শ্বশুরবাড়ি যেত। আর এখন হেলিকপ্টারে করে জামাই শ্বশুরবাড়ি যায়। গ্রামের আঁকাবাঁকা মেঠোপথ থেকে সরাসরি যেমন আকাশ পথে উড়াল দিয়েছে, ঠিক তেমনই কিছু কিছু ক্ষেত্রে উন্নতি করতে গিয়ে অতিরিক্ত হওয়ায় তা সমাজের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

একসময় যেমন কয়েক ইউনিয়ন মিলে একটি স্কুল ছিল আর এখন মনে হয় প্রতি গজে গজে একটি স্কুল হয়েছে। যত্রতত্র ব্যাঙের ছাতার মতো কিন্ডারগার্টেন গজিয়েছে। প্রতি পাড়া-মহল্লায় একাধিক স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠিত করার সরকারি কোনো আইনের তুয়াক্কা না করেই প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠান। মার্কেটের ওপর, মহাসড়কের পাশে আবদ্ধ জায়গায় সম্পূর্ণ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পরিচালিত হচ্ছে এই কিন্ডারগার্টেনগুলো। অদক্ষ শিক্ষকমণ্ডলী দ্বারা পাঠদান করানো হচ্ছে। এই শিক্ষকদের অধিকাংশই কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া। খুব সামান্য বেতনে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে তাদের। কিছুদিন পরপর শিক্ষক পরিবর্তন করাও এসব কিন্ডারগার্টেন মালিকদের কৌশল যাতে ওই শিক্ষকদের এক-দুই মাসের বেতন না দিতে হয়।

অল্প কয়েক দিন আগে আমাদের গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনায় একেবারে প্রধান সড়কঘেঁষে প্রতিষ্ঠিত গাজীপুর শাহীন ক্যাডেট একাডেমি নামের একটি প্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষক চতুর্থ শ্রেণির কক্ষে শিক্ষার্থীরা উচ্চশব্দে জাতীয় সংগীত পাঠ করার অপরাধে শ্রেণিকক্ষে থাকা ২০ শিক্ষার্থীকে স্কেল দিয়ে বেদম প্রহার করে। এমনকি কয়েকজন মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে কেটে যায়। এ নিয়ে পুরো উপজেলায় হইচই পড়ে যায়। পরে অবশ্য ওই শিক্ষককে তাৎক্ষণিক বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু প্রশ্ন হলো, ওই শিক্ষককে শুধু বহিষ্কার করলেই কি এ সমস্যার সমাধান হবে? ওই ঘটনায় উপজেলা শিক্ষা অফিসারের প্রতিবেদনে জানা যায়, মাত্র ১৮ দিন হয়েছে অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের শিক্ষকতার বয়স। কোনো ধরনেরর পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়াই তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। ফলে কোমলমতি শিশুদের এ ধরনের নির্মম খেসারত দিতে হয়েছে। তা ছাড়া ওই স্কুলটি সরকারের শিক্ষক নিয়োগের নীতিমালা যে শুধু অমান্য করছে তা কিন্তু নয়, প্রধান সড়কের পাশে মার্কেটপ্লেসে গড়ে তুলেছে তাদের এ প্রতিষ্ঠান। স্কুলের মাঠ নেই যে শিশুরা একটু-আধটু ছোটাছুটি করবে। তাদের শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৫০০, শিক্ষক শতাধিক এবং অন্যান্য স্টাফ ও অভিভাবক মিলে প্রায় ৩ থেকে ৪ হাজার লোকের প্রতি মূহূর্তেই গমনাগমন সেখানে। যেহেতু স্কুলের ভেতরে তেমন জায়গা নেই, সেহেতু স্কুল চলাকালে রাস্তায় অসহনীয় যানজটের সৃষ্টি হয়। সুতরাং শিক্ষাবোদ্ধাদের মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় কিংবা স্থানীয় প্রশাসন আইনের কোনো ধারায় এদের স্কুল প্রতিষ্ঠা করার অনুমতি দিয়েছে?

কেউ কেউ খুব রস করে বলেন, এগুলোকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বলা মোটেও উচিত না। বরং এগুলো হচ্ছে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। যেহেতু এসব কিন্ডারগার্টেন ব্যক্তি মালিকানাধীন, সেহেতু নিজেদের ইচ্ছেমতো শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন ও অন্যান্য ফি নির্ধারণ করে থাকে। এ ছাড়াও শিক্ষা মন্ত্রণালয় যেখানে বছরে মাত্র দুটো পরীক্ষার আইন করেছে। সেখানে তারা প্রত্যেক মাসেই পরীক্ষার নামে একদিকে যেমন মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে, অন্যদিকে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত পরীক্ষার চাপে মেধানাশের সম্ভাবনাও তৈরি করছে। এ ছাড়া বিভিন্ন অজুহাতেই এসব কিন্ডারগার্টেনগুলো টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সম্প্রতি এসব প্রতিষ্ঠান পরিচালকরা আরো একটি নতুন কৌশল অবলম্বন করছে, তা হলো ক্লাস পার্টির নামে জনপ্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা নিচ্ছে। একটি প্রতিষ্ঠানে যদি ২ হাজার শিক্ষার্থী হয়, তবে কত টাকা নেওয়া হচ্ছে ভাবা যায়? কিন্তু ক্লাস পার্টিতে তার অর্ধেক টাকাও খরচ করা হয় না।

অনেকেই এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষে কথা বলে। তাদের ধারণা সরকারি স্কুলগুলোয় লেখাপড়া হয় না। প্রাইভেট স্কুল কিংবা কিন্ডারগার্টেনের সব শিক্ষার্থীই জিপিএ-৫ পায় আর সরকারি স্কুলে পায় না। এবার শুনেন এই কিন্ডারগার্টেনগুলো কীভাবে জাতীর মেধা গ্রাস করছে। তার শুধু একটি উদাহরণ দিয়েই লেখা শেষ করছি। এখন থেকে ঠিক ১৫-১৬ বছর আগেও কিন্তু প্রশ্ন ফাঁসের তেমন কোনো সাড়াশব্দ ছিল না। আর এখনকার চিত্র সবার জানা। এই যে প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে, কেন হচ্ছে আর কীভাবে হচ্ছে এবং এর পেছনেই বা কারা? এসব কিন্ডারগার্টেন যখন থেকে প্রতিষ্ঠা লাভ শুরু করল, ঠিক তখন থেকেই দেশে শুরু হলো প্রশ্ন ফাঁস। প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান নামের এসব কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীদের নৈতিক বা আদর্শের শিক্ষাদান বাদ দিয়ে কীভাবে প্রতিষ্ঠানের রেজাল্ট ভালো করা যায় সেই নেশায় মরিয়া হয়ে উঠেছে। ফলে প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে আগামী দিনের প্রজন্মকে নিশ্চিত ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে, তাতে বিন্দু পরিমাণও সন্দেহ নেই। কোচিং বাণিজ্য ও প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে এই প্রাইভেট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোই ওতপ্রোতভাবে জড়িত, যা এখন আর অস্বীকার করার উপায় নেই। সুতরাং সরকার বাহাদুরকে এখনই এসব কিন্ডারগার্টেন নামের ভূঁইফুর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাভিমূল টেনে ধরতে হবে। অন্যথায় জাতি অদূর ভবিষ্যতে মেধাশূন্য ভূমিতে রূপান্তরিত হবে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

আইনের আওতায় কিন্ডারগার্টেন

আপডেট টাইম : ১১:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৮

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ মাইলের পর মাইল হেঁটে গিয়ে একসময় মানুষ লেখাপড়া করত। এমনকি কয়েক ইউনিয়ন মিলে একটি স্কুল থাকত আর দূরদূরান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা পড়তে আসত। ভোরবেলা স্কুলের উদ্দেশে এলাকার সব ছেলেমেয়ে একসঙ্গে হেঁটে বাড়ি থেকে বের হতো, ঘণ্টা পড়ার ঠিক কিছুক্ষণ আগে স্কুলে গিয়ে উপস্থিত হতো। সময় পরিবর্তন হয়েছে, দেশ আধুনিকতার ছোঁয়ায় ভাসছে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করছি আমরা। কুঁড়েঘর থেকে পাঁচতলা ভবনে বাস করছি এখন। বর্তমানে শুধু গল্প শুনি দাদাদের সময়ে নাকি গরুর গাড়ি করে জামাই বিয়ে করতে শ্বশুরবাড়ি যেত। আর এখন হেলিকপ্টারে করে জামাই শ্বশুরবাড়ি যায়। গ্রামের আঁকাবাঁকা মেঠোপথ থেকে সরাসরি যেমন আকাশ পথে উড়াল দিয়েছে, ঠিক তেমনই কিছু কিছু ক্ষেত্রে উন্নতি করতে গিয়ে অতিরিক্ত হওয়ায় তা সমাজের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

একসময় যেমন কয়েক ইউনিয়ন মিলে একটি স্কুল ছিল আর এখন মনে হয় প্রতি গজে গজে একটি স্কুল হয়েছে। যত্রতত্র ব্যাঙের ছাতার মতো কিন্ডারগার্টেন গজিয়েছে। প্রতি পাড়া-মহল্লায় একাধিক স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠিত করার সরকারি কোনো আইনের তুয়াক্কা না করেই প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠান। মার্কেটের ওপর, মহাসড়কের পাশে আবদ্ধ জায়গায় সম্পূর্ণ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পরিচালিত হচ্ছে এই কিন্ডারগার্টেনগুলো। অদক্ষ শিক্ষকমণ্ডলী দ্বারা পাঠদান করানো হচ্ছে। এই শিক্ষকদের অধিকাংশই কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া। খুব সামান্য বেতনে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে তাদের। কিছুদিন পরপর শিক্ষক পরিবর্তন করাও এসব কিন্ডারগার্টেন মালিকদের কৌশল যাতে ওই শিক্ষকদের এক-দুই মাসের বেতন না দিতে হয়।

অল্প কয়েক দিন আগে আমাদের গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনায় একেবারে প্রধান সড়কঘেঁষে প্রতিষ্ঠিত গাজীপুর শাহীন ক্যাডেট একাডেমি নামের একটি প্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষক চতুর্থ শ্রেণির কক্ষে শিক্ষার্থীরা উচ্চশব্দে জাতীয় সংগীত পাঠ করার অপরাধে শ্রেণিকক্ষে থাকা ২০ শিক্ষার্থীকে স্কেল দিয়ে বেদম প্রহার করে। এমনকি কয়েকজন মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে কেটে যায়। এ নিয়ে পুরো উপজেলায় হইচই পড়ে যায়। পরে অবশ্য ওই শিক্ষককে তাৎক্ষণিক বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু প্রশ্ন হলো, ওই শিক্ষককে শুধু বহিষ্কার করলেই কি এ সমস্যার সমাধান হবে? ওই ঘটনায় উপজেলা শিক্ষা অফিসারের প্রতিবেদনে জানা যায়, মাত্র ১৮ দিন হয়েছে অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের শিক্ষকতার বয়স। কোনো ধরনেরর পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়াই তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। ফলে কোমলমতি শিশুদের এ ধরনের নির্মম খেসারত দিতে হয়েছে। তা ছাড়া ওই স্কুলটি সরকারের শিক্ষক নিয়োগের নীতিমালা যে শুধু অমান্য করছে তা কিন্তু নয়, প্রধান সড়কের পাশে মার্কেটপ্লেসে গড়ে তুলেছে তাদের এ প্রতিষ্ঠান। স্কুলের মাঠ নেই যে শিশুরা একটু-আধটু ছোটাছুটি করবে। তাদের শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৫০০, শিক্ষক শতাধিক এবং অন্যান্য স্টাফ ও অভিভাবক মিলে প্রায় ৩ থেকে ৪ হাজার লোকের প্রতি মূহূর্তেই গমনাগমন সেখানে। যেহেতু স্কুলের ভেতরে তেমন জায়গা নেই, সেহেতু স্কুল চলাকালে রাস্তায় অসহনীয় যানজটের সৃষ্টি হয়। সুতরাং শিক্ষাবোদ্ধাদের মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় কিংবা স্থানীয় প্রশাসন আইনের কোনো ধারায় এদের স্কুল প্রতিষ্ঠা করার অনুমতি দিয়েছে?

কেউ কেউ খুব রস করে বলেন, এগুলোকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বলা মোটেও উচিত না। বরং এগুলো হচ্ছে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। যেহেতু এসব কিন্ডারগার্টেন ব্যক্তি মালিকানাধীন, সেহেতু নিজেদের ইচ্ছেমতো শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন ও অন্যান্য ফি নির্ধারণ করে থাকে। এ ছাড়াও শিক্ষা মন্ত্রণালয় যেখানে বছরে মাত্র দুটো পরীক্ষার আইন করেছে। সেখানে তারা প্রত্যেক মাসেই পরীক্ষার নামে একদিকে যেমন মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে, অন্যদিকে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত পরীক্ষার চাপে মেধানাশের সম্ভাবনাও তৈরি করছে। এ ছাড়া বিভিন্ন অজুহাতেই এসব কিন্ডারগার্টেনগুলো টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সম্প্রতি এসব প্রতিষ্ঠান পরিচালকরা আরো একটি নতুন কৌশল অবলম্বন করছে, তা হলো ক্লাস পার্টির নামে জনপ্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা নিচ্ছে। একটি প্রতিষ্ঠানে যদি ২ হাজার শিক্ষার্থী হয়, তবে কত টাকা নেওয়া হচ্ছে ভাবা যায়? কিন্তু ক্লাস পার্টিতে তার অর্ধেক টাকাও খরচ করা হয় না।

অনেকেই এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষে কথা বলে। তাদের ধারণা সরকারি স্কুলগুলোয় লেখাপড়া হয় না। প্রাইভেট স্কুল কিংবা কিন্ডারগার্টেনের সব শিক্ষার্থীই জিপিএ-৫ পায় আর সরকারি স্কুলে পায় না। এবার শুনেন এই কিন্ডারগার্টেনগুলো কীভাবে জাতীর মেধা গ্রাস করছে। তার শুধু একটি উদাহরণ দিয়েই লেখা শেষ করছি। এখন থেকে ঠিক ১৫-১৬ বছর আগেও কিন্তু প্রশ্ন ফাঁসের তেমন কোনো সাড়াশব্দ ছিল না। আর এখনকার চিত্র সবার জানা। এই যে প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে, কেন হচ্ছে আর কীভাবে হচ্ছে এবং এর পেছনেই বা কারা? এসব কিন্ডারগার্টেন যখন থেকে প্রতিষ্ঠা লাভ শুরু করল, ঠিক তখন থেকেই দেশে শুরু হলো প্রশ্ন ফাঁস। প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান নামের এসব কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীদের নৈতিক বা আদর্শের শিক্ষাদান বাদ দিয়ে কীভাবে প্রতিষ্ঠানের রেজাল্ট ভালো করা যায় সেই নেশায় মরিয়া হয়ে উঠেছে। ফলে প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে আগামী দিনের প্রজন্মকে নিশ্চিত ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে, তাতে বিন্দু পরিমাণও সন্দেহ নেই। কোচিং বাণিজ্য ও প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে এই প্রাইভেট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোই ওতপ্রোতভাবে জড়িত, যা এখন আর অস্বীকার করার উপায় নেই। সুতরাং সরকার বাহাদুরকে এখনই এসব কিন্ডারগার্টেন নামের ভূঁইফুর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাভিমূল টেনে ধরতে হবে। অন্যথায় জাতি অদূর ভবিষ্যতে মেধাশূন্য ভূমিতে রূপান্তরিত হবে।