ঢাকা , সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যেভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র এনআইডি সংশোধন

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও তাতে সংরক্ষিত তথ্য-উপাত্ত সংশোধন, যাচাই ও সরবরাহের দায়িত্ব বণ্টনের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছেন নির্বাচন কমিশন।
এ উপলক্ষে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ক, খ, গ ও ঘ এই চার শ্রেণিতে এনআইডি সংশোধন নিষ্পত্তি করা হবে। পরে সংশ্লিষ্ট থানা বা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে সংশোধিত সাময়িক জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করবেন আবেদনকারী।
নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সংশোধনের জন্য করা আবেদন নিষ্পত্তির জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নির্ধারণ করা হলো। জাতীয় পরিচয়পত্র ও সংরক্ষিত তথ্য-উপাত্ত সংশোধনের সব আবেদন উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তা পর্যায়ে গ্রহণ ও প্রক্রিয়াকরণ করতে হবে।
‘ক’ শ্রেণির সংশোধন আবেদন উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তা উপস্থাপন করবেন এবং তা নিষ্পত্তি করবেন জ্যেষ্ঠ জেলা বা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। এই শ্রেণিতে ২২ ধরনের তথ্য পরিবর্তন করতে আবেদন করা যাবে।
এগুলো হলো নিজ নামের বানান সংশোধন (নাম পরিবর্তন বাদে), নিজ মূল নাম ঠিক রেখে নামের আংশিক পরিবর্তন (যেমন—নাজমা বেগম থেকে নাজমা সুলতানা), নাম সংশোধন (বিদ্যমান জাতীয় পরিচয়পত্রে বর্ণিত বাংলা নাম অনুসারে ইংরেজি নাম কিংবা ইংরেজি নাম অনুসারে বাংলা নাম), পিতা/মাতার মূল নাম ঠিক রেখে আংশিক পরিবর্তন হলে (যেমন— মো. সাইফুল ইসলাম থেকে মো. সাইফুল শেখ), পিতা/মাতার নামের বানান সংশোধন (নাম পরিবর্তন বাদে। যেমন— আফজোল গাজী থেকে আফজাল গাজী), স্বামী/স্ত্রীর মূল নাম ঠিক রেখে নামের আংশিক পরিবর্তন (যেমন—শহিদুজ্জামান হাওলাদার থেকে মো. শহিদুজ্জামান), স্বামী/স্ত্রীর নামের বানান সংশোধন (নাম পরিবর্তন বাদে; যেমন—আ. রেহমান থেকে আব্দুর রহমান), পিতা/মাতা/স্ত্রী/স্বামীর মৃত্যু সাল পরিবর্তন, জন্ম নিবন্ধন নম্বর পরিবর্তন/সংশোধন, জন্ম তারিখ সংশোধন (পাবলিক পরীক্ষার সনদ অনুসারে তিন বছর পর্যন্ত। তবে চাকরির বয়স সীমা, মুক্তিযোদ্ধা, ভোটার যোগ্যতা, প্রার্থীর বয়স সীমা, বয়স্ক ভাতা বা অন্যান্য সরকারি সুবিধা অর্জনের/প্রাপ্তির বয়স সীমা পর্যন্ত), লিঙ্গ পরিবর্তন, বৈবাহিক অবস্থা পরিবর্তন (স্বামী/স্ত্রীর নাম সংযোজন/বিয়োজন), জন্মস্থান পরিবর্তন, পেশা পরিবর্তন, দৃশ্যমান শনাক্তকরণ চিহ্ন পরিবর্তন, রুক্তের গ্রুপ সংযোজন/পরিবর্তন, ঠিকানা সংশোধন (স্থায়ী/বর্তমান), আরএমও, টিআইএন নম্বর পরিবর্তন/সংশোধন, ড্রাইভিং লাইসেন্স নম্বর পরিবর্তন/সংশোধন এবং মোবাইল/ফোন নম্বর পরিবর্তন।
‘খ’ শ্রেণির সংশোধন আবেদন উপস্থাপন করবেন জ্যেষ্ঠ জেলা বা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং তা নিষ্পত্তি করবেন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা। এই শ্রেণিতে ছয় ধরনের তথ্য সংশোধন করা যাবে।
এগুলো হলো স্বামী/স্ত্রীর নাম সংযোজন/বিয়োজন/পরিবর্তন, পাবলিক পরীক্ষার সদন অনুযায়ী পাঁচ বছর পর্যন্ত সংশোধন (চাকরির বয়স সীমা, মুক্তিযোদ্ধা, ভোটার যোগ্যতা, প্রার্থীর বয়স সীমা, বয়স্ক ভাতা বা অন্যান্য সরকারি সুবিধা অর্জনের/প্রাপ্তির বয়স সীমা বাদে), শিক্ষাগত যোগ্যতা পরিবর্তন (সংশোধন/হালনাগাদ করতে চাইলে), অসমর্থতা, ধর্ম পরিবর্তন এবং বায়োমেট্রিক হালনাগাদ (ছবি, স্বাক্ষর, আঙুলের ছাপ, আইরিশ পরিবর্তন)।
‘গ’ শ্রেণির সংশোধন আবেদন উপস্থাপন করবেন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং তা নিষ্পত্তি করবেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালকের পক্ষ থেকে পরিচালক বা তার ঊর্ধ্বতন পর্যায়ের কর্মকর্তা। এই শ্রেণিতে তিন ধরনের তথ্য সংশোধন করার সুযোগ থাকছে।
এগুলো হলো পাবলিক পরীক্ষার সনদ বা যথাযথ সনদের ভিত্তিতে নিজ নামের সম্পূর্ণ পরিবর্তন এবং পিতা/মাতার নামের সম্পূর্ণ পরিবর্তন। পাবলিক পরীক্ষার সনদ অনুযায়ী জন্ম তারিখ পরিবর্তন (চাকরির বসয় সীমা, মুক্তিযোদ্ধা, ভোটার যোগ্যতা, প্রার্থীর বয়স সীমা, বয়স্ক ভাতা প্রাপ্তির বয়স সীমা বাদে)।
‘ঘ’ শ্রেণির সংশোধন আবেদন উপস্থাপন করবেন পরিচালক এবং আবেদন নিষ্পত্তি করবেন মহাপরিচালক। এই শ্রেণিতে তিন ধরনের তথ্য সংশোধন করার সুযোগ থাকছে। সেগুলো হলো—পাবলিক পরীক্ষার সনদ বা যথাযথ সনদ বাদে অন্যান্য তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে নিজ নাম সম্পূর্ণ পরিবর্তন এবং পিতা/মাতার নামের সম্পূর্ণ পরিবর্তন এবং চাকরির বয়স সীমা, মুক্তিযোদ্ধা, ভোটার যোগ্যতা, প্রার্থীর বয়স সীমা, বয়স্ক ভাতা প্রাপ্তির বয়স সীমাসহ সব ক্ষেত্রে জন্ম তারিখ সংশোধন।
সংশোধন কার্যক্রমের পদ্ধতি: প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, আবেদনকারীকে উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করতে হবে। প্রয়োজনীয় দলিলসহ আবেদন পাওয়ার পর উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তা তা কার্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে আপলোড করবেন।
আবেদনগুলো ক, খ, গ বা ঘ শ্রেণিভুক্ত করে, প্রয়োজনে শুনানি, যাচাই-বাছাই ও তদন্তের পর পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে সব আবেদন সুপারিশ ও মতামতসহ পরবর্তী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে প্রদান করবেন। এরপর জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কার্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে উপজেলা বা থানা নির্বাচন কার্যালয় থেকে অগ্রায়িত এখতিয়ারভুক্ত আবেদনগুলোর সিদ্ধান্ত দেবেন।
প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ সংযোজনের জন্য মতামতসহ থানা বা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে ফেরত দেবেন কিংবা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিবেচনার জন্য সুপারিশ ও মতামতসহ সাত কার্যদিবসের মধ্যে পরবর্তী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে পাঠাবেন।
এরপর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা কার্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে জেলা বা জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে অগ্রায়িত এখতিয়ারভুক্ত আবেদনগুলোর সিদ্ধান্ত দেবেন অথবা প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ সংযোজনের জন্য মতামতসহ থানা বা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে ফেরত পাঠাবেন। কিংবা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিবেচনার জন্য সাত কার্যদিবসের মধ্যে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগে পাঠাবেন।
কোনো আবেদনকারী একটি আবেদনে একাধিক ফিল্ড সংশোধনের আবেদন করলে তা নিষ্পত্তির জন্য ওই আবেদনের সর্বোচ্চ পর্যায়ের এখতিয়ারভুক্ত কর্মকর্তার সিদ্ধান্ত প্রদান এবং মুদ্রণের অনুমোদন করবেন।
কোনো আবেদন মঞ্জুর করা হলে কার্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় বা অনুমোদিত অন্য কোনো স্থানে সংশোধিত সাময়িক জাতীয় পরিচয়পত্র মুদ্রণ করা হবে। সংশ্লিষ্ট থানা বা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে সংশোধিত সাময়িক জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ করা হবে।
আবেদনকারীর জানার পদ্ধতি: আবেদনটি ইলেকট্রনিকভাবে ইস্যু করা হলে আবেদনকারী একটি এসএমএসের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন নম্বর পাবেন। তদন্ত বা অন্য কোনো ডকুমেন্ট চাওয়া হলে পরবর্তী এসএমএসের মাধ্যমে আবেদনকারী জানতে পারবেন। আবেদনটি মঞ্জুর বা না-মঞ্জুর হলে পরবর্তী এসএমএসের মাধ্যমে আবেদনকারী জানতে পারবেন।
কোনো পর্যায়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো আবেদন নিষ্পত্তি বা মতামতের অগ্রগতি না হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরবর্তী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রদান করা হবে। এ ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবেদনটি নিষ্পত্তির জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজটি করবেন। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ থেকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এখতিয়ারভুক্ত সব আবেদন নিষ্পত্তির বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অন্যান্য আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে তদারকি করা হবে।
কোনো আবেদন না-মঞ্জুর করা হলে, না-মঞ্জুরের কারণ উল্লেখ করতে হবে এবং আবেদনকারী যথাযথ পদ্ধতিতে ওই আদেশের কপি পাওয়ার অধিকার রাখবেন।
যেভাবে আবেদনের শ্রেণি পরিবর্তন: জেলা বা জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বা তার পরবর্তী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে যেকোনো আবেদনের শ্রেণি পরিবর্তন করতে পারবেন। তবে যেকোনো পর্যায়ে কোনো আবেদনের শ্রেণি পরিবর্তন করা হলে আবেদনটির লগ-এ একটি রেকর্ড থাকবে। কোনো ব্যবহারকারী শ্রেণি পরিবর্তন করেছেন, তা সব ব্যবহারকারী দেখতে পারবেন। কোনো আবেদনের শ্রেণি পরিবর্তন করা হলে আগে আবেদন সম্পর্কে নিচের পর্যায়ে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাতিল হবে।
সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির আপিল: জেলা বা জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার সিদ্ধান্তে কোনো ব্যক্তি সংক্ষুব্ধ হলে তিনি ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে আপিল করতে পারবেন। আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার সিদ্ধান্তে কোনো ব্যক্তি সংক্ষুব্ধ হলে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালকের কাছে আপিল করবেন।
মহাপরিচালকের সিদ্ধান্তে কোনো ব্যক্তি সংক্ষুব্ধ হলে জাতীয় পরিচয়পত্র ও সংরক্ষিত তথ্য-উপাত্ত (সংশোধন, যাচাই ও সরবরাহ) প্রবিধি ৪-এর (৬) অনুসারে আবেদনকারী বা ক্ষেত্রমতে তার আইনানুগ অভিভাবক ওই আদেশের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন বরাবর আপিল করতে পারবেন। এসব বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

যেভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র এনআইডি সংশোধন

আপডেট টাইম : ১১:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮
বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও তাতে সংরক্ষিত তথ্য-উপাত্ত সংশোধন, যাচাই ও সরবরাহের দায়িত্ব বণ্টনের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছেন নির্বাচন কমিশন।
এ উপলক্ষে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ক, খ, গ ও ঘ এই চার শ্রেণিতে এনআইডি সংশোধন নিষ্পত্তি করা হবে। পরে সংশ্লিষ্ট থানা বা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে সংশোধিত সাময়িক জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করবেন আবেদনকারী।
নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সংশোধনের জন্য করা আবেদন নিষ্পত্তির জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নির্ধারণ করা হলো। জাতীয় পরিচয়পত্র ও সংরক্ষিত তথ্য-উপাত্ত সংশোধনের সব আবেদন উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তা পর্যায়ে গ্রহণ ও প্রক্রিয়াকরণ করতে হবে।
‘ক’ শ্রেণির সংশোধন আবেদন উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তা উপস্থাপন করবেন এবং তা নিষ্পত্তি করবেন জ্যেষ্ঠ জেলা বা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। এই শ্রেণিতে ২২ ধরনের তথ্য পরিবর্তন করতে আবেদন করা যাবে।
এগুলো হলো নিজ নামের বানান সংশোধন (নাম পরিবর্তন বাদে), নিজ মূল নাম ঠিক রেখে নামের আংশিক পরিবর্তন (যেমন—নাজমা বেগম থেকে নাজমা সুলতানা), নাম সংশোধন (বিদ্যমান জাতীয় পরিচয়পত্রে বর্ণিত বাংলা নাম অনুসারে ইংরেজি নাম কিংবা ইংরেজি নাম অনুসারে বাংলা নাম), পিতা/মাতার মূল নাম ঠিক রেখে আংশিক পরিবর্তন হলে (যেমন— মো. সাইফুল ইসলাম থেকে মো. সাইফুল শেখ), পিতা/মাতার নামের বানান সংশোধন (নাম পরিবর্তন বাদে। যেমন— আফজোল গাজী থেকে আফজাল গাজী), স্বামী/স্ত্রীর মূল নাম ঠিক রেখে নামের আংশিক পরিবর্তন (যেমন—শহিদুজ্জামান হাওলাদার থেকে মো. শহিদুজ্জামান), স্বামী/স্ত্রীর নামের বানান সংশোধন (নাম পরিবর্তন বাদে; যেমন—আ. রেহমান থেকে আব্দুর রহমান), পিতা/মাতা/স্ত্রী/স্বামীর মৃত্যু সাল পরিবর্তন, জন্ম নিবন্ধন নম্বর পরিবর্তন/সংশোধন, জন্ম তারিখ সংশোধন (পাবলিক পরীক্ষার সনদ অনুসারে তিন বছর পর্যন্ত। তবে চাকরির বয়স সীমা, মুক্তিযোদ্ধা, ভোটার যোগ্যতা, প্রার্থীর বয়স সীমা, বয়স্ক ভাতা বা অন্যান্য সরকারি সুবিধা অর্জনের/প্রাপ্তির বয়স সীমা পর্যন্ত), লিঙ্গ পরিবর্তন, বৈবাহিক অবস্থা পরিবর্তন (স্বামী/স্ত্রীর নাম সংযোজন/বিয়োজন), জন্মস্থান পরিবর্তন, পেশা পরিবর্তন, দৃশ্যমান শনাক্তকরণ চিহ্ন পরিবর্তন, রুক্তের গ্রুপ সংযোজন/পরিবর্তন, ঠিকানা সংশোধন (স্থায়ী/বর্তমান), আরএমও, টিআইএন নম্বর পরিবর্তন/সংশোধন, ড্রাইভিং লাইসেন্স নম্বর পরিবর্তন/সংশোধন এবং মোবাইল/ফোন নম্বর পরিবর্তন।
‘খ’ শ্রেণির সংশোধন আবেদন উপস্থাপন করবেন জ্যেষ্ঠ জেলা বা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং তা নিষ্পত্তি করবেন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা। এই শ্রেণিতে ছয় ধরনের তথ্য সংশোধন করা যাবে।
এগুলো হলো স্বামী/স্ত্রীর নাম সংযোজন/বিয়োজন/পরিবর্তন, পাবলিক পরীক্ষার সদন অনুযায়ী পাঁচ বছর পর্যন্ত সংশোধন (চাকরির বয়স সীমা, মুক্তিযোদ্ধা, ভোটার যোগ্যতা, প্রার্থীর বয়স সীমা, বয়স্ক ভাতা বা অন্যান্য সরকারি সুবিধা অর্জনের/প্রাপ্তির বয়স সীমা বাদে), শিক্ষাগত যোগ্যতা পরিবর্তন (সংশোধন/হালনাগাদ করতে চাইলে), অসমর্থতা, ধর্ম পরিবর্তন এবং বায়োমেট্রিক হালনাগাদ (ছবি, স্বাক্ষর, আঙুলের ছাপ, আইরিশ পরিবর্তন)।
‘গ’ শ্রেণির সংশোধন আবেদন উপস্থাপন করবেন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং তা নিষ্পত্তি করবেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালকের পক্ষ থেকে পরিচালক বা তার ঊর্ধ্বতন পর্যায়ের কর্মকর্তা। এই শ্রেণিতে তিন ধরনের তথ্য সংশোধন করার সুযোগ থাকছে।
এগুলো হলো পাবলিক পরীক্ষার সনদ বা যথাযথ সনদের ভিত্তিতে নিজ নামের সম্পূর্ণ পরিবর্তন এবং পিতা/মাতার নামের সম্পূর্ণ পরিবর্তন। পাবলিক পরীক্ষার সনদ অনুযায়ী জন্ম তারিখ পরিবর্তন (চাকরির বসয় সীমা, মুক্তিযোদ্ধা, ভোটার যোগ্যতা, প্রার্থীর বয়স সীমা, বয়স্ক ভাতা প্রাপ্তির বয়স সীমা বাদে)।
‘ঘ’ শ্রেণির সংশোধন আবেদন উপস্থাপন করবেন পরিচালক এবং আবেদন নিষ্পত্তি করবেন মহাপরিচালক। এই শ্রেণিতে তিন ধরনের তথ্য সংশোধন করার সুযোগ থাকছে। সেগুলো হলো—পাবলিক পরীক্ষার সনদ বা যথাযথ সনদ বাদে অন্যান্য তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে নিজ নাম সম্পূর্ণ পরিবর্তন এবং পিতা/মাতার নামের সম্পূর্ণ পরিবর্তন এবং চাকরির বয়স সীমা, মুক্তিযোদ্ধা, ভোটার যোগ্যতা, প্রার্থীর বয়স সীমা, বয়স্ক ভাতা প্রাপ্তির বয়স সীমাসহ সব ক্ষেত্রে জন্ম তারিখ সংশোধন।
সংশোধন কার্যক্রমের পদ্ধতি: প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, আবেদনকারীকে উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করতে হবে। প্রয়োজনীয় দলিলসহ আবেদন পাওয়ার পর উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তা তা কার্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে আপলোড করবেন।
আবেদনগুলো ক, খ, গ বা ঘ শ্রেণিভুক্ত করে, প্রয়োজনে শুনানি, যাচাই-বাছাই ও তদন্তের পর পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে সব আবেদন সুপারিশ ও মতামতসহ পরবর্তী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে প্রদান করবেন। এরপর জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কার্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে উপজেলা বা থানা নির্বাচন কার্যালয় থেকে অগ্রায়িত এখতিয়ারভুক্ত আবেদনগুলোর সিদ্ধান্ত দেবেন।
প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ সংযোজনের জন্য মতামতসহ থানা বা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে ফেরত দেবেন কিংবা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিবেচনার জন্য সুপারিশ ও মতামতসহ সাত কার্যদিবসের মধ্যে পরবর্তী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে পাঠাবেন।
এরপর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা কার্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে জেলা বা জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে অগ্রায়িত এখতিয়ারভুক্ত আবেদনগুলোর সিদ্ধান্ত দেবেন অথবা প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ সংযোজনের জন্য মতামতসহ থানা বা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে ফেরত পাঠাবেন। কিংবা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিবেচনার জন্য সাত কার্যদিবসের মধ্যে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগে পাঠাবেন।
কোনো আবেদনকারী একটি আবেদনে একাধিক ফিল্ড সংশোধনের আবেদন করলে তা নিষ্পত্তির জন্য ওই আবেদনের সর্বোচ্চ পর্যায়ের এখতিয়ারভুক্ত কর্মকর্তার সিদ্ধান্ত প্রদান এবং মুদ্রণের অনুমোদন করবেন।
কোনো আবেদন মঞ্জুর করা হলে কার্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় বা অনুমোদিত অন্য কোনো স্থানে সংশোধিত সাময়িক জাতীয় পরিচয়পত্র মুদ্রণ করা হবে। সংশ্লিষ্ট থানা বা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে সংশোধিত সাময়িক জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ করা হবে।
আবেদনকারীর জানার পদ্ধতি: আবেদনটি ইলেকট্রনিকভাবে ইস্যু করা হলে আবেদনকারী একটি এসএমএসের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন নম্বর পাবেন। তদন্ত বা অন্য কোনো ডকুমেন্ট চাওয়া হলে পরবর্তী এসএমএসের মাধ্যমে আবেদনকারী জানতে পারবেন। আবেদনটি মঞ্জুর বা না-মঞ্জুর হলে পরবর্তী এসএমএসের মাধ্যমে আবেদনকারী জানতে পারবেন।
কোনো পর্যায়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো আবেদন নিষ্পত্তি বা মতামতের অগ্রগতি না হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরবর্তী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রদান করা হবে। এ ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবেদনটি নিষ্পত্তির জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজটি করবেন। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ থেকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এখতিয়ারভুক্ত সব আবেদন নিষ্পত্তির বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অন্যান্য আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে তদারকি করা হবে।
কোনো আবেদন না-মঞ্জুর করা হলে, না-মঞ্জুরের কারণ উল্লেখ করতে হবে এবং আবেদনকারী যথাযথ পদ্ধতিতে ওই আদেশের কপি পাওয়ার অধিকার রাখবেন।
যেভাবে আবেদনের শ্রেণি পরিবর্তন: জেলা বা জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বা তার পরবর্তী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে যেকোনো আবেদনের শ্রেণি পরিবর্তন করতে পারবেন। তবে যেকোনো পর্যায়ে কোনো আবেদনের শ্রেণি পরিবর্তন করা হলে আবেদনটির লগ-এ একটি রেকর্ড থাকবে। কোনো ব্যবহারকারী শ্রেণি পরিবর্তন করেছেন, তা সব ব্যবহারকারী দেখতে পারবেন। কোনো আবেদনের শ্রেণি পরিবর্তন করা হলে আগে আবেদন সম্পর্কে নিচের পর্যায়ে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাতিল হবে।
সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির আপিল: জেলা বা জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার সিদ্ধান্তে কোনো ব্যক্তি সংক্ষুব্ধ হলে তিনি ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে আপিল করতে পারবেন। আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার সিদ্ধান্তে কোনো ব্যক্তি সংক্ষুব্ধ হলে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালকের কাছে আপিল করবেন।
মহাপরিচালকের সিদ্ধান্তে কোনো ব্যক্তি সংক্ষুব্ধ হলে জাতীয় পরিচয়পত্র ও সংরক্ষিত তথ্য-উপাত্ত (সংশোধন, যাচাই ও সরবরাহ) প্রবিধি ৪-এর (৬) অনুসারে আবেদনকারী বা ক্ষেত্রমতে তার আইনানুগ অভিভাবক ওই আদেশের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন বরাবর আপিল করতে পারবেন। এসব বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।