ঢাকা , শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৪ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রোহিঙ্গা গণহত্যা: ‘মুসলমানরা নিষ্ঠুর হলে ভারতবর্ষে একজন অমুসলিমও পাওয়া যেত না’

মুসলিম শাসকরা কসাই ছিল। তারা রাজ্য জয় করে বার্মার বৌদ্ধদের মত বিধর্মীদের কচু কাটা করত। সেই শাসকদের পাপের কারণেই আজকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের এই করুণ অবস্থা!

কিছু বিধর্মী ভাইদের টাইমলাইন ঘুরে উপরের বক্তব্যগুলো পেলাম। মুসলিম শাসকরা জুম্মন কসাই ছিলেন নাকি ডিপজল কসাই ছিলেন, সেটিও তো পরিমাপ করা উচিত। পরিমাপের সুবিধার্থে আপনাদেরকে একজন মুসলিম শাসকের গল্প শোনাই।

তখন খোলাফায়ে রাশেদিনদের সময়কাল চলছিল। তারা মুসলিম বিশ্ব সম্প্রসারণে মনোযোগী দিলেন। তৎকালীন খলিফা আল্লাহর রাসূলের অন্যতম প্রিয় সাহাবী হযরত আমর ইবনুল আস (রাঃ) কে, সেনাপ্রধান করে আলেকজেন্দ্রিয়া অভিযানে পাঠান। আলেকজান্দ্রিয়া ছিল খৃষ্টান প্রধান দেশ। হযরত আমর তার বাহিনী নিয়ে আলেকজান্দ্রিয়ার সীমানায় তাবু স্থাপন করলেন।

হযরত আমর আলেকজান্দ্রিয়ার শাসকের কাছে দূত পাঠালেন। বললেন, যদি তোমরা জিজিয়া কর দিতে রাজি থাকো তবে


যু্দ্ধ হবে না। আর যদি রাজি না থাকো তবে যুদ্ধ অনিবার্য। আলেকজান্দ্রিয়ার শাসক দেখলেন, মুসলিমরা সংখ্যায় কম। সেই তুলনায় তার দ্বিগুণ সৈন্য রয়েছে। সেই সমীকরণ শেষ করে, আলেকজান্দ্রিয়ার ময়দানে শুরু হয়ে গেল, হক এবং বাতিলের মরন যুদ্ধ।

প্রথম অবস্থায় মুসলিম বাহিনী মার খেল। তারপর আমর ইবনুল আস (রাঃ) তার বাহিনীকে পুনরায় উজ্জীবিত করে বীর বীক্রমে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। মুসলিম সৈন্যদের এতো দৃঢ়চেতা মনোবল এবং সামরিক কৌশলের কাছে ধীরে ধীরে দুর্বল হতে থাকল আলেকজান্দ্রিয়ার বাহিনী। এক সময় রাজা নিহত হলে বাকিসব সৈন্যরা দিকবেদিক পালিয়ে যায়। শহরে অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রইল খৃষ্টান নারী, শিশু এবং খৃষ্টান পাদ্রীরা।

আলেকজান্দ্রীয়ার নারী শিশু এবং খৃষ্টান পাদ্রীরা ভাবল তাদের আর রক্ষে নেই। কারণ তারা বিগত সময়ে দেখেছে, পরাজিত জাতির সঙ্গে তাদের সেনাবাহিনী কি ভয়ানক আচরণ করেছিল। তাদেরকে কচুকাঁটা করেছিল। মুসলিমরা হয়তো এইবার তাদেরকে কচু কাঁটা করবে। কিন্তু তাদের সকল ভয় এবং ভাবনা মিথ্যা প্রমাণিত হল।

সেনাপতি আমর ইবনুল আস (রাঃ) বললেন, নারী এবং শিশুরা নিরাপদ। তাদেরকে কেউ আঘাত করবে না। আর যারা আমাদেরকে জিজিয়া কর দিতে রাজি আছো তারাও নিরাপদ। সেনাপতির এই আদেশ আলেকজান্দ্রিয়ার মানুষরা নিজ কানে শুনেও বিশ্বাস করতে পারছিল না। তারা ইসলামের মহানুভবতা এবং মহত্ব দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল। মুসলিম শাসকরা ছিল এমনই কসাই। তারা নিষ্ঠুরতাকে কসাইয়ের মত হত্যা করেছিল।

মুসলিমরা যদি নিষ্ঠুরতাকে হত্যা না করত, তাহলে ভারতবর্ষে একজনও হিন্দু বৌদ্ধ থাকত না। মুসলিমরা কসাই হলে মুহাম্মাদ বিন কাসিমের তরবারির ভয়ে প্রত্যেকেই মুসলিম হয়ে যেত। উপমহাদেশে হিন্দু বৌদ্ধদের অবস্থানই বলে দেয় মুসলিম শাসকরা কি রকম কসাই ছিলেন! তাদের মহত্বের কাছে নিষ্ঠুরতাও লজ্জা পেত। (পাঠকের মতামত সম্পাদকীয় নীতির আওতাভুক্ত নয়)।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

রোহিঙ্গা গণহত্যা: ‘মুসলমানরা নিষ্ঠুর হলে ভারতবর্ষে একজন অমুসলিমও পাওয়া যেত না’

আপডেট টাইম : ০৯:৩৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর ২০১৬

মুসলিম শাসকরা কসাই ছিল। তারা রাজ্য জয় করে বার্মার বৌদ্ধদের মত বিধর্মীদের কচু কাটা করত। সেই শাসকদের পাপের কারণেই আজকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের এই করুণ অবস্থা!

কিছু বিধর্মী ভাইদের টাইমলাইন ঘুরে উপরের বক্তব্যগুলো পেলাম। মুসলিম শাসকরা জুম্মন কসাই ছিলেন নাকি ডিপজল কসাই ছিলেন, সেটিও তো পরিমাপ করা উচিত। পরিমাপের সুবিধার্থে আপনাদেরকে একজন মুসলিম শাসকের গল্প শোনাই।

তখন খোলাফায়ে রাশেদিনদের সময়কাল চলছিল। তারা মুসলিম বিশ্ব সম্প্রসারণে মনোযোগী দিলেন। তৎকালীন খলিফা আল্লাহর রাসূলের অন্যতম প্রিয় সাহাবী হযরত আমর ইবনুল আস (রাঃ) কে, সেনাপ্রধান করে আলেকজেন্দ্রিয়া অভিযানে পাঠান। আলেকজান্দ্রিয়া ছিল খৃষ্টান প্রধান দেশ। হযরত আমর তার বাহিনী নিয়ে আলেকজান্দ্রিয়ার সীমানায় তাবু স্থাপন করলেন।

হযরত আমর আলেকজান্দ্রিয়ার শাসকের কাছে দূত পাঠালেন। বললেন, যদি তোমরা জিজিয়া কর দিতে রাজি থাকো তবে


যু্দ্ধ হবে না। আর যদি রাজি না থাকো তবে যুদ্ধ অনিবার্য। আলেকজান্দ্রিয়ার শাসক দেখলেন, মুসলিমরা সংখ্যায় কম। সেই তুলনায় তার দ্বিগুণ সৈন্য রয়েছে। সেই সমীকরণ শেষ করে, আলেকজান্দ্রিয়ার ময়দানে শুরু হয়ে গেল, হক এবং বাতিলের মরন যুদ্ধ।

প্রথম অবস্থায় মুসলিম বাহিনী মার খেল। তারপর আমর ইবনুল আস (রাঃ) তার বাহিনীকে পুনরায় উজ্জীবিত করে বীর বীক্রমে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। মুসলিম সৈন্যদের এতো দৃঢ়চেতা মনোবল এবং সামরিক কৌশলের কাছে ধীরে ধীরে দুর্বল হতে থাকল আলেকজান্দ্রিয়ার বাহিনী। এক সময় রাজা নিহত হলে বাকিসব সৈন্যরা দিকবেদিক পালিয়ে যায়। শহরে অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রইল খৃষ্টান নারী, শিশু এবং খৃষ্টান পাদ্রীরা।

আলেকজান্দ্রীয়ার নারী শিশু এবং খৃষ্টান পাদ্রীরা ভাবল তাদের আর রক্ষে নেই। কারণ তারা বিগত সময়ে দেখেছে, পরাজিত জাতির সঙ্গে তাদের সেনাবাহিনী কি ভয়ানক আচরণ করেছিল। তাদেরকে কচুকাঁটা করেছিল। মুসলিমরা হয়তো এইবার তাদেরকে কচু কাঁটা করবে। কিন্তু তাদের সকল ভয় এবং ভাবনা মিথ্যা প্রমাণিত হল।

সেনাপতি আমর ইবনুল আস (রাঃ) বললেন, নারী এবং শিশুরা নিরাপদ। তাদেরকে কেউ আঘাত করবে না। আর যারা আমাদেরকে জিজিয়া কর দিতে রাজি আছো তারাও নিরাপদ। সেনাপতির এই আদেশ আলেকজান্দ্রিয়ার মানুষরা নিজ কানে শুনেও বিশ্বাস করতে পারছিল না। তারা ইসলামের মহানুভবতা এবং মহত্ব দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল। মুসলিম শাসকরা ছিল এমনই কসাই। তারা নিষ্ঠুরতাকে কসাইয়ের মত হত্যা করেছিল।

মুসলিমরা যদি নিষ্ঠুরতাকে হত্যা না করত, তাহলে ভারতবর্ষে একজনও হিন্দু বৌদ্ধ থাকত না। মুসলিমরা কসাই হলে মুহাম্মাদ বিন কাসিমের তরবারির ভয়ে প্রত্যেকেই মুসলিম হয়ে যেত। উপমহাদেশে হিন্দু বৌদ্ধদের অবস্থানই বলে দেয় মুসলিম শাসকরা কি রকম কসাই ছিলেন! তাদের মহত্বের কাছে নিষ্ঠুরতাও লজ্জা পেত। (পাঠকের মতামত সম্পাদকীয় নীতির আওতাভুক্ত নয়)।