ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

রমজানে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে শঙ্কা

মূল্যস্ফীতির কশাঘাতে বিপর্যস্ত জনজীবন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাব অনুযায়ী ডিসেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৯২ শতাংশ। উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই হারে নির্দিষ্ট আয়ের মানুষকে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এর মধ্যেই সরকার নতুন করে শতাধিক পণ্য ও সেবায় শুল্ক-কর বাড়িয়েছে। এতে মানুষের ওপর ভ্যাটের চাপ আরও বেড়েছে। প্রতিদিনের জীবনযাপনের প্রতিটি পদক্ষেপে নাগরিকদের গুনতে হচ্ছে ভ্যাটের টাকা। এই অবস্থায় নতুন করে ফের সুদ হার বাড়ানোর চিন্তা চলছে। সঞ্চয়পত্রে সুদ হার বাড়ানো হয়েছে। আবার গত বছরের তুলনায় এবার ডলারের দাম বেশি এবং বিশ্ববাজারও চড়া। এতে পণ্যের আমদানি ব্যয় বাড়বে। এমন পরিস্থিতিতে আসন্ন রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ে শঙ্কায় ক্রেতা ও বিশেষজ্ঞারা। দাম নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় বাজারে কারসাজি ঠেকাতে প্রতিটি পর্যায়ে নজরদারির পরামর্শ দিয়েছেন বাজার বিশ্লেষকরা।

মাজনুনুর রহমান নামে রাজধানীর এক বেসরকারি কর্মজীবী বলেন, সাধারণত রমজানের শুরুতে দেশে প্রতি বছরই ভোগ্যপণ্যের বাজারে এক ধরনের অস্থিরতা লক্ষ্য করা যায়। বিশেষ করে ভোজ্যতেল, চিনি, ছোলা, ডাল, খেজুর ও পেঁয়াজের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দামও বৃদ্ধি পায়। এ বছর রমজানের আগেই সরকারের তরফ থেকে নতুন করে শতাধিক পণ্যে ভ্যাট ও শুল্ক আরোপে জনজীবনে এক ধরনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। আসন্ন রমজানে না খেয়েই রোজা রাখতে হয় কি না, সেটাই ভাবছি।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, রমজানে পণ্যমূল্য নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে। এরই মধ্যে অনেক পণ্যের দাম বেড়েছে। যদিও সরকার থেকে বলা হচ্ছে, ভ্যাট আরোপের ফলে দাম বাড়বে না। কিন্তু দাম ঠিকই বেড়েছে। প্রতি বছর রমজান ঘিরে পণ্যের দাম বাড়ে। এবারও সেই আশঙ্কা রয়ে গেছে। সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাট বৃদ্ধিতে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য না থাকলেও জনজীবনে গুরুত্বপূর্ণ পণ্য রয়েছে। এতে জনজীবনে প্রভাব পড়বে। এ ছাড়া ৫ আগস্টের পর অনেক করপোরেট গ্রুপ বাজারে নেই। তাদের শূন্যস্থান পূরণেও কোনো উদ্যোগ নেই। অন্যদিকে আমদানির ক্ষেত্রে অনেক টেকনিক্যাল বিষয় রয়ে গেছে। সেগুলোর ব্যাপারেও দৃশ্যমান উদ্যোগ দেখছি না।

ট্যারিফ কমিশন বলছে স্থিতিশীল থাকবে

রোজার বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে গত ৯ জানুয়ারি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠায় বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি)। এতে বলা হয়, রমজানে দেশের নিত্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল থাকবে। আন্তর্জাতিক বাজারদরের নিম্নমুখী প্রবণতার পাশাপাশি পণ্যের বাজারে মূল্য সহনশীল রাখতে অন্তর্বর্তী সরকারের নানামুখী উদ্যোগে পরিস্থিতি ইতিবাচক হচ্ছে। ফলে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের বাজার স্থিতিশীল থাকবে।

প্রতিবেদনে দেশের পণ্য আমদানি পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে উল্লেখ করে বলা হয়, গত বছরের তুলনায় স্থানীয় বাজারে কম দামে পণ্য ক্রয় করতে পারবে সাধারণ মানুষ। যদিও সম্প্রতি শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে সরকার- সে বিষয়টি বিবেচনায় আসেনি প্রতিবেদনে।

বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) চেয়ারম্যান ড. মইনুল খান গতকাল সোমবার বলেন, রমজানে যাতে পণ্যমূল্য স্থিতিশীল থাকে, সেজন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিন মাস আগে থেকেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। যেসব পণ্যের ওপর ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে, তাতে রমজানের পণ্যে কোনো প্রভাব পড়বে না। সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপে এ বছরের রমজানে পণ্যমূল্য কম থাকবে।

ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমদানি ব্যয় নির্বাহের জন্য বৈদেশিক মুদ্রার মান ধরে রাখা দরকার। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংক সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত আগস্টে আমদানিতে ডলারের আনুষ্ঠানিক দর ছিল ১২০ টাকা। তবে সংকটের কারণে অনানুষ্ঠানিকভাবে ১২৩-১২৪ টাকায়ও ডলার কিনতে হয়েছে আমদানিকারকদের। এখন আমদানিতে আনুষ্ঠানিক দর ১২৩ টাকা। এই দামে আমদানির জন্য ডলার পাওয়া যাচ্ছে। সার্বিকভাবে ডলার সংকটও কমেছে। পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বেড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হিসাবপদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুযায়ী দেশে প্রায় ২ হাজার ১৬৮ কোটি ডলার, যা গত আগস্টের শুরুতে ছিল ২ হাজার ৪৮ কোটি ডলার। এই সময় বকেয়া বিদেশি দেনা একটি বড় অংশ (৩৫০ কোটি ডলার) পরিশোধ করা হয়েছে।

এদিকে, চাল আমদানির সুযোগ ও শুল্ক কমানো হলেও পরিস্থিতি আশাব্যঞ্জক নয়। চাল আমদানি ততটা বাড়ছে না। ভরা মৌসুমেও বাজারে চালের দাম বাড়ছে। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, এক সপ্তাহে মোটা চালের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি চার টাকা।

বিশ্বব্যাংকের পণ্যমূল্য তথ্য বিশ্লেষণ করে ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ডিসেম্বর (২০২৪) থেকে এনার্জি, নন-এনার্জি, খাদ্যপণ্য ও বিভিন্ন পণ্যের কাঁচামাল ও সারের মূল্যে নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজমান। শুধু চাল, ভুট্টা ও বার্লির দাম বাড়ছে। পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে বিভিন্ন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। ফলে আন্তর্জাতিক অনেক পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সে হিসেবে বাংলাদেশে আমদানিনির্ভর অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের মূল্য কমবে।

ট্যারিফ কমিশন বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের মূল্যে নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজমান থাকা এবং ভোজ্যতেল আমদানিতে শুল্ক-কর হ্রাস করায় রমজানে এই পণ্যের স্থানীয় মূল্য হ্রাসের সম্ভাবনা রয়েছে।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, আমদানি ও সরবরাহ পরিস্থিতি ঠিক থাকলেও স্থানীয় বাজারে কারসাজির কারণে অনেক সময় পণ্যের দাম বেড়ে যায়। তাই প্রতিটি পর্যায়ে নজরদারি দরকার। অতীতে দেখা গেছে, যান্ত্রিক ত্রুটি বা অন্য কারণ দেখিয়ে কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন কোনো নির্দিষ্ট পণ্যের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেয় এবং বাজারে দাম বেড়ে যায়।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

ক্যাটরিনার হাতে ২০ বার থাপ্পড় খেয়েছিলেন ইমরান খান

রমজানে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে শঙ্কা

আপডেট টাইম : ২ ঘন্টা আগে

মূল্যস্ফীতির কশাঘাতে বিপর্যস্ত জনজীবন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাব অনুযায়ী ডিসেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৯২ শতাংশ। উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই হারে নির্দিষ্ট আয়ের মানুষকে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এর মধ্যেই সরকার নতুন করে শতাধিক পণ্য ও সেবায় শুল্ক-কর বাড়িয়েছে। এতে মানুষের ওপর ভ্যাটের চাপ আরও বেড়েছে। প্রতিদিনের জীবনযাপনের প্রতিটি পদক্ষেপে নাগরিকদের গুনতে হচ্ছে ভ্যাটের টাকা। এই অবস্থায় নতুন করে ফের সুদ হার বাড়ানোর চিন্তা চলছে। সঞ্চয়পত্রে সুদ হার বাড়ানো হয়েছে। আবার গত বছরের তুলনায় এবার ডলারের দাম বেশি এবং বিশ্ববাজারও চড়া। এতে পণ্যের আমদানি ব্যয় বাড়বে। এমন পরিস্থিতিতে আসন্ন রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ে শঙ্কায় ক্রেতা ও বিশেষজ্ঞারা। দাম নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় বাজারে কারসাজি ঠেকাতে প্রতিটি পর্যায়ে নজরদারির পরামর্শ দিয়েছেন বাজার বিশ্লেষকরা।

মাজনুনুর রহমান নামে রাজধানীর এক বেসরকারি কর্মজীবী বলেন, সাধারণত রমজানের শুরুতে দেশে প্রতি বছরই ভোগ্যপণ্যের বাজারে এক ধরনের অস্থিরতা লক্ষ্য করা যায়। বিশেষ করে ভোজ্যতেল, চিনি, ছোলা, ডাল, খেজুর ও পেঁয়াজের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দামও বৃদ্ধি পায়। এ বছর রমজানের আগেই সরকারের তরফ থেকে নতুন করে শতাধিক পণ্যে ভ্যাট ও শুল্ক আরোপে জনজীবনে এক ধরনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। আসন্ন রমজানে না খেয়েই রোজা রাখতে হয় কি না, সেটাই ভাবছি।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, রমজানে পণ্যমূল্য নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে। এরই মধ্যে অনেক পণ্যের দাম বেড়েছে। যদিও সরকার থেকে বলা হচ্ছে, ভ্যাট আরোপের ফলে দাম বাড়বে না। কিন্তু দাম ঠিকই বেড়েছে। প্রতি বছর রমজান ঘিরে পণ্যের দাম বাড়ে। এবারও সেই আশঙ্কা রয়ে গেছে। সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাট বৃদ্ধিতে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য না থাকলেও জনজীবনে গুরুত্বপূর্ণ পণ্য রয়েছে। এতে জনজীবনে প্রভাব পড়বে। এ ছাড়া ৫ আগস্টের পর অনেক করপোরেট গ্রুপ বাজারে নেই। তাদের শূন্যস্থান পূরণেও কোনো উদ্যোগ নেই। অন্যদিকে আমদানির ক্ষেত্রে অনেক টেকনিক্যাল বিষয় রয়ে গেছে। সেগুলোর ব্যাপারেও দৃশ্যমান উদ্যোগ দেখছি না।

ট্যারিফ কমিশন বলছে স্থিতিশীল থাকবে

রোজার বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে গত ৯ জানুয়ারি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠায় বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি)। এতে বলা হয়, রমজানে দেশের নিত্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল থাকবে। আন্তর্জাতিক বাজারদরের নিম্নমুখী প্রবণতার পাশাপাশি পণ্যের বাজারে মূল্য সহনশীল রাখতে অন্তর্বর্তী সরকারের নানামুখী উদ্যোগে পরিস্থিতি ইতিবাচক হচ্ছে। ফলে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের বাজার স্থিতিশীল থাকবে।

প্রতিবেদনে দেশের পণ্য আমদানি পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে উল্লেখ করে বলা হয়, গত বছরের তুলনায় স্থানীয় বাজারে কম দামে পণ্য ক্রয় করতে পারবে সাধারণ মানুষ। যদিও সম্প্রতি শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে সরকার- সে বিষয়টি বিবেচনায় আসেনি প্রতিবেদনে।

বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) চেয়ারম্যান ড. মইনুল খান গতকাল সোমবার বলেন, রমজানে যাতে পণ্যমূল্য স্থিতিশীল থাকে, সেজন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিন মাস আগে থেকেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। যেসব পণ্যের ওপর ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে, তাতে রমজানের পণ্যে কোনো প্রভাব পড়বে না। সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপে এ বছরের রমজানে পণ্যমূল্য কম থাকবে।

ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমদানি ব্যয় নির্বাহের জন্য বৈদেশিক মুদ্রার মান ধরে রাখা দরকার। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংক সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত আগস্টে আমদানিতে ডলারের আনুষ্ঠানিক দর ছিল ১২০ টাকা। তবে সংকটের কারণে অনানুষ্ঠানিকভাবে ১২৩-১২৪ টাকায়ও ডলার কিনতে হয়েছে আমদানিকারকদের। এখন আমদানিতে আনুষ্ঠানিক দর ১২৩ টাকা। এই দামে আমদানির জন্য ডলার পাওয়া যাচ্ছে। সার্বিকভাবে ডলার সংকটও কমেছে। পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বেড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হিসাবপদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুযায়ী দেশে প্রায় ২ হাজার ১৬৮ কোটি ডলার, যা গত আগস্টের শুরুতে ছিল ২ হাজার ৪৮ কোটি ডলার। এই সময় বকেয়া বিদেশি দেনা একটি বড় অংশ (৩৫০ কোটি ডলার) পরিশোধ করা হয়েছে।

এদিকে, চাল আমদানির সুযোগ ও শুল্ক কমানো হলেও পরিস্থিতি আশাব্যঞ্জক নয়। চাল আমদানি ততটা বাড়ছে না। ভরা মৌসুমেও বাজারে চালের দাম বাড়ছে। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, এক সপ্তাহে মোটা চালের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি চার টাকা।

বিশ্বব্যাংকের পণ্যমূল্য তথ্য বিশ্লেষণ করে ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ডিসেম্বর (২০২৪) থেকে এনার্জি, নন-এনার্জি, খাদ্যপণ্য ও বিভিন্ন পণ্যের কাঁচামাল ও সারের মূল্যে নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজমান। শুধু চাল, ভুট্টা ও বার্লির দাম বাড়ছে। পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে বিভিন্ন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। ফলে আন্তর্জাতিক অনেক পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সে হিসেবে বাংলাদেশে আমদানিনির্ভর অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের মূল্য কমবে।

ট্যারিফ কমিশন বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের মূল্যে নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজমান থাকা এবং ভোজ্যতেল আমদানিতে শুল্ক-কর হ্রাস করায় রমজানে এই পণ্যের স্থানীয় মূল্য হ্রাসের সম্ভাবনা রয়েছে।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, আমদানি ও সরবরাহ পরিস্থিতি ঠিক থাকলেও স্থানীয় বাজারে কারসাজির কারণে অনেক সময় পণ্যের দাম বেড়ে যায়। তাই প্রতিটি পর্যায়ে নজরদারি দরকার। অতীতে দেখা গেছে, যান্ত্রিক ত্রুটি বা অন্য কারণ দেখিয়ে কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন কোনো নির্দিষ্ট পণ্যের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেয় এবং বাজারে দাম বেড়ে যায়।