বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ কূটনৈতিক সংবাদদাতাদের সংগঠন ‘ডিপ্লোম্যাটিক করসপনডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ’ (ডিকাব) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো দেবে না চীন।
বরং এ সংকট নিরসনে সহায়তা দিয়ে যাবে দেশটি। আমরাও চাই চীন এ সংকট নিরসনে ইতিবাচক অবদান রাখুক। রোহিঙ্গা সমস্যার দ্রুত সমাধান না হলে ভবিষ্যতে এ অঞ্চলে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
চীন, রাশিয়া, ভারতসহ বৃহৎ শক্তিগুলো ইতিবাচক ভূমিকা রাখলে এ সংকটের একটি কার্যকর সমাধান অচিরেই বেরিয়ে আসবে, এ বিষয়ে আমরা আশাবাদী। রোহিঙ্গারা দেশে ফিরে নতুন করে নির্যাতনের শিকার হবে কি না, এ বিষয়ে তারা উদ্বিগ্ন। কাজেই তারা যাতে মিয়ানমার সরকারের ওপর আস্থা রাখতে পারে, দেশটিকে সেই পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) অন্তর্বর্তী যে আদেশ দিয়েছে, মিয়ানমার এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নিয়েছে এবং দেশটির ভবিষ্যৎ পরিকল্পা কী, তা এখনও অস্পষ্ট।
তবে অতীতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের নামে মিয়ানমার যে ধরনের প্রহসনের আশ্রয় নিয়েছে তা থেকে ধারণা করা যায়, দেশটি কোনো অপকৌশলের আশ্রয় নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিভ্রান্ত করতে পারে। আইসিজের অন্তর্বর্তী আদেশে বলা হয়েছে, মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ছয় মাস পরপর আদালতকে প্রয়োজনীয় সব তথ্য জানাতে হবে। এ ক্ষেত্রেও দেশটি যাতে কোনো অপকৌশলের আশ্রয় নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিভ্রান্ত করতে না পারে, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
চীন বিভিন্ন সময়ে মিয়ানমারে বিনিয়োগ করেছে, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি চীনের প্রেসিডেন্টের মিয়ানমার সফরের সময় দু’দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এতে এ দু’দেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে। এ ছাড়া ভারত ও রাশিয়ার সঙ্গেও মিয়ানমারের সম্পর্ক ভালো।
এ অবস্থায় রোহিঙ্গাবিষয়ক সংকট নিরসনে জাতিসংঘ কোনো উদ্যোগ নিলে তা কতটা ফলপ্রসূ হবে সেই সংশয়ও রয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশকে চীন, রাশিয়া ও ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করতে হবে।
এ ছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিশ্ব শক্তিগুলোর সঙ্গেও বহুপক্ষীয় কূটনীতি অব্যাহত রাখতে হবে। বর্তমান বিশ্ব সব ধরনের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যখন ঐক্যবদ্ধ, তখন রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যাপক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তাদের এই অনৈতিক কর্তৃত্ববাদের বিরুদ্ধে সমগ্র বিশ্বকে শুধু ঐক্যবদ্ধ হলেই চলবে না, মিয়ানমার সরকারের মানবতাবিরোধী ভূমিকার বিরুদ্ধেও নিতে হবে দৃঢ় অবস্থান।