ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাজায় ইসরায়েলের ‘গণহত্যা’ ইস্যুতে বাইডেনের বিরুদ্ধে মামলা

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অনবরত হামলা ও হত্যাযজ্ঞ ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়া ও সহযোগিতার অভিযোগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ফিলিস্তিনি মানবাধিকার সংগঠনগুলোর পক্ষে ক্যালিফোর্নিয়ার ফেডারেল আদালতে এই মামলা করে নিউইয়র্কের নাগরিকদের স্বাধীন সংগঠন সেন্টার ফর কনস্টিটিউশনাল রাইটস (সিসিআর)। বাইডেন ছাড়াও প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেনের বিরুদ্ধেও এই অভিযোগ এনেছেন তারা।

গত ৭ অক্টোবর গাজা থেকে ইসরায়েল অভিমুখে হাজার হাজার রকেট ছুড়ে মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। সেই সঙ্গে ইসরায়েল সীমান্ত ভেদ করে দেশটিতে তাণ্ডব চালায় হামাসের যোদ্ধারা। এতে ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন এক হাজার ৪০০ জন। আহত হয়েছেন তিন হাজারের বেশি। এরপরেই গাজায় পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছে ১০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন অন্তত ২৫ হাজার। যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক।

মামলায় বলা হয়, ইসরায়েলের অনেক নেতা গণহত্যার উদ্দেশ্য নিয়ে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে। ফিলিস্তিনিদের নিয়ে অমানবিক মন্তব্য করেছে। একইসঙ্গে তারা ফিলিস্তিনে হত্যাযজ্ঞও অব্যাহত রেখেছে। সব আলামত এক করলে স্পষ্ট বোঝা যায় যে গণহত্যা ঘটতে যাচ্ছে সেখানে।

সিসিআর জানায়, অভিযান শুরুর পর থেকে ইসরায়েলকে অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে আসছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। ইসরায়েলি হামলায় হাজার হাজার বেসামরিকের মৃত্যু হলেও বাইডেন ও তার প্রশাসনের কর্মকর্তারা সামরিক, আর্থিক ও রাজনৈতিক সমর্থন দিচ্ছে।

অভিযোগে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পরম মিত্র এবং সবচেয়ে বড় সামরিক সহযোগী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরই ইসরায়েলই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সবচেয়ে বেশি সামরিক সহায়তা পেয়েছে। তাই ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে চলা এই গণহত্যা ঠেকাতে জোরালো ভূমিকা রাখতে পারত যুক্তরাষ্ট্র।

কিন্তু সেটি না করে বাইডেন, ব্লিঙ্কেন ও অস্টিন ঘৃণিত এই অপরাধে সমর্থন দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছে সিসিআর। সংগঠনটি জানায়, ইসরায়েলকে তারা নিঃশর্ত সামরিক ও কূটনৈতিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই বোমা হামলার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুললে কূটনৈতিকভাবে তা সামাল দিচ্ছে।

সিসিআর এর আইনজীবী আস্থা শর্মা আল-জাজিরাকে বলেন, আন্তর্জাতিক ও জাতীয় আইন অনুযায়ী তাদের দায়িত্ব ছিলেন এই গণহত্যা ঠেকানো, এই গণহত্যায় সমর্থন ঠেকানো। কিন্তু এই সব দায়িত্বপালনে তারা ব্যর্থ হয়েছেন। তারা এখনো ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে চলেছেন। এখনো তারা ইসরায়েল অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে চলেছেন।

মার্কিন নাগরিক লাইলা আল হাদ্দাদ বলেন, হামলার পর থেকে গাঁজায় পাঁচজন আত্মীয়কে হারিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, আমি ট্যাক্স দিয়েছি। আর সেই টাকায় ইসরায়েলে আমার চাচী ও ভাই-বোনদের হত্যা করেছে। আমি মনে করি মার্কিন নাগরিকরদের এখন দায়িত্ব বাইডেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা।’

মামলায় ইসরায়েলকে বার্ষিক ৩৮০ কোটি ডলারেরর সহায়তা বন্ধ করারও আহ্বান জানানো হয়েছে।

এই মামলা নিয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি হোয়াইট হাউস।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

গাজায় ইসরায়েলের ‘গণহত্যা’ ইস্যুতে বাইডেনের বিরুদ্ধে মামলা

আপডেট টাইম : ০৪:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৩

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অনবরত হামলা ও হত্যাযজ্ঞ ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়া ও সহযোগিতার অভিযোগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ফিলিস্তিনি মানবাধিকার সংগঠনগুলোর পক্ষে ক্যালিফোর্নিয়ার ফেডারেল আদালতে এই মামলা করে নিউইয়র্কের নাগরিকদের স্বাধীন সংগঠন সেন্টার ফর কনস্টিটিউশনাল রাইটস (সিসিআর)। বাইডেন ছাড়াও প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেনের বিরুদ্ধেও এই অভিযোগ এনেছেন তারা।

গত ৭ অক্টোবর গাজা থেকে ইসরায়েল অভিমুখে হাজার হাজার রকেট ছুড়ে মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। সেই সঙ্গে ইসরায়েল সীমান্ত ভেদ করে দেশটিতে তাণ্ডব চালায় হামাসের যোদ্ধারা। এতে ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন এক হাজার ৪০০ জন। আহত হয়েছেন তিন হাজারের বেশি। এরপরেই গাজায় পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছে ১০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন অন্তত ২৫ হাজার। যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক।

মামলায় বলা হয়, ইসরায়েলের অনেক নেতা গণহত্যার উদ্দেশ্য নিয়ে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে। ফিলিস্তিনিদের নিয়ে অমানবিক মন্তব্য করেছে। একইসঙ্গে তারা ফিলিস্তিনে হত্যাযজ্ঞও অব্যাহত রেখেছে। সব আলামত এক করলে স্পষ্ট বোঝা যায় যে গণহত্যা ঘটতে যাচ্ছে সেখানে।

সিসিআর জানায়, অভিযান শুরুর পর থেকে ইসরায়েলকে অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে আসছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। ইসরায়েলি হামলায় হাজার হাজার বেসামরিকের মৃত্যু হলেও বাইডেন ও তার প্রশাসনের কর্মকর্তারা সামরিক, আর্থিক ও রাজনৈতিক সমর্থন দিচ্ছে।

অভিযোগে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পরম মিত্র এবং সবচেয়ে বড় সামরিক সহযোগী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরই ইসরায়েলই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সবচেয়ে বেশি সামরিক সহায়তা পেয়েছে। তাই ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে চলা এই গণহত্যা ঠেকাতে জোরালো ভূমিকা রাখতে পারত যুক্তরাষ্ট্র।

কিন্তু সেটি না করে বাইডেন, ব্লিঙ্কেন ও অস্টিন ঘৃণিত এই অপরাধে সমর্থন দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছে সিসিআর। সংগঠনটি জানায়, ইসরায়েলকে তারা নিঃশর্ত সামরিক ও কূটনৈতিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই বোমা হামলার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুললে কূটনৈতিকভাবে তা সামাল দিচ্ছে।

সিসিআর এর আইনজীবী আস্থা শর্মা আল-জাজিরাকে বলেন, আন্তর্জাতিক ও জাতীয় আইন অনুযায়ী তাদের দায়িত্ব ছিলেন এই গণহত্যা ঠেকানো, এই গণহত্যায় সমর্থন ঠেকানো। কিন্তু এই সব দায়িত্বপালনে তারা ব্যর্থ হয়েছেন। তারা এখনো ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে চলেছেন। এখনো তারা ইসরায়েল অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে চলেছেন।

মার্কিন নাগরিক লাইলা আল হাদ্দাদ বলেন, হামলার পর থেকে গাঁজায় পাঁচজন আত্মীয়কে হারিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, আমি ট্যাক্স দিয়েছি। আর সেই টাকায় ইসরায়েলে আমার চাচী ও ভাই-বোনদের হত্যা করেছে। আমি মনে করি মার্কিন নাগরিকরদের এখন দায়িত্ব বাইডেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা।’

মামলায় ইসরায়েলকে বার্ষিক ৩৮০ কোটি ডলারেরর সহায়তা বন্ধ করারও আহ্বান জানানো হয়েছে।

এই মামলা নিয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি হোয়াইট হাউস।