ঢাকা , সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অসহ্য গরমে ভালো থাকার উপায়

গ্রীষ্মের প্রচন্ড রোদে বেহাল অবস্থা। জলবায়ুর বিপর্যয় ও প্রকৃতির বিমুখতায় সকলের অবস্থা কাহিল। এ সময় বাইরের তাপমাত্রার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের অভ্যন্তরের তাপমাত্রাও বেড়ে যায়। ফলে বেসাল মেটাবলিক রেট (BMR) বেড়ে গিয়ে নানাবিধ শারীরিক সমস্যার সম্মুক্ষিণ হবার সম্ভাবনা থাকে। হরমোন এবং এনজাইমগুলির স্বাভাবিক কাজ ব্যহত হয়।

এই গরমে হঠাৎ অসুস্থতার কবল থেকে বাঁচতে জেনে নিন কিছু কৌশল-

 

১। সরাসরি রোদ লাগলে চোখ এবং ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, তাই সকাল ১১ টার পর এবং বিকেল ৪ টের আগে নিতান্ত প্রয়োজন না হলে বাইরে না যাওয়াই ভাল।

২। বাইরে বের হওয়ার সময় ছাতা বা সানগ্লাস ব্যবহার করতে হবে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রন গাড়ি থেকে ছায়াতে নামলে ভালো হয়।

b222992892b1fc20982704c2008f3943-4

৩। গরমে সব থেকে বেশি অসুস্থ হবার সম্ভাবনা থাকে এক্সট্রিম এজ গ্রুপের অর্থাৎ শিশু ও বয়স্ক মানুষদের। এই বয়সী মানুষদের সকাল ১১ টা থেকে বিকেল ৪টে বাড়ির বাইরে না যাওয়াই ভালো। ব্যাঙ্কে কাজ থাকলে সকালে বা বিকেলে শেষ করুণ।

৪। এ বারের গরমে আপেক্ষিক আর্দ্রতা কম থাকায় হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গেছে। তাই সাবধান থাকতে হবে। রোদ এড়িয়ে চলার পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি পান, ইলেক্ট্রোলাইট ব্যালান্স বজায় রাখতে ফলের রস’সহ জলীয় খাবারের পরিমাণ বাড়াতে হবে।

৫। শরীরে অস্বস্তি হলে বা মাথা ঝিমঝিম করলে ঠান্ডা জায়গায় গিয়ে লবন-চিনির পানি পান এবং প্রয়োজনে ঠান্ডা পানিতে গোসল সেরে নিতে হবে।

৬। রাস্তাতে অসুস্থ বোধ করলে অবিলম্বে ঠান্ডা স্থান বা ছায়াতে গিয়ে পানি পান করতে হবে।

৭। হাল্কা রঙের সুতির পোশাক পরা উচিত। পুরো শরীর ঢাকা পোশাক পরলে ত্বক বাঁচানো যায়।

৮। শুকনো গরম বলে অনেকে ভাবছেন ঘাম হয় না। কিন্তু ঘাম শরীরেই শুকিয়ে যায় বলে অস্বস্তি কম হয়। শরীরের অভ্যন্তরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে ঘাম হয়। অন্য সময় প্রতি কেজি দেহের ওজন পিছু ৫ থেকে ১০ মিলি ঘাম বের হয়। কিন্তু প্রখর দাবদাহের সময় এই পরমাণ বেড়ে দাঁড়ায় কেজি প্রতি ২০ থেকে ৩০ মিলিতে।

তাই প্রচুর পানি ও মিনারেল শরীর থেকে বেরিয়ে যায় বলে মানুষ দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়েন। ফলে কিডনি সহ শরীরের অভ্যন্তরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের কাজ কমতে শুরু করে। তাই এই সময় প্রচুর পানিসহ নানা রকম দেশীয় ফল, টাটকা ফলের রস, ডাবের পানি, লেবুর সরবত পান করতে হয়।

প্রচণ্ড-গরমের-দিনে-প্রয়োজনীয়-খাবার-সমুহ-300x194

৯। যাদের হাই ব্লাড প্রেশার আছে তাদের কম লবন খেতে বলা হয়, ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে লবন বেরিয়ে গিয়ে শরীর খারাপ লাগতে পারে। এই সময়টায় সঠিক মাত্রায় স্যালাইন বা ডাবের পানি পান করতে হবে।

১০। ঘামের সঙ্গে সোডিয়াম পটাশিয়াম বেরিয়ে গেলে মাথা ঝিমঝিম করা ছাড়াও মেজাজ খারাপ হতে পারে। যারা গাড়ি চালান এই সময়টাতে তাদের অ্যাকসিডেন্ট করার চান্স বাড়ে। তাই প্রত্যেক গাড়ির চালকের মাথা ঠান্ডা রেখে গাড়ি চালানো উচিত।

১১। গরমে জ্বর ও পেটের সংক্রমণের সম্ভবাবনা থাকে। জ্বর হলেও অবশ্যই ঠান্ডা পানিতে গোসল করতে হবে। জ্বর-এ ডিহাইড্রেশনের চান্স বাড়ে। তাই লিক্যুইড ডায়েটের পরিমাণ বাড়াতে হবে। পেটের সমস্যা এড়াতে বাইরে খাওয়া এবং ভাজা ও মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন।

tabdah

১২। ঘাম হয়ে বা অন্য কারণে ডিহাইড্রেশন হলে পা সহ শরীরের বিভিন্ন পেশীতে ক্র্যাম্প হয়। অল্প অল্প করে বারে বারে সরবত খেলে সমস্যা থেকে রেহাই পাবেন।

১৩। বেশি শারীরিক পরিশ্রম করলে অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। ওজন তুললেও সমস্যা হতে পারে। রোদে যতটা সম্ভব কায়িক শ্রম না করাই ভাল।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

অসহ্য গরমে ভালো থাকার উপায়

আপডেট টাইম : ০৫:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ এপ্রিল ২০১৬

গ্রীষ্মের প্রচন্ড রোদে বেহাল অবস্থা। জলবায়ুর বিপর্যয় ও প্রকৃতির বিমুখতায় সকলের অবস্থা কাহিল। এ সময় বাইরের তাপমাত্রার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের অভ্যন্তরের তাপমাত্রাও বেড়ে যায়। ফলে বেসাল মেটাবলিক রেট (BMR) বেড়ে গিয়ে নানাবিধ শারীরিক সমস্যার সম্মুক্ষিণ হবার সম্ভাবনা থাকে। হরমোন এবং এনজাইমগুলির স্বাভাবিক কাজ ব্যহত হয়।

এই গরমে হঠাৎ অসুস্থতার কবল থেকে বাঁচতে জেনে নিন কিছু কৌশল-

 

১। সরাসরি রোদ লাগলে চোখ এবং ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, তাই সকাল ১১ টার পর এবং বিকেল ৪ টের আগে নিতান্ত প্রয়োজন না হলে বাইরে না যাওয়াই ভাল।

২। বাইরে বের হওয়ার সময় ছাতা বা সানগ্লাস ব্যবহার করতে হবে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রন গাড়ি থেকে ছায়াতে নামলে ভালো হয়।

b222992892b1fc20982704c2008f3943-4

৩। গরমে সব থেকে বেশি অসুস্থ হবার সম্ভাবনা থাকে এক্সট্রিম এজ গ্রুপের অর্থাৎ শিশু ও বয়স্ক মানুষদের। এই বয়সী মানুষদের সকাল ১১ টা থেকে বিকেল ৪টে বাড়ির বাইরে না যাওয়াই ভালো। ব্যাঙ্কে কাজ থাকলে সকালে বা বিকেলে শেষ করুণ।

৪। এ বারের গরমে আপেক্ষিক আর্দ্রতা কম থাকায় হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গেছে। তাই সাবধান থাকতে হবে। রোদ এড়িয়ে চলার পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি পান, ইলেক্ট্রোলাইট ব্যালান্স বজায় রাখতে ফলের রস’সহ জলীয় খাবারের পরিমাণ বাড়াতে হবে।

৫। শরীরে অস্বস্তি হলে বা মাথা ঝিমঝিম করলে ঠান্ডা জায়গায় গিয়ে লবন-চিনির পানি পান এবং প্রয়োজনে ঠান্ডা পানিতে গোসল সেরে নিতে হবে।

৬। রাস্তাতে অসুস্থ বোধ করলে অবিলম্বে ঠান্ডা স্থান বা ছায়াতে গিয়ে পানি পান করতে হবে।

৭। হাল্কা রঙের সুতির পোশাক পরা উচিত। পুরো শরীর ঢাকা পোশাক পরলে ত্বক বাঁচানো যায়।

৮। শুকনো গরম বলে অনেকে ভাবছেন ঘাম হয় না। কিন্তু ঘাম শরীরেই শুকিয়ে যায় বলে অস্বস্তি কম হয়। শরীরের অভ্যন্তরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে ঘাম হয়। অন্য সময় প্রতি কেজি দেহের ওজন পিছু ৫ থেকে ১০ মিলি ঘাম বের হয়। কিন্তু প্রখর দাবদাহের সময় এই পরমাণ বেড়ে দাঁড়ায় কেজি প্রতি ২০ থেকে ৩০ মিলিতে।

তাই প্রচুর পানি ও মিনারেল শরীর থেকে বেরিয়ে যায় বলে মানুষ দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়েন। ফলে কিডনি সহ শরীরের অভ্যন্তরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের কাজ কমতে শুরু করে। তাই এই সময় প্রচুর পানিসহ নানা রকম দেশীয় ফল, টাটকা ফলের রস, ডাবের পানি, লেবুর সরবত পান করতে হয়।

প্রচণ্ড-গরমের-দিনে-প্রয়োজনীয়-খাবার-সমুহ-300x194

৯। যাদের হাই ব্লাড প্রেশার আছে তাদের কম লবন খেতে বলা হয়, ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে লবন বেরিয়ে গিয়ে শরীর খারাপ লাগতে পারে। এই সময়টায় সঠিক মাত্রায় স্যালাইন বা ডাবের পানি পান করতে হবে।

১০। ঘামের সঙ্গে সোডিয়াম পটাশিয়াম বেরিয়ে গেলে মাথা ঝিমঝিম করা ছাড়াও মেজাজ খারাপ হতে পারে। যারা গাড়ি চালান এই সময়টাতে তাদের অ্যাকসিডেন্ট করার চান্স বাড়ে। তাই প্রত্যেক গাড়ির চালকের মাথা ঠান্ডা রেখে গাড়ি চালানো উচিত।

১১। গরমে জ্বর ও পেটের সংক্রমণের সম্ভবাবনা থাকে। জ্বর হলেও অবশ্যই ঠান্ডা পানিতে গোসল করতে হবে। জ্বর-এ ডিহাইড্রেশনের চান্স বাড়ে। তাই লিক্যুইড ডায়েটের পরিমাণ বাড়াতে হবে। পেটের সমস্যা এড়াতে বাইরে খাওয়া এবং ভাজা ও মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন।

tabdah

১২। ঘাম হয়ে বা অন্য কারণে ডিহাইড্রেশন হলে পা সহ শরীরের বিভিন্ন পেশীতে ক্র্যাম্প হয়। অল্প অল্প করে বারে বারে সরবত খেলে সমস্যা থেকে রেহাই পাবেন।

১৩। বেশি শারীরিক পরিশ্রম করলে অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। ওজন তুললেও সমস্যা হতে পারে। রোদে যতটা সম্ভব কায়িক শ্রম না করাই ভাল।