ঢাকা , বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শ্লীলতাহানি ও শিশু ধর্ষণচেষ্টায় শিক্ষকসহ গ্রেপ্তার ২

মানিকগঞ্জের শিবালয়ে শিবালয় সদর উদ্দিন কলেজের ২য় বর্ষের এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে কলেজ শিক্ষক মো. দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া একই উপজেলার তেওতা ইউনিয়নে ২য় শ্রেণির এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে আব্দুল কুদ্দুস (৫৬) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে শিবালয় থানা পুলিশ।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে তাদেরকে গ্রেপ্তার করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আর, এম, আল মামুন।

অভিযোগে জানা গেছে, মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার শিবালয় সদর উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক মো. দেলোয়ার হোসেন গত ২৮ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টায় তার ব্যক্তিগত কোচিং সেন্টারে প্রাইভেট পড়ানোর সময় ওই কলেজের মানবিক শাখার ২য় বর্ষের শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানি করে। এর আগেও ওই শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন সময় নানাভাবে কুপ্রস্তাব দিতেন ওই শিক্ষক। ঘটনার দিন শিক্ষক দেলোয়ার ওই শিক্ষার্থীকে সাজেশন দেওয়ার কথা বলে কোচিং সেন্টার থেকে পরে বের হতে বলে। পড়া শেষে সে শিক্ষকের কথামতো কোচিং সেন্টারে বসে থাকে।

অন্যান্য শিক্ষার্থীরা চলে যাওয়ার পর ওই শিক্ষক তাকে আবার কুপ্রস্তাব দেয়। এতে ওই শিক্ষার্থী রাজি না হলে শিক্ষক দেলোয়ার শ্লীলতাহানির উদ্দেশ্যে তার হাত ধরে টানাটানি করতে থাকে এবং জোরপূর্বক তার মুখের হিজাব খুলে ফেলে। এরপর কৌশলে ওই শিক্ষার্থী সেখান থেকে বেরিয়ে আসে। এরপর ওই শিক্ষক এ ঘটনা কাউকে যেন না বলা হয়, এর জন্য তাকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি প্রদান করতে থাকে। পরে ঘটনার বিবরণ উল্লেখ করে শিবালয় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

উল্লেখ্য, এর আগেও ওই কলেজের শিক্ষক দেলোয়ারের বিরুদ্ধে তিনজন শিক্ষার্থী শ্লীলতাহানির অভিযোগ করে তৎকালীন জেলা প্রশাসকের বরাবরে অভিযোগ করেছিলেন।

এদিকে একই দিন শিবালয় উপজেলার তেওতা ইউনিয়নের ২য় শ্রেণিতে পড়ুয়া ৮ বছরের শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে একই এলাকার বাবুর পয়লা গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস (৫৬) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে শিবালয় থানা পুলিশ।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে তাকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওসি এ, আর, এম, আল মামুন।

অভিযোগে জানা গেছে, শিবালয় উপজেলার তেওতা ইউনিয়েনের বাবুর পয়লা গ্রামের মৃত-লাল চাঁন মৃধার পুত্র আব্দুল কুদ্দুস (৫৬) ২য় শ্রেণি পড়ুয়া শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করে।

গত ২৬ অক্টোবর সকালে ভুক্তভোগী ওই শিশু তার এক বান্ধবীকে সঙ্গে করে প্রতিবেশী কুদ্দুসের দোকানে যায়। দোকান বন্ধ থাকায় ওই শিশু বাড়ি ফেরার পথে কুদ্দুস তাদেরকে ডাক দেয়। এ সময় ওই শিশুর বান্ধবী দৌড়ে চলে গেলে ওই ভুক্তভোগী শিশুর হাত ধরে টেনে তার বসতঘরের ভিতরে নিয়ে যায় এবং ওই শিশুর শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে যৌন নিপীড়ন করে কুদ্দুস। এক পর্যায়ে শিশুটি চিৎকার করলে কুদ্দুস তাকে ছেড়ে দিলে ওই স্থান থেকে সে কান্না করতে করতে বাড়িতে চলে আসে। পরবর্তী সময়ে বাড়িতে গিয়ে তার মায়ের কাছে ঘটনার বিস্তারিত জানায়। এ ব্যাপারে শিবালয় থানায় একটি ধর্ষণচেষ্টার মামলা হয়েছে।

শিবারয় থানার ওসি এ, আর, এম আল মামুন ঘটনা দুটির সত্যতা স্বীকার করে জানান, বাবুর পয়লা এলাকায় ধর্ষণচেষ্টা এবং শিবালয় সদর উদ্দিন কলেজ শিক্ষক কর্তৃক শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে শিবালয় থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তার করে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

শ্লীলতাহানি ও শিশু ধর্ষণচেষ্টায় শিক্ষকসহ গ্রেপ্তার ২

আপডেট টাইম : ৮ ঘন্টা আগে

মানিকগঞ্জের শিবালয়ে শিবালয় সদর উদ্দিন কলেজের ২য় বর্ষের এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে কলেজ শিক্ষক মো. দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া একই উপজেলার তেওতা ইউনিয়নে ২য় শ্রেণির এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে আব্দুল কুদ্দুস (৫৬) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে শিবালয় থানা পুলিশ।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে তাদেরকে গ্রেপ্তার করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আর, এম, আল মামুন।

অভিযোগে জানা গেছে, মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার শিবালয় সদর উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক মো. দেলোয়ার হোসেন গত ২৮ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টায় তার ব্যক্তিগত কোচিং সেন্টারে প্রাইভেট পড়ানোর সময় ওই কলেজের মানবিক শাখার ২য় বর্ষের শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানি করে। এর আগেও ওই শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন সময় নানাভাবে কুপ্রস্তাব দিতেন ওই শিক্ষক। ঘটনার দিন শিক্ষক দেলোয়ার ওই শিক্ষার্থীকে সাজেশন দেওয়ার কথা বলে কোচিং সেন্টার থেকে পরে বের হতে বলে। পড়া শেষে সে শিক্ষকের কথামতো কোচিং সেন্টারে বসে থাকে।

অন্যান্য শিক্ষার্থীরা চলে যাওয়ার পর ওই শিক্ষক তাকে আবার কুপ্রস্তাব দেয়। এতে ওই শিক্ষার্থী রাজি না হলে শিক্ষক দেলোয়ার শ্লীলতাহানির উদ্দেশ্যে তার হাত ধরে টানাটানি করতে থাকে এবং জোরপূর্বক তার মুখের হিজাব খুলে ফেলে। এরপর কৌশলে ওই শিক্ষার্থী সেখান থেকে বেরিয়ে আসে। এরপর ওই শিক্ষক এ ঘটনা কাউকে যেন না বলা হয়, এর জন্য তাকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি প্রদান করতে থাকে। পরে ঘটনার বিবরণ উল্লেখ করে শিবালয় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

উল্লেখ্য, এর আগেও ওই কলেজের শিক্ষক দেলোয়ারের বিরুদ্ধে তিনজন শিক্ষার্থী শ্লীলতাহানির অভিযোগ করে তৎকালীন জেলা প্রশাসকের বরাবরে অভিযোগ করেছিলেন।

এদিকে একই দিন শিবালয় উপজেলার তেওতা ইউনিয়নের ২য় শ্রেণিতে পড়ুয়া ৮ বছরের শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে একই এলাকার বাবুর পয়লা গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস (৫৬) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে শিবালয় থানা পুলিশ।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে তাকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওসি এ, আর, এম, আল মামুন।

অভিযোগে জানা গেছে, শিবালয় উপজেলার তেওতা ইউনিয়েনের বাবুর পয়লা গ্রামের মৃত-লাল চাঁন মৃধার পুত্র আব্দুল কুদ্দুস (৫৬) ২য় শ্রেণি পড়ুয়া শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করে।

গত ২৬ অক্টোবর সকালে ভুক্তভোগী ওই শিশু তার এক বান্ধবীকে সঙ্গে করে প্রতিবেশী কুদ্দুসের দোকানে যায়। দোকান বন্ধ থাকায় ওই শিশু বাড়ি ফেরার পথে কুদ্দুস তাদেরকে ডাক দেয়। এ সময় ওই শিশুর বান্ধবী দৌড়ে চলে গেলে ওই ভুক্তভোগী শিশুর হাত ধরে টেনে তার বসতঘরের ভিতরে নিয়ে যায় এবং ওই শিশুর শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে যৌন নিপীড়ন করে কুদ্দুস। এক পর্যায়ে শিশুটি চিৎকার করলে কুদ্দুস তাকে ছেড়ে দিলে ওই স্থান থেকে সে কান্না করতে করতে বাড়িতে চলে আসে। পরবর্তী সময়ে বাড়িতে গিয়ে তার মায়ের কাছে ঘটনার বিস্তারিত জানায়। এ ব্যাপারে শিবালয় থানায় একটি ধর্ষণচেষ্টার মামলা হয়েছে।

শিবারয় থানার ওসি এ, আর, এম আল মামুন ঘটনা দুটির সত্যতা স্বীকার করে জানান, বাবুর পয়লা এলাকায় ধর্ষণচেষ্টা এবং শিবালয় সদর উদ্দিন কলেজ শিক্ষক কর্তৃক শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে শিবালয় থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তার করে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে।