বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ পাহাড়ে আনারসের বাম্পার ফলন হয়েছে। টসটসে, রসালো ও মিষ্টি আনারসে ইতিমধ্যে বাজার সয়লাব হয়ে গেছে। স্থানীয় বাজার ছাড়িয়ে বাজারজাত হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। এখন পাহাড়ের সব স্থান পাকা আনারসের মৌ মৌ গন্ধে ভরপুর। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শুধু রাঙামাটিতে নয়, আনারসের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র ছাড়িয়ে অপর দু’পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে। কিন্তু ফলন বেশি হলেও লাভের মুখ দেখছেনা চাষীরা। সংরক্ষণের অভাবে পঁচে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার কষ্টের ফল।
স্থানীয় একাধিক বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি হাজার আনারস পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে মাত্র দেড় থেকে তিন হাজার টাকায়। স্থানীয়ভাবে পাহাড়ি জেলাগুলোতে কোল্ডষ্টোরেজ না থাকার কারণে এবং দুর্গম যোগাযোগ ব্যবস্থায় সুষ্ঠু বাজারজাত করণের অভাবে পাহাড়ে এবছরও দ্রুত পঁচনশীল কৃষিজপণ্য আনারস স্থানীয় বাজারে পানির দরে বিক্রি হচ্ছে। চাষীদের পাশাপাশি লোকসান গুণতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদেরও।
রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, এ মৌসুমে প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর পাহাড়ি ঢালু জমিতে আনারসের আবাদ হয়েছে। যার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৫০ হাজার মেট্টিক টন। এসব আনারসের দাম এখন আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ১০ থেকে ২৫ টাকায় ।
স্থানীয় আনারস চাষী কৃষ্ণ কুমার চাকমা জানান, চলতি বছর আনারসের উচ্চফলন হয়েছে রাঙামাটিতে। তাই মৌসুমের আগেই বাজারে এসেছে আনারস। কিন্তু তাঁরপরও পাহাড়ের প্রান্তিক চাষীদের ভাগ্য পরিবর্তনের হচ্ছেনা। কারণ একদিকে কাপ্তাই হ্রদের পানি হ্রস। দুর্গম অঞ্চলগুলোতে যোগাযোগ ব্যবস্থায় সমস্যা।
অন্যদিকে সংরক্ষণের অভাবে কষ্টের ফল নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় আর এক আনারস চাষী আজগর আলীর। তিনি বলেন, হিমাগার নাথাকায় পাহাড়ে উৎপাদিত আনারস বিক্রি করতে হচ্ছে পানির দরে। ন্যায্য দর হতে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। তাই পার্বত্যাঞ্চলে মৌসূমী ফল সংরক্ষণ ও কৃষকদের স্বার্থে হিমাগার স্থাপনের দাবী জানান তিনি।
রাঙামাটি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক পবন কুমার চাকমা জানান, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় পাহাড়ি জেলাগুলোয় ব্যাপক আনারসের চাষাবাদ হচ্ছে। ফলনও হচ্ছে লক্ষ্যমাত্রার অধিক। তবে আনারসের প্রচুর ফলন পেয়েও দিশেহারা স্থানীয় চাষীরা। কারণ স্থানীয়ভাবে সংরক্ষণ, বাজারজাত করণ ও পরিবহনের সুষ্ঠু ব্যবস্থা না থাকায় ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ফলে পার্বত্য এলাকায় উচ্চ ফলনশীল আনারস চাষাবাদের ব্যাপক সম্ভাবনা সত্ত্বেও প্রতি বছর ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে চাষীরা।