বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন হয়রানি ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যার মূলহোতা সেই অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার কোটি টাকার বাড়িতে তালা দিয়ে লাপাত্তা হয়ে গেছে তার পরিবার। বাড়িটির নাম ‘ফেরদৌস মঞ্জিল’। ফেনী পৌর এলাকার ১২ নং ওয়ার্ডের চৌধুরী বাড়ি সড়কে এটির অবস্থান। শহরের পাঠানবাড়ি রোড ধরে চৌধুরী বাড়ি হয়ে সড়কটি চলে গেছে মহিপাল পর্যন্ত। এখানকার মকছুদুর রহমান সড়কের একটি বাইলেনের একেবারে শেষপ্রান্তে তার বাসা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আজ থেকে ৭ থেকে ৮ বছর আগে ২০ লাখ টাকায় সাড়ে চার শতক জমি ক্রয় করেন এ সিরাজ।
প্রথমে টিনশেড বাসা ছিল। তিন বছর আগে দোতলা পাকা দালান করেন প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যায়ে। ৬ তলা ফাউন্ডেশনের ওপর দোতলা তার বাড়িটি। ওই ভবনের দোতলার রাস্তা লাগোয়া বড় ফ্ল্যাটে পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন সে। কয়েকদিন আগে ঘরে তালা দিয়ে গা ঢাকা দেন পরিবারের সদস্যরা। তবে প্রতিবেশীদের ধারণা তারা এখন কোন আত্মীয়ের বাড়িতে থাকতে পারেন। সিরাজউদ্দৌলার ফ্ল্যাটের সামনে একই ভবনে মুখোমুখি ফ্ল্যাটে বসবাস করেন ফেনী সদরের ফাজিলপুরের মো. ইব্রাহিম মিয়া। তিনি বলেন,তারা কোথায় গেছেন-তা বলতে পারেনা। আর আমরা আসলে সিরাজের বিষয়ে এতোকিছু জানতামনা। বাইরে থেকে তাকে সাধারণ বলেই মনে হত। এখন টিভির খবরে আর পত্রিকায় দেখে ওনার সম্পর্কে এসব কিছু জানতে পারছি। স্ত্রী আর মেয়ে নিয়ে ওই ভবনের দোতলার একটি ফ্ল্যাটে থাকেন বৃদ্ধ ইব্রাহিম।
নীচতলায় একটি তালা দেয়া ফ্ল্যাট রয়েছে। বাসিন্দারা জানান, এই ফ্ল্যাটটিও সিরাজের। এখানে ভাড়াটে ছিল। কিন্তু কয়েক মাস আগে ভাড়াটে চলে গেলে এটি খালি হয়ে যায়। এখনও ভাড়া হয়নি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আশপাশের কয়েকজন বাড়ির মালিক ও বাসিন্দারা বলেন, মাঝে মাঝে তাকে দেখতাম। সকালে বেরিয়ে রাতে ফিরতেন। বিভিন্ন সময় তার ব্যাপারে অনেক অভিযোগ শুনেছি। তার পরিবারে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে বলে তারা জানান। তারা আরও বলেন, এখন তার এসব অপকর্মের কথা জেনে আমরা প্রতিবেশী হিসেবে লজ্জিত ও বিব্রত। তারা জানান, ফেনী শহরের পাঠানবাড়ি রোড ও মকছুদুর রহমান সড়কে জামায়াত কেন্দ্রিক একাধিক প্রতিষ্ঠানের অংশীদার ছিলেন এই সিরাজ। নানাভাবে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি আর্থিকভাবে লাভবানও হন। এসব খাত থেকে পাওয়া অর্থে প্রায় ৭০ লাখ টাকা ব্যায়ে দোতলা বাড়ি তৈরী করেন তিনি।যার বর্তমান আনমানিক মূল্য এখন প্রায় এক কোটি।